আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম। ২০১১ সালে আইপিডিসির সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। বড় স্বপ্ন নিয়ে ২০১২ সালে মুখ্য নির্বাহীর দায়িত্ব নেন। আমেরিকান এক্সপ্রেস ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে প্রায় সাত বছর সফলভাবে দায়িত্ব পালন করা উদ্যমী মানুষটির হাত ধরে সময়ের সঙ্গে এগিয়ে চলেছে আইপিডিসি
প্রতিকূলতার মধ্যেও আইপিডিসির এগিয়ে চলার চালিকাশক্তি কী?
মমিনুল ইসলাম: আইপিডিসির মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে গ্রাহকের আস্থা। অক্লান্ত পরিশ্রম ও কর্মদক্ষতার মাধ্যমে আমরা সময়োপযোগী পণ্য ও সেবার মাধ্যমে মানুষের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করছি। সে জন্য প্রতিষ্ঠানের সব স্তরে স্বচ্ছতা-জবাবহিদি নিশ্চিত করাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সব ধরনের সাপোর্ট বা দিকনির্দেশনা পরিচালনা পর্ষদ থেকে দেওয়া হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে এগিয়ে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের প্রস্তুতিও আমরা নিচ্ছি। এর সুফল হিসেবে আইপিডিসির প্রতি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের আস্থা বাড়ছে। আমরাও ব্যাংকনির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারছি। দূরদর্শী পরিকল্পনার কারণে প্রতিকূলতার মধ্যে এগিয়ে যাচ্ছি।
সামনের দিনগুলোয় আইপিডিসির মূল লক্ষ্য কী?
মমিনুল ইসলাম: দেশের শিল্প-বাণিজ্যের উন্নয়নে অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে ধারাবাহিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছি। সামনের দিনগুলোতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে। আমরা এখন তৃণমূল মানুষের বাসস্থানের অধিকার নিশ্চিতে কাজ করছি। গ্রাম-উপজেলা পর্যায়েও বাড়িঘর তৈরির জন্য সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা দিচ্ছি। আমি বিশ্বাস করি, আগামীতে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার লক্ষ্য পূরণেও আইপিডিসি ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশ সরকারের প্রতিশ্রুতির সঙ্গে আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের মিল রয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় আমরা একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হতে চাই। সে লক্ষ্য সামনে রেখেই আমরা কাজ করছি। আমরা কোনো পণ্য-সেবা চালুর পরিকল্পনার সময় ব্যবসায়িক লাভের চেয়ে সামাজিক দায়বদ্ধতার দিকটিকে সমান গুরুত্ব দিচ্ছি।
বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সফল হয়ে ওঠার আরও কী কী করণীয় রয়েছে বলে মনে করেন?
মমিনুল ইসলাম: বাংলাদেশের আর্থিক খাত বেশ সমালোচনার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ব্যাংক খাতের বিতর্কের দায়ও এ খাতের কোম্পানিগুলোর ওপর পড়ছে। আমরা প্রতিনিয়ত প্রশ্নের মুখে পড়ছি। এ পরিস্থিতিতে গতানুগতিক ব্যাংকনির্ভরতা থেকে ব্যবসা করে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। জোড়াতালি দিয়ে কোনো রকমে টিকে থাকা যাবে; কিন্তু আয়-মুনাফার দিক থেকে ভালো অবস্থান তৈরি করা অনেক কঠিন। এ অবস্থায় টিকে থেকে এগিয়ে যেতে হলে অবশ্যই পেশাদারিত্ব, সময়োপযোগী পরিকল্পনা, সঠিক দিকনির্দেশনা ও দূরদর্শী পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। গ্রাহকের স্বার্থকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। সাময়িকভাবে নয়, বরং দীর্ঘ মেয়াদে লাভবান হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে হবে।
আইপিডিসির সমসাময়িক পণ্য ও সেবা নিয়ে গ্রাহকের কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
মমিনুল ইসলাম: আগেই বলেছি, আমরা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য সামনে রেখে নতুন কিছু করার চিন্তা করি। দেশের ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ঢাকা, চট্টগ্রাম ও বিভাগীয় বা জেলা শহরনির্ভর। তৃণমূল পর্যায়ে কেউ যেতে চায় না। সেখানে আমরা গ্রামাঞ্চলের মানুষকে গৃহনির্মাণের জন্য ঋণ দিচ্ছি। এ ঋণ নিয়ে অনেক ভালো সাড়া পাচ্ছি। গ্রাহকও নিয়মিত পাওনা পরিশোধ করছেন। একইভাবে আমরা ওয়ার্ক অর্ডারের বিপরীতেও অর্থায়ন করছি। বড়-ছোট শিল্পায়নের ক্ষেত্রেও আইপিডিসি ভালো করছে। সামনের দিনগুলোয় তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক ছোট-বড় উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে অর্থায়নের পরিকল্পনা করছি।