কাস্টমসের আইডি হ্যাক ঠেকাতে ব্যবস্থা নিন

কাস্টমসের আইডি হ্যাক
ঠেকাতে ব্যবস্থা নিন

আধুনিক সভ্য জগতের বিস্ময়কর আবিষ্কার ইন্টারনেট। এর মাধ্যমে বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয়। এটি সারা বিশ্বকে একটি গ্রামে পরিণত করেছে। যোগাযোগ, লেনদেন ও সব সেবাকে ‘সহজ ও তাৎক্ষণিক’ করেছে ইন্টারনেট। সম্প্রতি দেশে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। ভোগান্তি কমবে বিবেচনায় এই পদ্ধতিকে স্বাগত জানিয়েছে সবাই। কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দরে জালিয়াত চক্রের অসাধুতায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তির পাশাপাশি রাষ্ট্র রাজস্ব হারাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে দৈনিক শেয়ার বিজসহ বিভিন্ন দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে বিষয়টি প্রমাণ হয়েছে বলেই প্রতীয়মান। প্রতিবেদনের তথ্য মতে, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের তদন্তে ধরা পড়েছে, তিন বছরে তিন হাজার ৭৭৭ বার সার্ভারে ঢুকেছে জালিয়াত চক্র। পাঠকের মনে আছে, গত ১৬ জানুয়ারি শেয়ার বিজের প্রধান প্রতিবেদন ছিল, ‘চট্টগ্রাম বন্দরে অভিনব পন্থায় কনটেইনার খালাস: অবসরে কর্মকর্তা আইডি সচল’। এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জালিয়াত চক্র ২০১৭ সালের ২১ নভেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অ্যাসাইকুডা সিস্টেমে ১১৬ বার ব্যবহার করেছে ২০১৫ সালে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তা মুহিবুল ইসলামের আইডি। এর মাধ্যমে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান পণ্য খালাস করেছে। আবার বহু আগেই বদলি হওয়া রাজস্ব কর্মকর্তা ফজলুল হকের আইডি তিন হাজার ৬৮১ বার অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে ব্যবহার করে পণ্য খালাস নেওয়া হয়েছে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে চলতি জানুয়ারি পর্যন্ত।
বদলি এবং অবসরে যাওয়া কর্মকর্তার আইডি ব্যবহার করে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া পণ্য খালাস হচ্ছে, এটি বিস্ময়কর। কাস্টমস কর্মকর্তাদের সরকারি আইডি ও পাসওয়ার্ড চুরি করে সংঘবদ্ধ চক্র এনবিআরের সার্ভার অবৈধ ব্যবহার করেছে। এতে শত শত কোটি টাকার পণ্য চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছাড় করে নিয়ে গেছে ওই চক্র।
আমরা মনে করি চট্টগ্রাম কাস্টমস, বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত সংস্থার অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে এমন জালিয়াতি সংঘটিত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ডলার চুরি রহস্যের উদঘাটিত হওয়ার আগেই এনবিআরের সার্ভারে অনুপ্রবেশের ঘটনা প্রমাণ হওয়ায় অনিরাপত্তার বিষয়টি আবারও সামনে এলো।
জালিয়াতি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া না হলে দেশ বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাবে, নিরাপত্তাও পড়বে ঝুঁকিতে। বদলি বা অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের কর্মস্থল ত্যাগের আগেই তাদের আইডি বন্ধ করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি কম্পিউটার বা ডিভাইসের আলাদা নম্বর (আইপি) আছে, এটি যাচাই করে ব্যবহারকারীর অবস্থান শনাক্ত করা যায়। আইডি ও পাসওয়ার্ড চুরির মাধ্যমে পণ্য পাচারে জড়িতদের চিহ্নিতকরণে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে বলেই প্রত্যাশা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০