উন্নয়নের অন্যতম প্রধান শর্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ। এটা ছাড়া সার্বিকভাবে উন্নয়ন আশা করা যায় না। গতকাল শেয়ার বিজে প্রকাশিত ‘থানচি উপজেলায় বিদ্যুৎ যাচ্ছে’ শিরোনামের খবরটি এ অবস্থায় পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকবে। এতে বলা হয়, বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠছে বান্দরবানের থানচি উপজেলা। এটা নিশ্চয়ই ওই এলাকার মানুষের কাছে আনন্দের। কারণ স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর দুর্গম এ এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছাচ্ছে। বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা হওয়ায় ওই এলাকায় ৩০০ সংযোগ গ্রাহক পর্যায়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পাঁচশর বেশি গ্রাহক হওয়ার আবেদন করেছেন। এ সুবিধা আরও আগে পৌঁছে দেওয়া গেলে তা এলাকার উন্নয়নে আগে থেকে অবদান রাখতে পারতো।
দেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশের তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে বান্দরবান একটি। পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় অন্যান্য জেলার তুলনায় এখানে জনবসতি কম। যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভালো। এ দুর্গম এলাকার মানুষকে রীতিমত সংগ্রাম করে বাস করতে হয়। অন্যান্য এলাকার চেয়ে অনেকটা পিছিয়ে এ এলাকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন। এছাড়া ওখানকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি সংকটজনক ছিল কিছুকাল আগেও। সরকারের সঙ্গে শান্তিচুক্তি হওয়ায় সেখানে পরিস্থিতির লক্ষণীয় উন্নতি হয়েছে এখন।
বান্দরবানের সাতটি উপজেলার ছয়টিতে বিদ্যুৎ থাকলেও থানচিতে ছিল না। হয়তো তাদের কেউ কেউ সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করতো। কিন্তু নিয়মিত বিদ্যুৎ সুবিধা পাওয়ার দাবিদার তারাও। এখন বিদ্যুতের আওতায় আসায় থানচিতে কিছু ছোট কল-কারখানাও হতে পারে। এতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে। এসব কর্মকাণ্ড এলাকার সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখবে নিশ্চয়ই। পাশাপাশি জীবনমানের উন্নয়ন হবে। শিক্ষার্থীরা বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হবে। তারা বাড়তি উদ্যমে পড়াশোনা করতে পারবে। পাশাপাশি চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়ন হবে। বিদ্যুতের উৎপাদন আরও বাড়ানোর জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। নতুন নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সংকট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে সরকার। এতে সরবরাহ ব্যবস্থারও উন্নয়ন ঘটানো যাবে।
শুধু থানচি নয়, বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় দেশের সব এলাকাকে নিয়ে আসতে হবে। সারা দেশে পৌঁছে দেওয়া দরকার নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ। এর দাম নিয়ে অবশ্য রয়েছে অভিযোগ। অভিযোগ রয়েছে আরও, যথার্থ যুক্তি ছাড়া বাড়ানো হয় দাম যখন-তখন। এতে সাধারণ ব্যবহারকারীর পক্ষে এর ব্যয় বহন কঠিন হয়ে পড়ে। বিদ্যুতের দাম যাতে সহনীয় পর্যায়ে থাকে, সেদিকেও সংশ্লিষ্টরা গুরুত্ব দেবেন—এমনটাই প্রত্যাশা।
Add Comment