ন্যায্য দাম না পাওয়ায় হতাশ মুন্সীগঞ্জের পাটচাষি

শেখ মোহাম্মদ রতন, মুন্সীগঞ্জ: ন্যায্য দাম না পাওয়ায় পাট চাষ করে হতাশ হয়ে পড়েছেন মুন্সীগঞ্জের কৃষক। পাটের বর্তমান বাজারদরে তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, মণপ্রতি পাটে শ্রমিকের মজুরিসহ খরচ পড়েছে প্রায় এক হাজার ৫০০ টাকা। মণপ্রতি একই দামে পাট বিক্রি করছেন কৃষক। সরকারিভাবে পাট না কেনায় স্থানীয় পাইকারদের কাছে পাট বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে তারা। ফলে কৃষকদের কোনো লাভ থাকছে না।
টঙ্গীবাড়ী উপজেলার বলই গ্রামের কৃষক মহব্বত খান জানান, প্রতি বছর ১৬ গণ্ডা জমিতে পাট চাষ করেন। লাভ না হওয়ায় এবার ১০ গণ্ডা জমিতে চাষ করেছেন। পাট চাষ করে লাভ নাই। লাভ বলতে শুধু পাটখড়ি। প্রতি মণ পাট চাষে যে টাকা খরচ হয় তাতে পাট বিক্রি করে কোনো লাভ নেই। পাইকার ব্যবসায়ীরা প্রতি মণ পাট এক হাজার ৫০০ টাকার বেশি বলছেন না।
সিরাজদিখান উপজেলার কৃষক রহমত মিয়া জানান, গত তিন মাস পাট চাষে যে পরিশ্রম করেছেন তা সবই ভেস্তে গেছে। এত কম দামে পাট বিক্রি করে পোষায় না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা শফিকুল হাসান জানান, এবার মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় দেশি পাট আবাদ হয়েছে ৪৮৭ হেক্টর ও তোষা পাট ২১ হেক্টর। টঙ্গীবাড়ি উপজেলায় দেশি পাট ৪৭৫ হেক্টর ও তোষা পাট ২৬০ হেক্টর। শ্রীনগর উপজেলায় দেশি পাট আবাদ হয়েছে ৪০ হেক্টর ও তোষা পাট ২৫ হেক্টর। সিরাজদিখান উপজেলায় দেশি পাট আবাদ হয়েছে ১৫০ হেক্টর ও তোষা পাট এক হাজার ৫৮০ হেক্টর। লৌহজং উপজেলায় দেশি পাট আবাদ হয়েছে ২৫০ হেক্টর ও তোষা পাট ৭০ হেক্টর। গজারিয়া উপজেলায় দেশি পাট আবাদ হয়েছে ২০৫ হেক্টর।
তিনি আরও জানান, পাটের আবাদনির্ভর করে বৃষ্টিপাতের ওপর। এ বছর পাট চাষ শুরুর সময় বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। যে কারণে গত বছরের চেয়ে পাট কম হয়েছে। কিন্তু পাট চাষের ধারাবাহিকতা ঠিকই আছে। দেশি সিবি-১, সিবি-৩ এবং তোষা-৯৮, ৯৭ জাতের পাট মুন্সীগঞ্জ জেলায় চাষ হয়ে থাকে। এবার পাটে কোনো পোকার উপদ্রব নেই। প্রতি মণ পাটে কৃষকের খরচ পড়েছে প্রায় এক হাজার ৫০০ টাকা। এখন পাটের যে দাম, তাতে কৃষকের লাভ থাকছে না। সরকারিভাবে চাষিদের থেকে পাট কেনার কোনো ব্যবস্থা নেই। তারা শুধু অল্প পানিতে পাট পচানোর জন্য চাষিদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০