পুঁজিবাজারে আস্থার সংকট রয়েছে

পুঁজিবাজারে আস্থার সংকট থাকায় সরকারের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হলেও বাজার স্বরূপে ফিরছে না এমনটি মনে করেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। গতকাল এন টিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে আলোচকদের এমন মন্তব্য করতে শোনা যায়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ছিলেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক সাব্বির আহমেদ এফসিএ এবং ফিনিক্স সিকিউরিটিজ লিমিটেডের সাবেক এমডি এ কাদির চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে সাব্বির আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য বেশ কিছু ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এজন্য অর্থমন্ত্রী বাজারসংশ্লিষ্টদের নিয়ে বেশ কয়েকটি সভাও করেছেন। কিন্তু বাজারের আশানুরূপ কোনো ফল দেখা যাচ্ছে না। আসলে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংক ও আর্থিক খাতে তারল্য সংকট রয়েছে। এর পাশাপাশি বাজারে আস্থার সংকটও রয়েছে। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই বাজারে এর প্রভাব পড়বেই। এছাড়া বাজারের আরও কিছু কাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। এ বিষয়গুলো যতদিন পর্যন্ত সমাধা না হবে, ততদিন বিনিয়োগকারীর আস্থা ফিরে আসবে না।
গত আট থেকে ৯ বছরে আইপিও’র মাধ্যমে যে কোম্পানিগুলো বাজারে এসেছে, সেগুলোর বেশিরভাগই খারাপ অবস্থানে রয়েছে। ফলে বিনিয়োগকারীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কেন কোম্পানিগুলোয় এ রকম অবস্থা বিরাজ করছে? আসলে এ বিষয়গুলো ভালোভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে না। যদি বিষয়গুলো সঠিকভাবে পর্যালোচনা না করা হয়, তাহলে বাজারে আস্থার সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করবে। আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে, বাজারে কোন ধরনের কোম্পানি অন্তর্ভুক্ত হওয়ার যোগ্য, অর্থাৎ এ ধরনের বিষয়গুলোর কোনো বিশ্লেষণ করা হচ্ছে না। আবার বস্ত্র খাত ও আরএমজির ক্রমান্বয়ে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এখানে ভালো ব্যবস্থাপনা নেই। যেমন কোনো ব্যক্তি ২০ বছর আগে একটি ব্যবসা শুরু করেছেন। এখনও তিনি ওই ব্যবসা পরিচালনা করছেন। কথা হচ্ছে, এখন ব্যবসার ধরনে আমূল পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু ওই ব্যক্তি কি সেভাবে পরিবর্তন করতে পেরেছেন বা তার পরিবর্তে কোনো অভিজ্ঞ ব্যক্তি আছে। এখন যদি এ ধরনের কোম্পানি বাজারে আইপিও হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, তাহলে বাজারের কী অবস্থা হবে? দেশে অনেক বহুজাতিক কোম্পানি ব্যবসা ও ভালো প্রফিট করছে। দেশ থেকে অর্থ নিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু বাজারে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে না। এ বিষয়গুলো সরকারের বিবেচনা করা উচিত।
তিনি আরও বলেন, বোনাস শেয়ার বাজারকে নষ্ট করে দিচ্ছে। কোম্পানিগুলো বিভিন্নভাবে প্রফিট কারসাজি করে বিনিয়োগকারীদের বোনাস শেয়ার ধরিয়ে দিচ্ছে। ফলে কোম্পানির শেয়ারসংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। ফলে কমে যাচ্ছে ইপিএস।
এ কাদির চৌধুরী বলেন, বাজারের এ অবস্থার জন্য অনেক কারণ রয়েছে। তাই বাজার ভালো করতে হলে ইনসাইডার ট্রেডিং বন্ধ করতে হবে। সার্ভিলেন্স টিম আরও শক্তিশালী করতে হবে। এছাড়া বিএসইসি, ডিএসই, সিএসই প্রভৃতি নিয়ন্ত্রক সংস্থায় অভিজ্ঞ লোক বসাতে হবে। বিনিয়োগকারীদের কাছে পর্যাপ্ত অর্থ রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হলে বাজারে ভালো কোম্পানি আনতে হবে। যদি ভালো কোম্পানি আনতে পারা যায়, তাহলে বাজারে অর্থের কোনো সমস্যা হবে না।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০