চলছে বর্ষা মৌসুম। শীতকালের মতো এ সময়টায়ও পাখিদের বিচরণ করতে দেখা যায়। ভ্রমণপিয়াসিরা এসব পাখি দেখতে বিভিন্ন বনাঞ্চলে ঘুরে বেড়াতে পারেন। কেননা, এ জায়গাগুলোতেই নানা ধরনের পাখির দেখা মেলে। এমনি একটি পাখি বুনো তিতির। তবে সাদাচিবুক তিতির নামে বেশি পরিচিত। এ পাখির ইংরেজি নাম ‘হোয়াইট চিক্ড পারট্রিজ’।
আবাসস্থল: সাধারণত আর্দ্র ও মিশ্র চিরসবুজ বন এদের আবাসস্থল। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বনাঞ্চলগুলোয় এদের দেখা যায়। সিলেটের টিলা ও পাহাড়ি এলাকায় বেড়াতে গেলে এদের দেখতে পাবেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের চিরসবুজ বনেও এরা থাকে। এছাড়া ভারতের মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মণিপুরের বনাঞ্চলেও এদের দেখতে পাওয়া যায়।
দৈহিক বর্ণনা: দেখতে বটেরার মতো। তবে এরা বটেরার থেকে সামান্য বড় হয়ে থাকে। দৈর্ঘ্য ২৭ সেন্টিমিটার। ওজন ২৫০ গ্রামের মতো। চোখের ওপর কালো পট্টি ও নিচে চওড়া সাদা রেখা রয়েছে। বুক নীলাভ, পিঠ হলদে সবুজাভ ধূসর। কপাল ও চিবুক সাদা। গলায় কালো ডোরা থাকে। ঠোঁট কালো। পা কমলা ও লাল। এদের পা দেহের পেছন দিকে হওয়ায় মনে হয় এ পাখির দেহ কোনো কাঠির ওপর বসানো।
জীবনচক্র: সাদাচিবুক তিতিরকে টিলা ও পাহাড়ি এলাকার ঝোপ আর বাঁশবনে বিচরণ করতে দেখা যায়। এরা সাধারণত নীলাভ বুকের বটেরার পাখির মতো মাটিতে বাসা বেঁধে থাকে। লতা, ঘাস কিংবা ডালপালা দিয়ে বাসা তৈরি করে। তিতির জাতের থেকে বেশ ছোট হয় বলে এর মাংস খাওয়া হয় না। এরা বনজঙ্গলে থাকতেই পছন্দ করে। তবে গাছে তেমন থাকে না। এরা খাদ্য হিসেবে পোকামাকড়, কচি ঘাস, গুল্ম প্রভৃতি খেয়ে থাকে। সাদাচিবুক তিতির পাঁচ থেকে সাতটি ডিম পাড়ে। ডিম ফুটতে সময় লাগে ২৩ থেকে ২৫ দিন। তবে ইদানীং আবাসন ধ্বংস ও বনাঞ্চল উজাড়ের ফলে সাদাচিবুক তিতিরের অস্তিত্ব হারিয়ে যাচ্ছে।
প া ি খ: সাদাচিবুক তিতির
