নিজস্ব প্রতিবেদক: ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডকে ঢেলে সাজানো সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, ইসলামী ব্যাংকে সরকারের শেয়ার ধারণের পরিমাণ মাত্র দশমিক শূন্য শূন্য এক তিন শতাংশ। সরকারের শেয়ারের পরিমাণ কম হওয়ায় ব্যাংকটির কার্যক্রমকে ঢেলে সাজানোর বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। গতকাল রোববার জাতীয় সংসদের টেবিলে উত্থাপিত জাতীয় পার্টির এমপি সেলিম উদ্দিনের (সিলেট-৫) এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ইসলামী ব্যাংক বেসরকারি খাতের একটি লিমিটেড কোম্পানি। ব্যাংকের শেয়ার হোল্ডাররা এর মালিক। শেয়ার হোল্ডাররা নির্বাচিত পরিচালকদের পক্ষে ব্যাংকের স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে। ইসলামী ব্যাংকে সরকারের শেয়ার ধারণের ন্যূনতম হওয়ায় ব্যাংকের কার্যক্রমকে ঢেলে সাজানোর জন্য সরকারের পক্ষে কোনো বিশেষ পদক্ষেপ বা কর্মসূচি গ্রহণ সম্ভব নয়।
এম আবদুল লতিফের (চট্টগ্রাম-১১) আরেক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, কিছু অসৎ ব্যবসায়ী পণ্যের পরিমাণ, বর্ণনা, সংখ্যা, মূল্যে অসত্য তথ্য দিয়ে সরকারের রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা করে থাকে। রাজস্ব ফাঁকি বন্ধে আমদানি-রফতানি সংক্রান্ত কার্যক্রম অনলাইনে করার জন্য ইতোমধ্যে দেশের সব কাস্টম হাউস এবং গুরুত্বপূর্ণ ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশনে অটোমেটেড সিস্টেম ফর কাস্টমস ডাটা ওয়ার্ল্ড স্থাপন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে এই সফটওয়্যারটির সংযোগ স্থাপন করা হচ্ছে। এটির মাধ্যমে কাস্টমস সম্পর্কিত কার্যক্রম অনলাইনে করে অপচেষ্টা প্রতিরোধ করা হচ্ছে।
আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাছিমের (মাদারীপুর-৩) এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে ব্যাংকিং চ্যানেলে এক লাখ ১৬ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকার সমপরিমাণ ফরেন (বিদেশি) রেমিট্যান্স এসেছে, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২ হাজার ১৩৬ কোটি টাকা কম।
নুরুন্নবী চৌধুরীর (ভোলা-৩) অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ট্রানজিট সুবিধায় কোনো দেশকে পণ্য পরিবহনের সুযোগ দেওয়া হয়নি এখনও। তবে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান প্রটোকল অন আইল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেড (পিআইডব্লিউটিটি) এর আওতায় ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধায় ভারত থেকে পণ্য পরিবাহিত হয়।
সুকুমার রঞ্জন ঘোষের (মুন্সীগঞ্জ-১) এক প্রশ্নের জবাবে আবুল মাল আবদুল মুহিত জানান, জনগণকে আয়কর দিতে উৎসাহিত করার জন্য জেলা ও উপজেলা সদরে প্রতিবছরই আয়কর মেলার আয়োজন করা হয়। তিনি আরও জানান, এবার দেশের ৮টি বিভাগে ৭ দিন, সব জেলায় ৪ দিন, ৮৬ উপজেলা শহরে ২ দিন করে দেশের মোট ১৫০টি স্থানে উৎসবমুখর পরিবেশে আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলার শেষ দিনেও করদাতাদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। করদাতাদের মেলায় যাওয়ার সুবিধার্থে পরিবহনের ব্যবস্থা করা হয়।
সামশুল হক চৌধুরীর (চট্টগ্রাম-১২) এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, বৈদিশিক মুদ্রা বা অর্থপাচার রোধে বাংলাদেশ সরকার, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফইইউ) কর্তৃক সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেছেন, অর্থপাচার রোধে বর্তমানে বাংলাদেশে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ বলবৎ রয়েছে, যা গত ২০১৫ সালের ২৬ নভেম্বর সর্বশেষ সংশোধিত হয়। এ আইনের বিধান অনুসারে আমদানির ক্ষেত্রে অতিমূল্যায়ন, রফতানির ক্ষেত্রে অবমূল্যায়ন অথবা কোনো অসম চুক্তির মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাঠালে বা দেশে আনয়নযোগ্য অর্থ বিদেশে রেখে দেওয়াও অর্থ পাচার হিসেবে গণ্য করা হয়।
ইসলামী ব্যাংক ঢেলে সাজানো সম্ভব হচ্ছে না – অর্থমন্ত্রী

Add Comment