সৈয়দপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

অধিগ্রহণকৃত জমির মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়া শুরু

মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর: সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীতকরণ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের শেষ ধাপের কাজ সম্পন্নের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শেষ ধাপের কাজে জমির মূল্য নির্ধারণ এবং ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক ও সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্ষতিপূরণের অর্থ পরিশোধ করা হবে। এজন্য আগামী এক মাসের মধ্যে জমি অধিগ্রহণ এলাকায় ৭ ধারা নোটিস জারি করে ব্যক্তি ও সরকারি মালিকানাধীন জমির মূল্য নির্ধারণ কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। এ কাজ নীলফামারী ও দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের তদারকিতে সৈয়দপুর ও পার্বতীপুর উপজেলা ভূমি দফতর সম্পন্ন করবে। নোটিস জারির পর ভূমি বিষয়ে কারও আপত্তি থাকলে তা নিষ্পত্তি এবং জমি ও স্থাপনার মূল্য স্থির করা হবে। এর ভিত্তিতে ভূমি মালিকদের মূল্য পরিশোধ করা হবে।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করতে সৈয়দপুর ও পার্বতীপুর উপজেলায় ৯১২ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য চিহ্নিত করা হয়। গত জুলাই মাসে ফিল্ডবুক তৈরির কাজ শেষ হয়। অধিগ্রহণের জন্য চিহ্নিত ৯১২ একর জমির মধ্যে ৫৩৫ একর ব্যক্তি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের ১৩২ একর জমি রয়েছে। এছাড়াও পার্বতীপুর উপজেলার বেলাইচণ্ডি ইউনিয়নে ব্যক্তিমালিকানাধীন রয়েছে ৩১৭ একর জমি।
গত ৩১ আগস্ট নীলফামারী জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে জমি অধিগ্রহণ কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে উচ্চ পর্যায়ের এক আন্তঃবিভাগ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দিনাজপুর জেলা প্রশাসকসহ সাত সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
সভায় জমি অধিগ্রহণের কাজ সম্পন্নে করণীয় বিষয় ঠিক করা হয় এবং অধিগ্রহণ এলাকায় বিদ্যমান পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্যানেল, সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের সড়ক, ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে মসজিদ-মাদরাসার বিষয়ে করণীয় জানাতে এবং ভূমিহীন পরিবারদের পুনর্বাসন সম্পর্কে প্রস্তাব জমা দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সংস্থাগুলোর প্রস্তাব জমা হলে আন্তঃবিভাগীয় সভায় প্রস্তাব পর্যালোচনা করে অধিগ্রহণ কাজ দ্রুত শেষ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ সভার সিদ্ধান্তমতো শেষ ধাপের কাজ সম্পন্নের প্রক্রিয়া শুরু করবে নীলফামারী ও দিনাজপুর জেলা প্রশাসন।
জানা যায়, এরই মধ্যে ভূমিহীন পরিবারদের পুনর্বাসন ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন মসজিদ-মাদরাসা সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব নীলফামারী জেলা প্রশাসনে জমা দিয়েছে। অন্য সংস্থাও তাদের প্রস্তাব জমা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
জানতে চাইলে সৈয়দপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পরিমল কুমার সরকার জানান, আন্তঃবিভাগীয় সভার সিদ্ধান্তমতো প্রস্তাব জমা হলে এ নিয়ে আরেকটি আন্তঃবিভাগীয় সভা অনুষ্ঠিত হবে। ওই সভার পরই জমি অধিগ্রহণের শেষ ধাপের কাজ সম্পন্নের প্রক্রিয়া শুরু হবে। এরই মধ্যে মাঠ পর্যায়ে কাজ সম্পন্নের সব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এ কাজের আওতায় ৭ ধারা নোটিস জারি, আপত্তি নিষ্পত্তি এবং জমি ও স্থাপনার মূল্য নির্ধারণ করা হবে। এর ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে মূল্য পরিশোধের কাজ সম্পন্ন হবে। এ কাজ আগামী এক মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীত করার ঘোষণা দেন। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ নেপাল, ভুটান এবং চীনের সঙ্গে উত্তরাঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে ওই ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নসহ ভারত সরকারের তৃতীয় ঋণ চুক্তির অর্থে। বিমানবন্দরটি ২০২০ সালে চালুর লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। এজন্য দ্রুত সময়ে কাজ শেষ করার প্রক্রিয়া চলছে।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০