নিজস্ব প্রতিবেদক: তৈরি পোশাকশিল্পে বাংলাদেশকে ‘গ্লোবাল লিডার’ হিসেবে উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেছেন, বাংলাদেশ তৈরি পোশাক খাতে এশিয়াসহ সমগ্র বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে। বিশ্ববাজারে এ শিল্পের অবস্থান ধরে রাখতে পণ্য বৈচিত্র্যকরণের পাশাপাশি নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে। বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং ধারাবাহিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পেছনেও এ শিল্প খাতের বড় অবদান রয়েছে।
গতকাল বুধবার রাজধানীর বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটিতে আয়োজিত চার দিনব্যাপী ‘২০তম টেক্সটেক বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো ২০১৯’-এর উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।
আন্তর্জাতিক আয়োজক সংস্থা সেমস গ্লোবাল ইউএসএ অ্যান্ড এশিয়া প্যাসিফিক এ প্রদর্শনীর আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে একই সঙ্গে ‘১৬তম ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইয়ার্ন অ্যান্ড ফেব্র্রিক শো-২০১৯’ এবং ‘৩৮তম ডাই-ক্যাম বাংলাদেশ এক্সপো ২০১৯’ এর উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, বিকেএমইএ’র সহসভাপতি মনসুর আহমেদ ও সেমস গ্লোবালের প্রেসিডেন্ট মেহেরুন এন. ইসলাম ও গ্রুপ সিইও এসএস সারোয়ার বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়ক ধরে দ্রুত এগিয়ে চলেছে। বর্তমানে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রয়েছে। সরকারের দৃঢ় অবস্থানের ফলে শিল্প খাতসহ সামগ্রিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হচ্ছে।
তিনি ২০২১ সালের মধ্যে শিল্পসমৃদ্ধ মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র বিনির্মাণে তৈরি পোশাকশিল্প খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত মালিক, শ্রমিকসহ সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন। এ শিল্প খাতের যে কোনো সমস্যার সমাধানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের নীতি সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প খাত একদিকে যেমন বিকশিত হচ্ছে, অন্যদিকে তীব্র বিশ্ব প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হচ্ছে। এ প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য তৈরি পোশাকশিল্প সংশ্লিষ্টদের সব সময় প্রস্তুত থাকতে হবে। দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোকে বিশ্বমানের করে গড়ে তুলতে হবে। এ লক্ষ্যে সেমস্ গ্লোবাল আয়োজিত প্রদর্শনী দেশীয় গার্মেন্ট ও টেক্সটাইল শিল্পে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি স্থানান্তরে সহায়ক হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, চার দিনব্যাপী আয়োজিত এ ত্রিমাত্রিক প্রদর্শনীতে স্বাগতিক বাংলাদেশ, চীন, ভারত, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তাইওয়ান, জাপান, তুরস্ক, ইতালি, শ্রীলঙ্কাসহ মোট ২৫টি দেশ থেকে সাড়ে ১২০০ প্রতিষ্ঠান ১৫০০টি স্টলের মাধ্যমে তাদের পণ্য ও পরিষেবাদি সেবা প্রদর্শন করবে। অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো টেক্সটাইল ও গার্মেন্ট শিল্পের আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি, বিভিন্ন ধরনের সুতা, ডেনিম, নিটেড ফেব্রিকস, ফ্লিস, ইয়ার্ন অ্যান্ড ফাইবার, আর্টিফিসিয়াল লেদার, এমব্রয়ডারি, বাটন, জিপার, লিনেন ব্লেন্ডসহ অ্যাপারেল পণ্য প্রদর্শন করছে। প্রদর্শনীতে আগত দেশ-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং দর্শক, ভোক্তা, উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীদের জন্য ওয়ান স্টপ ও যুগোপযোগী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে, যেখানে কার্যকরী ও ফলপ্রসূ যোগাযোগের মাধ্যমে উদ্যোক্তারা আধুনিক প্রযুক্তি ও সেবার সঙ্গে পরিচিত হতে পারবেন। এছাড়া ভোক্তা, উদ্যোক্তা, আমদানিকারক ও সরবরাহকারীদের সরাসরি সাক্ষাৎ এবং আলাপচারিতার ফলে সবার মধ্যে সেতুবন্ধন গড়ে উঠবে এবং নতুন ব্যবসায়িক খাত প্রসার করবে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত প্রদর্শনী চলবে। এটি সবার জন্য উš§ুক্ত থাকবে এবং এতে প্রবেশ মূল্য দিতে হবে না।
পোশাকশিল্পে বাংলাদেশ এখন গ্লোবাল লিডার: শিল্পমন্ত্রী
