নিজস্ব প্রতিবেদক: মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন আর্থিক খাতের সবচেয়ে বড় অপরাধ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. ফজলে কবির। তিনি বলেছেন, এ অপরাধের কারণে দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি বাধাগ্রস্ত হয়, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়। দেশের মানুষ তার সম্পদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। তাই অর্থ পাচার বা সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে ব্যাংকগুলোর প্রধান মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ পরিপালন কর্মকর্তা সম্মেলন-২০১৭’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফজলে কবির বলেন, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল একটি দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে ব্যাংক। দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সিংহভাগ সম্পাদিত হয় ব্যাংকের মাধ্যমে, যা আমাদের আর্থসামাজিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। আর্থিক খাতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে ব্যাংকগুলো আমাদের মুদ্রাবাজারের স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। এছাড়াও ব্যাংকিং খাতের মাধ্যমে সাধারণ জনগণের কাছ থেকে মূলধন গৃহীত হয়ে উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ করা হয়, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। এ কারণে একটি অপরাধমুক্ত, স্থিতিশীল ও দক্ষ ব্যাংকিং বাংলাদেশের সমাজব্যবস্থায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গভর্নর বলেন, যথাযথ নীতি ও রেগুলেটরি কাঠামো প্রণয়নের মাধ্যমে আর্থিক খাতের সার্বিক উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনসহ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর টেকসই দারিদ্র্য বিমোচনের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থা একযোগে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার গবেষণা থেকে দেখা যায়, সন্ত্রাসী কার্যক্রম প্রতিরোধে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছে অর্থের জোগান প্রতিহতকরণ অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ কারণে এবারের প্রধান মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ পরিপালন কর্মকর্তা সম্মেলনে ‘সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ’কে মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
সিলেট নগরীর অভিজাত হোটেলের কনফারেন্স রুমে তিন দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ জামালের সভাপতিত্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিএফআইইউ’র মহাব্যবস্থাপক ও অপারেশনাল হেড দেবপ্রসাদ দেবনাথ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ও বিএফআইইউ’র প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসান। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংক, সিলেট অফিসের নির্বাহী পরিচালক মোসলেম উদ্দিন, অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান আনিস এ. খান। তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলনে বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সব তফসিলি ব্যাংকের প্রধান ও উপ-প্রধান মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ পরিপালন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মানি লন্ডারিংয়ে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট হচ্ছে: গভর্নর

Add Comment