মোবাইল ফোনে কলড্রপ

ত্রুটি খুঁজতে টেকনিক্যাল অডিটের প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘মোবাইল ফোনে কলড্রপে গ্রাহকদের অসন্তুষ্টিতে সরকার বিব্রত হচ্ছে’ জানিয়ে টেকনিক্যাল অডিট করে মোবাইল অপারেটরদের ত্রুটি খুঁজে বের করার প্রস্তাব দিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। গতকাল বিকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস উপলক্ষে বিটিআরসি আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
বিটিআরসির হিসাবে, ২০১৮ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত দেশে চারটি মোবাইল ফোন অপারেটরের মোট গ্রাহক সংখ্যা ১৫ কোটি ৪১ লাখ ৭৯ হাজার। ওই সময়ে গ্রামীণফোনের কলড্রপের সংখ্যা ১০৩ কোটি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রবির কলড্রপ ৭৬ কোটি, বাংলালিংকের কলড্রপ ৩৬ কোটি ও রাষ্ট্রায়ত্ত অপারেটর টেলিটকের কলড্রপ ছয় কোটি।
তিনি আরও বলেন, ‘কলড্রপ নিয়ে বিটিআরসি বলছে এক কথা, মোবাইল অপারেটররা বলছে আরেক কথা। আমরা এখন ডিজিটাল সার্ভিসের কোয়ালিটির কথা বলছি, তখন এ কলড্রপ নিয়ে সরকারকে নানা বিরূপ মন্তব্য শুনতে হচ্ছে। বিটিআরসি ফাইন্যান্সিয়াল অডিট করে, এবার টেকনিক্যাল অডিট হওয়া প্রয়োজন। থার্ড পার্টির এ অডিটের মাধ্যমে কারণ জানা প্রয়োজন, জানা দরকার ত্রুটি কোথায়।’
‘ব্রিজিং দ্য স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন গ্যাপ’ প্রতিপাদ্যে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ দিবস উদ্যাপন অনুষ্ঠানে ‘স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন অব ফাইভ জি’ শিরোনামে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন হুয়াওয়ে টেকনোলজিসের প্রধান কর্মকর্তা ওয়াং শিউ জেরি। পরে ফাইভ জি নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন নোকিয়ার এশিয়া প্যাসিফিক রিজিয়নের গভর্নমেন্ট রিলেশনস বিভাগের প্রধান গিয়ম মাসকট।
মোবাইল ফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন দুই কর্মকর্তাকে উদ্দেশ্য করে পলক বলেন, ‘ফাইভ জি আমদানি করতে চাই না আমরা। যখন আমরা এ দেশে ফাইভ জি নেটওয়ার্ক রুল আউট করব, তখন চাইব মোবাইল ফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো এখানে আরএনডি সেন্টার স্থাপন করুক। ফাইভ জি অ্যানাবল মোবাইল সেট এখানে উৎপাদন করুন। তারা এ দেশে এসে মুনাফা করবে, আর কোনো আরএনডি সেন্টার স্থাপন করবে না, তা হবে না। অনুষ্ঠানে এসে নিজেদের কার্যক্রম নিয়ে বড় বড় কথা বললে চলবে না।’
এ সময় ‘পদ্মা সেতুর পাশে ৭০ একর জায়গা নিয়ে গড়ে তোলা হবে শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট ফর ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি, যেখানে আরও প্রশিক্ষিত করা হবে আগামী দিনের প্রযুক্তিবিদদের’ বলেও জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘এখন আমাদের সামনে তিনটি চ্যালেঞ্জ। ভয়েস কলের দিন শেষ হয়ে আসছে, সামনে ডেটা কলের দিন। ভয়েস টেকনোলজি আইপিনির্ভর হয়ে যাবে। আমাদের অপারেটররা কীভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করবে? তারপর আসছে ফোরথ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলেশনের কথা। তবে আমাদের দেশের ফোরথ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলেশনের দিক আলাদা। আমরা বলছি, ব্লক চেইন, রোবোটিকস, বিগ ডেটার কথা। এসব প্রযুক্তির মাধ্যমে জীবনযাত্রার মান কতটা উন্নত করতে পারব, তা ভাবতে হবে।’
সভায় ‘বাংলাদেশে মোবাইল ফোন টাওয়ারের স্পেসিফিক অ্যাবসরপশন রেট শূন্য দশমিক ছয়ের ওপর নয়’ জানিয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘মোবাইল ফোন টাওয়ারের রেডিয়েশনের মাধ্যমে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে এমন অভিযোগ যারা করছেন, তারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন।’
অন্যদিকে ইন্টারন্যাশনাল টেলিকম ইউনিয়নের মান নিয়ন্ত্রণ নিয়ম অনুযায়ী টেলিকম সেক্টরের পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে কোনো ‘কম্প্রোমাইজ’ করা হবে না বলে অনুষ্ঠানে জানান বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক। ‘ব্রিজিং দ্য স্ট্যান্ডারাইজেশন গ্যাপ’ শিরোনামে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান মো. সাইফুল ইসলাম। পরে ডাক বিভাগের স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেন মোস্তাফা জব্বার।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০