অনেকে প্রায়ই প্রয়োজনীয় কিংবা অতি সহজ বিষয় ভুলে যান। চট করে কিংবা সহজে মনে করতে পারেন না। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন মানুষ ডিমেনশিয়ায় ভুগছে।
ডিমেনশিয়া মূলত মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কাজে বিঘ্ন ঘটায়। এটি দৈনন্দিন জীবনের কাজকর্মের ব্যাঘাত ঘটায়। তবে ভুলে যাওয়া বিষয়টি তো প্রায় সবার বেলাই ঘটে থাকে, তাহলে কি সবাই ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত? উহু, তা নয়। ডিমেনশিয়াকে চেনার বেশ কয়েকটি লক্ষণ রয়েছে। এগুলোই বলে দেবে আপনি ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত কি না।
# অতীতের কথা খুব ভালোভাবে মনে আছে এবং গড় গড় করে বলতেও পারছেন কিন্তু একটু আগে কী করেছেন বা কী বলেছেন তা মনে করতে পারেন না। এছাড়া ছোট ও সহজ বিষয়গুলো মনে করতে পারছেন না। একই কথা বারবার জিজ্ঞেস করেন
# আপনার দৈনন্দিন কাজে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হবে। যেমন কোনো কিছু ভালো মতো পরিকল্পনা করার পরও তালগোল পাকিয়ে ফেলা। বাড়ির রাস্তা মাঝে মাঝে ভুলে যাওয়া
# কথা বলার সময় ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হওয়া। মাঝে মধ্যে সঠিক শব্দ খুঁজে না পাওয়া। কথার খেই হারিয়ে ফেলা। এমনকি অল্পতে উত্তেজিত হওয়া
# ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে স্থান ও সময় নিয়ে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। যেমন মাসের কত তারিখ বা আজ কি বার, এটা সহজে মাথায় আসে না। এমনকি মাঝে মধ্যে নিজের ঘরকেও অপরিচিত মনে হয়
# এ ধরনের ব্যক্তি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। হঠাৎ করে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন এবং এ সিদ্ধান্তটাকেই সঠিক বলে মনে করেন। এ বিষয় নিয়ে অন্যদের সঙ্গেও মনোমালিন্য সৃষ্টি হতে পারে
# ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি সাধারণত সহজ গণনাগুলো করতে ভুল করেন। টাকা-পয়সা বা অন্যান্য হিসাব তারা রাখতে পারেন না এবং ভুলও করেন। লেনদেনের ক্ষেত্রে তাই অসঙ্গতি
দেখা দেয়
# হঠাৎ মুড পরিবর্তন হয়ে যাওয়া ডিমেনশিয়ার একটি লক্ষণ। রেগে যাওয়া, কারণ ছাড়া মন খারাপ করা, হতাশায় ভোগা, আচার-ব্যবহারে দ্রুত পরিবর্তন আসা প্রভৃতি সমস্যাগুলো দেখা দেবে
# সামনে থাকলেও এর সহজে প্রয়োজনীয় বস্তু খুঁজে পান না। যেমন মানিব্যাগ, চশমা, কলম, চাবি প্রভৃতি। এরা নিজেরাই জিনিসপত্র কোথায় রাখেন, তা বলতে পারেন না
# ব্যক্তিত্বে পরিবর্তন আসা। কিছুদিন আগে খুব মিশুক ছিলেন, এখন কারও সঙ্গেই কথা বলেন না
# একঘেয়েমি একটি সাধারণ ও সাময়িক ব্যাপার। কিন্তু ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি কোনো কিছু করার প্রতি আগ্রহ বা উৎসাহবোধ করেন না
উপরের লক্ষণগুলো যদি দেখা দেয় তাহলে দ্রুত নিওরোলজিস্টের পরামর্শ নিতে হবে।
কামরুন নাহার ঊষা