এই গরমে ঠাণ্ডা থাকতে যা খাবেন…

শুরু হয়েছে গ্রীষ্মকাল। গরম আর গরম। এ সময় কী করলে বা কী খেলে শরীর ঠাণ্ডা হবে, তা-ই মনে ঘুরপাক খায়। তবে চিন্তার কিছু নেই। গরমের এ সময়ে খাদ্যতালিকায় কিছু খাবার যোগ করলেই এর সমধান মিলবে।
লিচু: গ্রীষ্মের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে সুস্বাদু ও রসালো লিচুর দেখা মেলে। মিষ্টি ও পুষ্টিকর এ ফলটি। পাশাপাশি শরীরের তাপমাত্রা কমাতে সহায়তা করে লিচু। এতে ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। থিয়ামিন ও নিয়াসিন রয়েছে এ ফলে। ভিটামিন ‘বি’ রয়েছে লিচুতে। তাই গ্রীষ্মকালে এই সুস্বাদু ফল খাওয়া যেতে পারে।
ডাব: গরমে তৃষ্ণা মেটাতে ডাবের পানি খুবই উপকারী। এটি কোনো কৃত্রিম পানীয় নয়। শরীর থেকে যে লবণ গরমের কারণে ঘামের সঙ্গে বের হয়ে যায়, তা পূরণের জন্য খাদ্যতালিকায় ডাবের পানি রাখা প্রয়োজন। এটি শুধু পানীয়ই নয়, এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ লবণ। মানবদেহে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া গরমের কারণে ঘামাচি কিংবা ত্বক পুড়ে গেলে সেসব স্থানে ডাবের পানি লাগালে আরাম পাওয়া যায়।
তরমুজ: গরমকালের অন্যতম একটি পুষ্টিকর ফল তরমুজ। তরমুজের ৯২ শতাংশই পানি, যা দেহের পানির চাহিদা পূরণ করে। এছাড়া এতে রয়েছে ভিটামিন ‘এ’, ‘বি৬’, ‘সি’, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যামিনো অ্যাসিড। ফলের রস কিংবা ফ্রুট সালাদ হিসেবে খাওয়ার টেবিলে রাখতে পারেন তরমুজ।
শসা: শসায় আছে ৯৫ শতাংশ পানি। বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের উপস্থিতির কারণে শসা খেলে আমাদের দেহের অভ্যন্তর ঠাণ্ডা থাকে। এতে ক্যালরির পরিমাণ কম থাকে। আঁশ রয়েছে প্রচুর পরিমাণে। এ কারণে ওজন কমাতেও সহায়ক শসা। তাই প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় শসা রাখতে চেষ্টা করুন। শসার জুসও খেতে পারেন।
আপেল: কথিত আছে প্রতিদিন একটি আপেল খান আর ডাক্তারকে রাখুন দূরে। শরীরকে ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করে এ ফলটি। আপেলে রয়েছে প্যাকটিন, ভিটামিন ‘বি’, ‘সি’ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। সব রঙের আপেলই শরীরের জন্য উপকারী।
কলা: কলা সারা বছর পাওয়া যায়। তবে গ্রীষ্মকালীন ফল হিসেবে বেশ উপযোগী একটি ফল। কাঁচা-পাকা দুটোই খাওয়া যায়। অতিরিক্ত ঘামে শরীর থেকে যে তরল পদার্থ বের হয়ে যায়, তা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে পটাশিয়াম। এ উপাদানটি কলার মধ্যে রয়েছে, তাই গরমের সময় কলা খান নিয়মিত।
টমেটো: টমেটোতে রয়েছে শতকরা ৯৪ দশমিক পাঁচ ভাগ পানি। এছাড়া এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’, লাইকোপেন, ক্যারোটিন, রিবোফ্লোবিন, ক্যালসিয়াম ও লোহা থাকে। গরমের সময় টমেটোর জুস কিংবা সালাদ করে খাওয়া যেতে পারে।
লাউ: গরমে শরীরকে ঠাণ্ডা রাখতে লাউ বেশ উপকারী। সোডিয়াম ও পটাশিয়ামসমৃদ্ধ লাউ শরীরে তরল পদার্থ ধরে রাখতে সহায়তা করে। তরল পদার্থের ভারসাম্য ঠিক রাখতে অতি গুরুত্বপূর্ণ সবজি এটি।
বেল: গরমে স্বস্তি দিতে পারে পাকা বেল। শরীরকে ঠাণ্ডা রাখতে গ্রীষ্মকালে বেলের শরবত অপরিহার্য।
দই: গরম আবহাওয়ায় শরীর শীতল রাখতে বেশ কার্যকর দই। বিশেষ করে সাদা দই দেহ শীতল রাখতে সাহায্য করে। সাদা দই বিভিন্ন আইটেম করে খাওয়া যেতে পারে। যেমন লাচ্ছি, শরবত কিংবা সালাদে মিশিয়ে খাওয়া যায়।
পেঁপে: গরমে পেঁপে খুব উপকারী। খুব কম পরিমাণে ক্যালরি থাকায় এবং কোনো কোলেস্টেরল না থাকায় পেঁপে শরীরকে ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করে। পাকা পেঁপে ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে কেটে বা জুস করে খাওয়া যেতে পারে।
আম: গরমে শরীরকে ঠাণ্ডা রাখতে ঠাণ্ডাজাতীয় খাবার খাওয়া প্রয়োজন। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা অনুযায়ী ঠাণ্ডা পানীয় হিসেবে আমের তৈরি আমপান্না খাওয়া যেতে পারে। আমপান্না কাচা আম দিয়ে তৈরি করা হয়। এটি স্বাস্থ্যসম্মত ঠাণ্ডা পানীয়, যা তাপমাত্রার বিরুদ্ধে কাজ করে। এর মাইক্রো নিউট্রিয়েন্টস শরীরকে শীতল রাখে।
লেবু: গরমে লেবু খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। কারণ সূর্যের তাপ শরীরের ভিটামিন শুষে নেয়। এই ভিটামিন পূরণ করতে লেবুর শরবত খুবই উপকারী। তাছাড়া প্রচণ্ড গরমে এ শরবত শরীরকে সহজেই ঠাণ্ডা করে।
সবুজ শাক: সবুজ শাক শরীরকে ঠাণ্ডা রাখে। শাকে কম ক্যালরির পাশাপাশি ৯২ শতাংশ পানি রয়েছে, যা শরীরকে ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করে। গরমে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখে। সবুজ শাকে ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’ ও ‘কে’ পাওয়া যায়। উষ্ণ মৌসুমে এসব ভিটামিন দারুণ উপকারী।
ইসবগুলের ভুসি: গরমে ইসবগুলের ভুসি মহৌষধের মতো কাজ করে। পাকস্থলী ঠাণ্ডা বা শীতল রাখতে ইসবগুলের ভুসি অপরিহার্য।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০