নিজস্ব প্রতিবেদক: নকশা জালিয়াতির এক মামলায় গ্রেফতারের একদিন পর জামিন পেলেন অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বনানীর এফ আর টাওয়ারের অন্যতম মালিক তাসভীর উল ইসলাম। তিনি কাসেম ড্রাইসেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। গতকাল ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক কেএম ইমরুল কায়েস আসামি তাসভীরকে জামিন দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন গত ১৮ আগস্ট তাসভীরকে গ্রেফতারের পর গতকাল আদালতে হাজির করে। তাসভীরকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মো. আবু বকর সিদ্দিক।
বিএনপি নেতা তাসভীরের পক্ষে জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী। এ সময় দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল, মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জামিনের বিরোধিতা করেন। আসামির আইনজীবী শুনানিতে বলেন, ভবনটি নির্মাণ করেছিল রূপায়ণ গ্রুপ। এর চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান মুকুল হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন পেয়েছেন। ভবন নির্মাণে যদি ত্রুটি থাকে, তবে তার দায় মুকুলের।
এর বিরোধিতা করে দুদকের আইনজীবী কাজল বলেন, মামলার সবগুলো ধারার অভিযোগই এ আসামির বিরুদ্ধে সঠিক। দুর্নীতির দায় তিনি কোনোভাবেই এড়াতে পারবেন না। জামিন পেলে তিনি মামলার তদন্তে ব্যাঘাত ঘটাবেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামির জামিনের আদেশ দেন। মামলার আরেক আসামি প্রকৌশলী এসএমএইচআই ফারুককে গতকাল গ্রেফতার করেছে দুদক।
নকশা জালিয়াতির মাধ্যমে ভবনটিতে কয়েকটি তলা বাড়ানোর অভিযোগে গত ২৫ জুন তাসভীরসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেন দুদক কর্মকর্তা মো. আবু বকর সিদ্দিক। দুদকের এক মামলায় রাজউকের ভুয়া ছাড়পত্রের মাধ্যমে এফ আর টাওয়ারকে ১৯ তলা থেকে বাড়িয়ে ২৩ তলা করা, ওপরের ফ্লোরগুলো বন্ধক দেওয়া ও বিক্রি করার অভিযোগে ২০ জনকে আসামি করা হয়। তাসভীরের কোম্পানি ওই ভবনের ২১, ২২ ও ২৩ তলার মালিক।
মামলার আসামির তালিকায় তাসভীর ছাড়াও এফ আর টাওয়ারের মালিক এসএমএইচআই ফারুক ও রূপায়ণ গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান মুকুলের নাম রয়েছে।
রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান কেএএম হারুন, সাবেক সদস্য মো. রেজাউল করিম তরফদার, সাবেক পরিচালক মো. শামসুল আলম, বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক মো. মোফাজ্জল হোসেন, সহকারী পরিচালক শাহ মো. সদরুল আলম, সাবেক প্রধান ইমারত পরিদর্শক মো. মাহবুব হোসেন সরকার, সাবেক ইমারত পরিদর্শক মো. আওরঙ্গজেব সিদ্দিকী, সহকারী অথোরাইজড অফিসার মো. নজরুল ইসলাম, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক জাহানারা বেগম, সহকারী পরিচালক মেহেদউজ্জামান, নিম্নমান সহকারী মুহাম্মদ মজিবুর রহমান মোল্লা ও অফিস সহকারী মো. এনামুল হককেও আসামি করা হয়েছে এ মামলায়।
এছাড়া বিসিএসআইআরের সদস্য (অর্থ) মুহাম্মদ শওকত আলী, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব আ ই ম গোলাম কিবরিয়া, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবদুল্লাহ আল বাকি, গণপূর্ত অধিদফতরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সৈয়দ নাজমুল হুদা এবং নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সামছুর রহমানও এ মামলার আসামি।
গত ২৮ মার্চ এফ আর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ২৭ নিহত হওয়ার পর এ ভবন নির্মাণে নানা অনিয়মের বিষয়গুলো বেরিয়ে আসতে থাকে। কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ে ওই ভবনের জমির মূল মালিক প্রকৌশলী ফারুক। অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ভবনটি নির্মাণ করে রূপায়ণ হাউজিং এস্টেট লিমিটেড। সে কারণে সংক্ষেপে ভবনের নাম হয় এফ আর টাওয়ার।
এফ আর টাওয়ার মামলায় তাসভীরের জামিন
