ব্রেক্সিট নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই গেল

শেয়ার বিজ ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া ব্রেক্সিট নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটেনি। এ ইস্যুতে দেশটির সংসদ সদস্যদের আটটি প্রস্তাবের কোনোটিই নি¤œকক্ষের ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। তবে এতে ভোটাভুটিতে পার্লামেন্টের অচলাবস্থা কাটলেও নির্দিষ্ট সমাধানে না পৌঁছাতে পারাকে তাদের ব্যর্থতা মনে করছেন অনেকে। এতে চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিটের সম্ভাবনা আরও জোরালো হলো। খবর: বিবিসি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে একটি কাস্টমস ইউনিয়নের প্রস্তাব, চুক্তি অনুমোদনের জন্য গণভোটের আহ্বান, চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিটের প্রস্তাব থেকে শুরু করে ইইউ’র সঙ্গে শুল্ক কাঠামো রক্ষা করে চুক্তি চূড়ান্ত করাসহ সব প্রস্তাবই বাতিল হয়ে গেছে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে চুক্তি পাস হলে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন।
ব্রেক্সিট ইস্যুতে অনুষ্ঠিত গণভোটের রায় অনুযায়ী আজ ২৯ মার্চ ইইউ থেকে দেশটির বেরিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তবে পরবর্তীতে সময় কিছুটা বাড়ানোয় এটি সম্পন্ন হবে আগামী ১২ এপ্রিল। ব্রেক্সিটের পর ইইউ’র সঙ্গে সম্পর্ক কেমন হবে, তার একটি খসড়া চুক্তি প্রস্তুত করা হয়েছিল। কিন্তু হাউজ অব কমন্সে তা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এরপর ১২ মার্চ আরও একটি চুক্তি প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে আনলেও সেটিও গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। এখন তৃতীয়বারের মতো চুক্তিতে পৌঁছার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
বুধবারের ভোটের আগে থেরেসা মে পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ায় তার চুক্তির প্রতি সমর্থন দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। তবে ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন এই চুক্তির বিরোধিতা করে যাবে বলে জানিয়ে দিয়েছে। আটটি বিকল্প প্রস্তাবে এমপিরা ভোট দিয়েছেন। পার্লামেন্টে ১৬টি বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করা হলেও স্পিকার আটটি প্রস্তাব বেছে নেন। এর মধ্যে যে প্রস্তাবগুলোতে সংসদ সদস্যদের সম্মতি থাকবে, সেগুলোকে তারা ‘হ্যাঁ’ হিসেবে, আপত্তি থাকলে ‘না’ হিসেবে ভোট দিতে বলা হয়েছিল।
প্রস্তাবগুলোর মধ্যে কাস্টমস ইউনিয়নের পক্ষে ২৬৪ ও বিপক্ষে ২৭২ ভোট; নিশ্চিত গণভোটের পক্ষে ২৬৮, বিপক্ষে ২৯৫ ভোট; ১২ এপ্রিল চুক্তিবিহীন বেক্সিট বাস্তবায়নের পক্ষে ১৬০, বিপক্ষে ৪০০ ভোট; একক বাজার প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবের পক্ষে ১৮৮, বিপক্ষে ২৮৩ ভোট; ইএফটিএ ও ইইএ সদস্যপদের পক্ষে ৬৫, বিপক্ষে ৩৭৭ ভোট; চুক্তিহীনতা এড়াতে অনুচ্ছেদ বাতিলের পক্ষে ১৮৪, বিপক্ষে ২৯৩ ভোট; লেবার পার্টির প্রস্তাবিত ব্রেক্সিট পরিকল্পনার পক্ষে ২৩৭, বিপক্ষে ৩০৭ ভোট এবং মল্টহাউজ প্ল্যান বি’র পক্ষে ১৩৯, বিপক্ষে ৪২২ ভোট পড়ে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সমর্থন পাওয়া প্রস্তাবটি হলো ক্রস পার্টি প্ল্যান। এতে ব্রেক্সিটের পরও ইইউ’র শুল্কমুক্ত বাণিজ্য অব্যাহত থাকার কথা বলা হয়। ব্রেক্সিট সম্পন্ন হওয়ার পর টোরি দলের নেতৃত্বের লড়াই হতে পারে। টরি সদস্যদের মাধ্যমে নতুন নেতা নির্বাচিত হওয়ার আগ পর্যন্ত থেরেসা মে প্রধানমন্ত্রী পদে বহাল থাকবেন। টোরি সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে চুক্তিটির প্রতি সমর্থন দেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছিলেন থেরেসা মে।”
ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ২৯ মার্চের পরিবর্তে ১২ এপ্রিল যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয় ইইউ। তবে থেরেসা মে’র চুক্তি অনুমোদন পেলে ব্রেক্সিট কার্যকরের সময়সীমা ২২ মে পর্যন্ত বাড়ত। তবে কোনো বিকল্প পরিকল্পনা বাস্তবায়িত না হলে ১২ এপ্রিলেই চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট সম্পন্ন করতে হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০