সুশিক্ষা ডেস্ক:একটু উষ্ণ পরিবেশে গ্রন্থাগারে সময় কাটাতে চান অনেকে। সে ধারণা থেকে একেবারে বিপরীতধর্মী একটি গ্রন্থাগার স্থাপন করা হয়েছে রাশিয়ার সাইবেরিয়ায়। সাইবেরিয়ার বৈকাল লেকে স্থাপন করা হয়েছে বরফে তৈরি একটি গ্রন্থাগার।
এটাই পৃথিবীর প্রথম আইস লাইব্রেরি। নাম ‘লাইব্রেরি অব ওয়ান্ডারস’। এখানে বরফ দিয়ে সাজানো হয়েছে প্রতিটি কক্ষ। সাইবেরিয়ার স্থানীয় শিল্পী ও স্থপতি পাভেল সান্নিকোভ এ গ্রন্থাগারের নকশা করেছেন। গ্রন্থাগারটি দেখভাল করছে দেশটির টুরিজম বোর্ড।
গতানুগতিক গ্রন্থাগারের মতো নয় এটি। মানুষ এখানে তাদের আশা-আকাক্সক্ষা ও স্বপ্নের কথা লিখে থাকেন। এরপর গ্রন্থাগারকর্মীরা সেগুলো কেটে থরে থরে ব্লক তৈরি করেন। এ বোর্ডের কর্মকর্তারা বিশ্বের সব শ্রেণির পাঠককে গ্রন্থাগারটিতে ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সরাসরি না হোক, অন্তত অনলাইনে গ্রন্থাগারটিতে শুভেচ্ছা জানাতে অনুরোধ করেছেন তারা।
এখন পর্যন্ত নানা ভাষার প্রায় এক হাজার উদ্ধৃতি সংগ্রহ করেছে আইস লাইব্রেরি। এর মধ্যে রয়েছে ইংরেজি, জার্মান, চাইনিজ ও ফ্রেঞ্চ ভাষার বাক্যাংশ। চারশ বাক্যাংশ রয়েছে এ গ্রন্থাগারে। থরে থরে সাজানো এ বাক্যাংশগুলোকে একেটি বইয়ের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে। সাইবেরিয়ার ইরকুটস্ক রিজিয়নের কাছাকাছি বৈকালস্ক শহরে এর অবস্থান। শহরটির গোরা সোবোলিনায়া নামে একটি স্কি রিসোর্টে এ গ্রন্থাগার স্থাপন করা হয়েছে।
মূলত বৈকাল লেকে পর্যটক বাড়াতে বরফের তৈরি গ্রন্থাগার স্থাপন করা হয়েছে। প্রসঙ্গত বিশ্বের গভীরতম লেক বৈকাল। এর পানি সুপেয়। একই সঙ্গে ইউনেস্কো ঘোষিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের মর্যাদা পেয়েছে স্থানটি। প্রতিবছর প্রচুর পর্যটক সেখানে বেড়াতে যান।
গত বছর টুরিজম বোর্ডের প্রধান ম্যাক্সিম খোভোসটিশকোভ জানিয়েছিলেন, বিস্ময়কর গ্রন্থাগার তৈরি করতে যাচ্ছেন তারা। উদ্ধৃতি সংগ্রহ করার পর বেশ উচ্ছ্বসিত গ্রন্থাগারকর্মীরা। তারা নানা দেশের চাহিদা ও স্বপ্ন সম্পর্কে একটা ধারণা পেয়েছেন। যেমন চীনারা চান এভারেস্টে উঠতে, ফ্রান্সের নাগরিকরা চান ভালোবাসা আর কানাডার মানুষের স্বপ্ন লটারি পাওয়া। তবে সব দেশের নাগরিকের স্বপ্নের মধ্যে একটা সাধারণ মিল রয়েছেÑ সবাই পরিবারের সুস্থতা কামনা করেন। সন্তান ধারণ করতে চান। তারা সবাই যুদ্ধমুক্ত বিশ্ব দেখতে চান।
অবশ্য আইস লাইব্রেরির কোনো সংগ্রহই স্থায়ী নয়। এপ্রিলে তাপমাত্রা বেড়ে গেলে বরফ গলে যায়, বৈকাল লেকের সঙ্গে মিশে যায় গ্রন্থাগারটি। তাই ফেব্রুয়ারি মাস চলে যাওয়ার আগে উদ্ধৃতি পাঠাতে পারেন আপনিও।
এর আগে সুইডেনে বরফ দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল একটি হোটেল। বেশ চমক সৃষ্টি করেছিল সে উদ্যোগ।
Add Comment