দর বৃদ্ধির চমক

বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক কম দামি শেয়ারে

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: টানা পতনের পর কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুঁজিবাজার। এতে বাজারমুখী হতে শুরু করেছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ার জের ধরে বাড়ছে তালিকাভুক্ত অধিকাংশ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার এবং ইউনিট দর। তবে এ দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে কমদামি শেয়ার। সম্প্রতি এ ধরনের শেয়ারদর বেশি বাড়তে দেখা যাচ্ছে। যার বেশিরভাগ শেয়ারদর অভিহিত দরের নিচে। গতকালও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি।
প্রাপ্ত তথ্যমতে গতকাল ১০ টাকা দরের নিচে থাকা শেয়ারের চাহিদা বেশি দেখা গেছে। এর মধ্যে কিছু কোম্পানির শেয়ারে বিক্রেতা সংকট দেখা যায়। এ তালিকায় সবার উপরে ছিল তাল্লু স্পিনিং। দীর্ঘদিন থেকে এ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর পাঁচ টাকার নিচে অবস্থান করছে। গতকাল হঠাৎ করেই এ কোম্পানির শেয়ারদর প্রায় ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে চার টাকা ৫০ পয়সায় লেনদেন হয়। একইভাবে আট শতাংশ দর বেড়ে কেয়া কসমেটিকসের শেয়ার লেনদেন হয় চার টাকা ১০ পয়সায়।
এদিকে দীর্ঘদিন থেকে উৎপাদন বন্ধ থাকা ইউনাইটেড এয়ার ওয়েজের শেয়ারদর গতকাল সন্তোষজনকহারে বাড়তে দেখা গেছে। কোম্পানির অবস্থা করুণ হওয়ায় দীর্ঘদিন থেকে এ শেয়ার ১০ টাকার নিচে অবস্থান করছিল। পরে তা পাঁচ টাকার নিচে নেমে যায়। পরবর্তীতে এ শেয়ারদর তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির শেয়ারের মধ্যে  সর্বনিম্ন স্তরে নেমে যায়। এক সময় এ শেয়ার এক টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হতে দেখা যায়। গতকাল এ শেয়ারের দর বেড়েছে ছয় শতাংশের বেশি। দিন শেষে প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয় এক টাকা ৭০ পয়সায়।
এদিকে গতকাল তালিকাভুক্ত অ্যাপোলো ইস্পাতের শেয়ারদরও প্রায় ছয় শতাংশ বাড়তে দেখা গেছে। দিন শেষে এ প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে পাঁচ টাকা ৫০ পয়সায়। একইভাবে ব্যাংক খাতের আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের শেয়ারের দর পাঁচ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়ে চার টাকায় লেনদেন হয়। এছাড়া এমারাল্ড অয়েল, জেনারেশন নেক্সডসহ আরও বেশকিছু কোম্পানির কম দরের শেয়ারদর বাড়তে দেখা গেছে।
বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে বাজারসংশ্লিষ্টরা বলেন, যখন কোনো কোম্পানির শেয়ারদর কমে যায় তখন অনেকেই এ ধরনের শেয়ারের প্রতি আকৃষ্ট হন। কারণ এসব কোম্পানির কোনো মৌলভিত্তি সংবাদ এলে যে কোনো সময় এর দর বাড়তে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের কোম্পানির আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় নেওয়া দরকার। কারণ দুর্বল কোম্পানির শেয়ারদর যতই কম হোক না কেনএ শেয়ার ক্রয় করা বোকামি।
তাদের অভিমত, দেশের পুঁজিবাজারে এখন যেসব কোম্পানির শেয়ারদর অভিহিত মূল্যের নিচে রয়েছে, তাদের বেশিরভাগেরই আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। তাই এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগের আগে বিনিয়োগকারীদের হিসাবি হওয়া দরকার। সেটা না হলে একসময় এসব শেয়ার নিয়ে তাদের সমস্যায় পড়তে হতে পারে।
জানতে চাইলে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বলেন, যে কোনো কোম্পানির শেয়ার কেনার আগে ওই কোম্পানির আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে খবর নেওয়া বুদ্ধিমান বিনিয়োগকারীর কাজ। কোম্পানির অবস্থা যদি খারাপ হয় তাহলে ওই কোম্পানির শেয়ারদর যতই কম হোক না কে তা কেনা নিরাপদ নয়। এর চেয়ে ভালো কোম্পানির শেয়ারের সঙ্গে থাকা নিরাপদ।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০