কিশোরগঞ্জের চ্যাপা শুঁটকির কদর দেশ-বিদেশে

চ্যাপা শুঁটকি! নাম শুনলেই জিভে জল এসে যায়। কিশোরগঞ্জ তথা বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের প্রিয় একটি খাবার এটি। চ্যাপা শুঁটকির আঞ্চলিক নাম ‘হিদল’।
কিশোরগঞ্জের রসনা বিলাসে শুঁটকি মাছের জুড়ি নেই। আর তা যদি হয় চ্যাপা শুঁটকি বা হিদল, তাহলে তো কথাই নেই। চ্যাপা শুঁটকির কাঁচামাল সাধারণত দেশি প্রজাতির পুঁটি মাছ। এ মাছের জোগান আসে মূলত মাছের ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত হাওরাঞ্চল থেকে। কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামে জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ সনাতন পদ্ধতিতে মাছ প্রক্রিয়াকরণ করে জীবিকা নির্বাহ করে। এ পদ্ধতি অবলম্বন করে অনেক ব্যবসায়ী কিশোরগঞ্জ শহরের বড়বাজার এলাকায় গড়ে তুলেছেন চ্যাপা শুঁটকি উৎপাদনের বড় একটি কেন্দ্র।
বড়বাজারের ব্যবসায়ীরা হাওরের বিভিন্ন বাজার কিংবা জেলেদের কাছ থেকে সরাসরি শুকানো পুঁটি মাছ সংগ্রহ করে চ্যাপা শুঁটকি উৎপাদন করে থাকেন। এজন্য তারা তাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের পেছনে বড় ঘর বা আশেপাশের বাড়িতে জায়গা ভাড়া নিয়ে চ্যাপা উৎপাদনের কর্মযজ্ঞে যুক্ত হন।
সরেজমিনে বড়বাজার এলাকায় গেলে এসব কর্মযজ্ঞ চোখে পড়ে। এখানে হাওর থেকে প্রতিদিন শত মণ শুকনো পুঁটি মাছ আসে। বড় স্তূপ করে এগুলো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে এনে ঢালা হয়। শ্রমিকরা এসব পেছনের বড় গুদামে নিয়ে রাখেন। সব গুদামে মাথা-উঁচু শুঁটকির স্তূপ। গুদাম থেকে পাশের গুদামে প্রক্রিয়াজাতের জন্য মটকায় এনে ভরা হয় এসব শুঁটকি। মোট কথা, বড়বাজারের যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই এখন চ্যাপা শুঁটকি। বড়বাজারের বাতাসে এখন চ্যাপা শুঁটকির ঘ্রাণ।
জানা গেছে, আশ্বিন থেকে ফাল্গুন এ সময়টি চ্যাপা শুঁটকি ব্যবসায়ীদের স্বর্ণকাল। এসব শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে চ্যাপায় রূপান্তরিত করে বিক্রি করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।
বড়বাজারের চ্যাপা শুঁটকির ব্যবসায়ীরা জানান, তাদের অনেকে যৌথভাবে এ ব্যবসা করেন। অনেকে আবার আলাদা ব্যবসা করেন। এজন্য বেশিরভাগ ব্যবসায়ী প্রায় ৩৫ লাখ থেকে শুরু করে অর্ধকোটি টাকার পুঁজি নিয়ে প্রতি বছর ব্যবসায় আসেন। কিশোরগঞ্জের বড়বাজারের উৎপাদিত চ্যাপা শুঁটকি সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় বলে দাবি করেন এখানকার ব্যবসায়ীরা।
কিশোরগঞ্জের চ্যাপা শুঁটকি ঢাকা, নরসিংদী, বৃহত্তর ময়মনসিংহের অনেক জেলায় প্রতি মণ ৩০ হাজার থেকে ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয় বলে জানান কিশোরগঞ্জ বড়বাজারের ব্যবসায়ী কাজল বর্মণ। তিনি বলেন, আমার বাবা মোহন চন্দ্র বর্মণ, ভাই প্রহ্লাদ চন্দ্র বর্মণ ও এলাকার মহরম আলী এ তিনজন মিলে কিশোরগঞ্জ বড়বাজারে সর্বপ্রথম বৃহৎ পরিসরে চ্যাপা শুঁটকি উৎপাদন ও বিক্রি শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে প্রহ্লাদ চন্দ্র বর্মণ ও মহরম আলী মিয়া পৃথক ব্যবসা শুরু করেন। পরে এ ব্যবসায় আরও আট থেকে ১০ জন এসে যোগ দেন। কাজল জানান, প্রায় ৫০ বছর ধরে আমরা এ ব্যবসায় জড়িত। ৩০ বছর আগে বাবার প্রয়াণের পর অষ্টম শ্রেণিতে পড়াকালীন বাবার ব্যবসার হাল ধরেন তিনি।
কাজল বর্মণ আরও জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশের মানুষের কাছে কিশোরগঞ্জের চ্যাপা শুঁটকি প্রিয় খাবার হিসেবে সমাদৃত।
কাজল বর্মণের সঙ্গে কথা বলার সময় তার প্রতিষ্ঠানে আসেন ফরিদ হোসেন নামে এক যুবক। তার সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, তার ছোট ভাই শরীফ থাকেন দুবাইয়ে। শরীফের জন্য চ্যাপা শুঁটকি নিতে এসেছেন। শরীফের সঙ্গে থাকা ভারতীয়, ফিলিপিনো, পাকিস্তানি, শ্রীলঙ্কান, নেপালি, ভুটানি, বার্মিজসহ বিভিন্ন দেশের বন্ধুর কাছে চ্যাপা শুঁটকির কদর অনেক। তার সহকর্মীরাও চ্যাপা শুঁটকি পছন্দ করেন।
সুজন আওলাদ দুবাই প্রবাসী। দেশের টানে ছুটিতে এসেছেন। বড় বাজারে এসেছেন চ্যাপা শুঁটকি কিনতে। কথা প্রসঙ্গে জানা গেল, সুজনের পছন্দের খাবারের মধ্যে একটি হলো চ্যাপা শুঁটকি। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে তার পরিচয় দুবাইয়ে। তাদেরও পছন্দের খাবার এটি। তার বন্ধু ও সহকর্মীদের আবদার, দেশ থেকে ফেরার সময় বেশি করে চ্যাপা শুঁটকি নিয়ে আসতে হবে।
তানিন হাওলাদার। পেশায় ব্যবসায়ী। তিনি বললেন, আমার বড় বোন থাকেন আমেরিকায়। তার জন্য চ্যাপা শুঁটকি কিনতে এসেছি। চ্যাপার কদর কেমন আপনার বোনের প্রতিবেশীদের কাছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘সাত বছর ধরে চ্যাপা শুঁটকি পাঠাচ্ছি বোনের কাছে। বোনের প্রতিবেশীরা গরম ভাতের সঙ্গে চ্যাপা শুঁটকি খাওয়ার জন্য উদগ্রীব থাকেন।
বড়বাজারেই কথা হয় আমেরিকা প্রবাসী আজিজুল ইসলামের বন্ধু স্বপনের সঙ্গে। তিনি এসেছেন বন্ধুর আবদার পূরণ করতে। বন্ধু বলেছেন চ্যাপা শুঁটকি পাঠাতে। সেজন্যই শুঁটকি কিনতে এসেছেন। সে দেশের বাঙালি কমিউনিটিতে কদর রয়েছে চ্যাপা শুঁটকির।

সাজন আহম্মেদ পাপন, কিশোরগঞ্জ

মাস্কমেলন চাষে বিপুল সম্ভাবনা
ইউরোপ ও আমেরিকা মহাদেশের বিভিন্ন দেশসহ এশিয়ার জাপান, ভারতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয় মাস্কমেলন। বাংলাদেশেও এর চাষাবাদ শুরু হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের গবেষণায় দেখা গেছে, অর্থকরী এ ফলটির চাষাবাদের উপযোগিতা মিলেছে। গবেষকদের আশা, বাংলাদেশে এ ফল চাষের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। ফলটি কৃষকের জন্য লাভজনক ও সম্ভাবনাময় হবে বলে মনে করছেন তারা। সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জের বরেন্দ্র অঞ্চলে অভিযোজনে সফলতা পেয়েছেন এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।
জানা গেছে, এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের ফসল উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ড. মাহবুবুর রহমান প্রায় এক দশক জাপানে ছিলেন। সেখান থেকে ফেরার সময় কিছু মাস্কমেলনের বীজ নিয়ে আসেন। তিন বছর গবেষণা করে বাংলাদেশের মাটিতে ওই ফল উৎপাদনে সফলতা অর্জন করেন তিনি। ফলটি বরেন্দ্র অঞ্চলের রাজাবাড়ী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে অভিযোজন করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।
কিউকারবিটেসি পরিবারের বাঙ্গি-জাতীয় একটি ফল মাস্কমেলন। এটি জালিকার ত্বকযুক্ত গোলাকার ফল। ওজন ৮০০ থেকে ১২০০ গ্রাম হয়ে থাকে। বীজ রোপণের ১১০ থেকে ১৩০ দিনের মধ্যে ফল সংগ্রহ করা যায়। এ ফলের প্রায় ৩০০টি জাত রয়েছে। কাঁচা ফল সবুজ, পাকলে হলুদ হয়। এতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ রয়েছে, যা হজমশক্তি বাড়ায়। ফাইবার গ্লুকোজ থাকায় রক্তের সঙ্গে মেশে না। ফাইবার-সমৃদ্ধ শর্করা থাকায় রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। তাই এ ফল ডায়াবেটিস রোগীর জন্য উপকারী। চিনির পরিমাণ কম থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের খেতে কোনো বাধা নেই। ফলটি রক্তচাপ ও রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। সুস্বাদু এ ফলটি একই সঙ্গে ভিটামিন এ, বি ও সি সমৃদ্ধ। ফলে দৃষ্টিশক্তি ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। প্রতি ১০০ মিলিতে রয়েছে ৫৩ কিলোক্যালোরি, প্রোটিন এক গ্রাম, ডায়েটারি ফাইবার এক গ্রাম, সোডিয়াম ২৩ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ৫৭ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৪ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ১৯ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম
৪১৭ মিলিগ্রাম ও ক্যারোটিনয়েড ৩২ দশমিক ১৯ মাইক্রোগ্রাম।
ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করতে আরও গবেষণা প্রয়োজন। আমি মন্ত্রণালয়ে এর মধ্যেই প্রজেক্ট সাবমিট করেছি। অনুমোদন পেলে গবেষণার পথ সুগম হবে। বাংলাদেশে এ ফলের অপার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঔষধি গুণসম্পন্ন এ ফলের বাণিজ্যিক চাষ শুরুর আশা প্রকাশ করছেন তিনি। এটি চাষ করে ভিটামিনের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি মাত্র এক বিঘা জমিতে চার থেকে পাঁচ মাসে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। তিনি আরও বলেন, অনেকে অভিযোজনের চেষ্টা করেছেন, সফল হননি। আমরা বরেন্দ্র অঞ্চলে অভিযোজনে সফলতা পেয়েছি। এবার দেশীয় জাতের সঙ্গে মিশ্রণ ঘটিয়ে গবেষণা করব। বরেন্দ্র অঞ্চলের পাশাপাশি বাংলাদেশের সবখানে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদের জন্য গবেষণা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবিএম রাশেদুল ইসলাম বলেন, ভবিষ্যতে এ ফল রফতানিও করা যাবে।

হ ফারুক আহমেদ চৌধুরী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

গাঁদায় সফল মোস্তফা ও আকরাম
গাঁদা ফুলের চাষ করে আর্থিকভাবে সফল হয়েছেন সাতক্ষীরার কৃষক গোলাম মোস্তফা ও আকরাম আলী। দেশি জাতের গাঁদা চাষ করে ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন এ দুই কৃষক। বর্ণিল করেছেন জীবন।
বর্তমানে তারা ফুল চাষের ওপর সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়েছেন। এখানের আবহাওয়া ফুল চাষের জন্য উপযোগী। সরেজমিনে জানা যায়, চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো দেড় বিঘা জমিতে দেশি জাতের গাঁদা চাষ করেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আলীপুর গ্রামের কৃষক আকরম আলী ও তালা উপজেলার পাঁচপাড়া গ্রামের কৃষক গোলাম মোস্তফা। প্রথমবারেই সাফল্যের মুখ দেখেছেন তারা।
এ দুই কৃষকের সফলতার পেছনে বেসরকারি সংস্থা উন্নয়ন প্রচেষ্টার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। সংস্থাটির কৃষি কর্মকর্তা নয়ন হোসেন বলেন, সাতক্ষীরার মাটিতে ফুল চাষ হবে কি না, তা নিয়ে প্রথমে আমাদের মধ্যে শঙ্কা ছিল। কিন্তু এখানে ফুল চাষ করে সফলতা এসেছে। কৃষক আকরাম আলী ও গোলাম মোস্তফার উন্নতিতে আরও অনেক কৃষক ফুল চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
আকরাম আলী জানান, দেড় বিঘা জমিতে গাঁদা চাষাবাদে ফুলের কাটিং, সেচ, চাষাবাদ ও ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে সব মিলিয়ে খরচ হয়েছিল ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা। এক মাসের মধ্যেই চারা গাছগুলো থেকে বেরিয়ে আসে ফুলের কুঁড়ি। এরপর ফুলে ফুলে ভরে যায় তার ক্ষেত। এখন পর্যন্ত ফুল বিক্রি করে আয় করেছেন প্রায় দেড় লাখ টাকা। গাঁদা ফুল পাঁচ থেকে ছয় মাস স্থায়ী হয়। আগামী দু-তিন মাস তার বাগানে ফুল থাকবে। আরও দুই থেকে তিন লাখ টাকা আয় হবে বলে আশা করেন তিনি।
ফুল চাষের এ সাফল্যের গল্প জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ২৫ বছর ধরে ফুল চাষের সঙ্গে জড়িত। গাঁদা যে কোনো মাটিতে চাষ করা যায়। তবে এঁটেল ও দোআঁশ মাটি বেশি উপযুক্ত। ফুল চাষের জমি হতে হবে মাঝারি উঁচু, যাতে বন্যার পানি দাঁড়াতে না পারে। কিন্তু জমিতে সেচ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমার গ্রামে ফুল চাষের উপযোগী জমি ছিল না। তাই আমার বেয়াই গোলাম মোস্তফার পরামর্শে নগরঘাটা মিঠাবাড়ী গ্রামের উত্তরপাড়া মাঠে পাঁচ বিঘা জমি লিজ নিই। পরে আমি আলাদাভাবে দেড় বিঘা জমিতে ফুল চাষ করি।
গোলাম মোস্তফা জানান, সাতক্ষীরার ফুল ব্যবসায়ীরা ক্ষেত থেকে ১৭০-২০০ টাকা হাজার দরে ফুল কিনে নিয়ে যান। প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ হাজার ফুল বিক্রি হয়।
সরকারি-বেসরকারি সহায়তা পেলে আগামীতে আরও পাঁচ বিঘা জমিতে গাঁদাসহ রজনীগন্ধা, জারবেরা ও গ্ল্যাডিওলাস চাষে আগ্রহ রয়েছে তাদের।

হ ফারুক রহমান, সাতক্ষীরা

ব্যবসা পরিচালনায় ট্যাক্স ও ভ্যাটের গুরুত্ব
একটি প্রতিষ্ঠান, একজন চাকরিজীবী অথবা একজন ব্যবসায়ীর আয়ের ওপর ভিত্তি করে সরকারকে নির্দিষ্ট হারে কর দিতে হয়। অন্যদিকে একটি পণ্যের মূল্য সংযোজনের ওপর ভিত্তি করে যে কর দেওয়া হয়, তা ভ্যাট হিসেবে পরিগণিত। শিল্প-কারখানা ও ব্যবসা পরিচালনার জন্য ট্যাক্স ও ভ্যাট দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। একটি নির্দিষ্ট নিয়মে ট্যাক্স ও ভ্যাট দিতে হয়। তবে অনেক সময় নিয়ম-কানুন সম্পর্কে ওয়াকিবহাল না থাকায় বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। সে সমস্যা কাটিয়ে ওঠার জন্য এখানে নিয়ম-কানুন সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

টিআইএন সংগ্রহ
আয়কর দেওয়ার জন্য প্রথমে ট্যাক্সপেয়ার’স আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার বা টিআইএন সংগ্রহ করতে হবে। সম্প্রতি কর ব্যবস্থার পুরো প্রক্রিয়াটি অনলাইনভিত্তিক করায় টিআইএন সংগ্রহ করা যাচ্ছে অনায়াসেই। এজন্য কোনো ফি দিতে হয় না। বরং একবার সংগ্রহ করতে পারলে আর নবায়নের প্রয়োজন পড়ে না।

ভ্যাট নিবন্ধন প্রত্যয়নপত্র
পণ্য উৎপাদনকারী বা ব্যবসায়ী এবং আমদানিকারক বা রফতানিকারককে করদাতা হিসেবে নিরূপণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার মূল্য সংযোজন কর বিভাগীয় কার্যালয় হতে একটি নম্বর দেওয়া হয়। এ নম্বরটি যে চিঠির মাধ্যমে দেওয়া হয়Ñসেটিই হচ্ছে নিবন্ধন প্রত্যয়নপত্র।

কেন্দ্রীয় নিবন্ধন
পণ্যের আমদানিকারক ও রফতানিকারক যদি একাধিক স্থান থেকে কার্যক্রম সম্পাদন করেন, একই সঙ্গে এসব কার্যক্রমের পরিচালনা ও হিসাব-নিকাশ যদি কেন্দ্রীয়ভাবে সংরক্ষণ করা হয়, তবে ওই কর্মকাণ্ডের জন্য কেন্দ্রীয়
নিবন্ধন করতে হবে। এক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদর দফতরে কেন্দ্রীয়ভাবে আবেদন করতে হবে।
টার্নওভার কর
পণ্য সরবরাহকারী বা প্রদানকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক টার্নওভার যদি ৮০ লাখ টাকার নিচে হয়, তাহলে ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মূল্য সংযোজন করের পরিবর্তে মূল্য সংযোজন কর আইনের ধারা অনুযায়ী নির্ধারিত হারে টার্নওভার কর দিতে হবে।

রেকর্ডপত্র সংরক্ষণ
মূল্য সংযোজন কর ব্যবস্থায় ব্যবসার যত লেনদেনের হিসাব রয়েছে, সেগুলো জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্ধারিত একটি ফরমে সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।

ট্যাক্স হলিডে
কর অবকাশ (ট্যাক্স হলিডে) সাধারণত পাঁচ বছর বা অধিক সময়ব্যাপী সুবিধা। উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরুর সঙ্গে রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে ট্যাক্স হলিডের সুবিধা ভোগ করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে ছয় মাসের মধ্যে একটি আবেদন করতে হয়। বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর ছয় মাসের মধ্যে ট্যাক্স হলিডের জন্য আবেদন করতে না পারলে পরবর্তীকালে এ আবেদন করা যাবে না বা বাতিল বলে গণ্য হবে।

হ তথ্যসূত্র: এসএমই ফাউন্ডেশন

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০