সম্প্রতি পুঁজিবাজার বিষয়ে ক্যাপিটাল মার্কেট প্ল্যাটফর্ম গঠন করা হয়েছে, যেখানে ব্রোকারদের সংগঠন ডিবিএ, মার্চেন্ট ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশন ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের নেতারা রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে দেখা গেছে, বাজার যখন খারাপ অবস্থানে গেছে, তখন এক প্রতিষ্ঠান অপর প্রতিষ্ঠানকে দোষারোপ করত। এতে কোনো ফল আসত না। তাই বাজার খারাপের জন্য কাউকে দোষারোপ না করে একসঙ্গে বসে নিজেদের মধ্যে সমস্যা ও কীভাবে বাজার ভালো করা যায় তার পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য এই প্ল্যাটফর্ম গঠন করা হয়েছে। এটা বাজারের জন্য ইতিবাচক হতে পারে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ছিলেন বিএমএসএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রিয়াদ মতিন।
মো. রিয়াদ মতিন বলেন, জানুয়ারির শেষের দিক থেকে বাজারে খারাপ অবস্থা বিরাজ করছে। সম্প্রতি বাজার ভালো করার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা দেওয়ার পরেও কোনোমতেই ছন্দে ফিরছে না বাজার। ২০১০ সালের পর যেসব মৌলভিত্তির কোম্পানি আসছে, সেগুলোর দরও কমে যাচ্ছে। ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থাহীনতা কাজ করছে। এতে একদিকে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে ব্রোকারেজ হাউজ মালিকদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা কাজ করছে। পুঁজিবাজার হচ্ছে স্পর্শকাতর জায়গা। তাই বিনিয়োগকারীদের বলা হয় দেখে-শুনে বিনিয়োগ করতে। কিন্তু বিভিন্ন তথ্য বিচার-বিশ্লেষণ করে বিনিয়োগ করেও কোনো লাভ হচ্ছে না; বরং বিনিয়োগকারীরা আরও লোকসানে পড়ছে। আমরা চাই বাজার স্থিতিশীল অবস্থানে যাক। প্রতিনিয়ত বাজারে যদি ২০ পয়েন্ট করে কমতে থাকে, তাহলে বাজারে কোনো গতিশীলতা ফিরে আসবে না। বাজারের টার্নওভার ৩০০ কোটি থেকে ৪০০ কোটি টাকায় রয়েছে। প্রতিদিন যদি এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা টার্নওভার না হয় তবে এটাকে গতিশীল বাজার বলা যাবে না। বাজার টার্নওভার বাড়াতে হলে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বিনিয়োগ বাড়লে সূচক বাড়বে। কথা হচ্ছে, দেশের অর্থনীতি সূচক প্রায় সবই ইচিবাচকভাবে এগোচ্ছে। একদিকে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি বাড়ছে ও আরও বাড়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে এবং বাজেটের আকার ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু বাজারে কোনো আশানুরূপ ফলাফল দেখা যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, বহুজাতিক কোম্পানি গ্রামীণফোনের কাজ থেকে বকেয়া আদায়ে বিটিআরসির কঠোর অবস্থানের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। আর এ সংবাদ প্রকাশে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ দূরত্বে ছিল। কোম্পানিটির শেয়ারের দর অনেক কমে গেছে। ফলে এর একটি প্রভাব বাজারে লক্ষ করা গেছে। কারণ যখন একটি বড় মানের কোম্পানির মৌলভিত্তি শেয়ারের দর কমে যায়, তখন সাধারণভাবে বাজারের সূচক ও টার্নওভার কমতে থাকে। সম্প্রতি পুঁজিবাজার বিষয়ে একটি ক্যাপিটাল মার্কেট প্ল্যাটফর্ম গঠন করা হয়েছে, যেখানে ব্রোকারদের সংগঠন ডিবিএ, মার্চেন্ট ব্যাংক অ্যাসোসিয়েশন এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের নেতারা রয়েছেন। বাজার যখন খারাপ অবস্থানে যায়, তখন একে অপরকে দোষারোপ করে। বাজার খারাপ হওয়ার জন্য কাউকে দোষারোপ না করে একসঙ্গে বসে কীভাবে বাজার ভালো করা যায়, তার পদক্ষেপ নিতে হবে। এটা বাজারের জন্য ইতিবাচক দিক বলে মনে করি।
শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ