বাংলাদেশের শিল্প এখনও শক্ত কাঠামোর ওপর দাঁড়াতে পারেনি। দুর্বল অবকাঠামো ও সহায়ক ব্যবসা পরিবেশের অনুপস্থিতি এ পথে অন্তরায়। এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের উন্নয়নে যথাযথ কর্মপরিকল্পনা প্রয়োজন। কেননা, এ খাতের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এখানে পুঁজি হারানোর ঝুঁকি কম। তাই এসএমই শিল্পের প্রসারে উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে এ খাতের উন্নয়ন সম্ভব। এসএমই খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত সহায়তাসহ আলাদা ব্যাংক, ল্যাবরেটরি, গবেষণা কেন্দ্র নির্মাণ ও শিল্প মন্ত্রণালয়ে আলাদা বিভাগ চালু করা জরুরি।
বাংলাদেশ জনবহুল দেশ। এ কারণে জমির সংকট রয়েছে। পুঁজি সংগ্রহ করাও কঠিন। তাই শিল্পোন্নয়নের জন্য প্রধানত এসএমই খাতের ওপর জোর দিতে হবে। আমাদের দেশে শ্রমশক্তির সামান্যই এসএমই খাতে নিয়োজিত রয়েছে। জাপানের অনেক বড় প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্যের প্রায় সবটুকু নিজেরা উৎপাদন না করে সাব-কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে অন্য প্রতিষ্ঠানে পণ্যের গুণগত মান শতভাগ নিশ্চিত করে উৎপাদন করে। এভাবে বাংলাদেশের তরুণ সমাজ যদি উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তির সহায়তা পায়, তাহলে এ খাত উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।
দেশে এসএমই পণ্যের মানোন্নয়ন নিয়ে নানা সমস্যা রয়েছে। তাই এ খাতের পণ্যের মান পরীক্ষার জন্য আধুনিক ল্যাবরেটরি স্থাপন করা জরুরি। পণ্যের মান নিশ্চিতে বিভিন্ন দেশ, বিশেষ করে চীন, ভারত ও জাপানে সরকারি টেস্টিং ও গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে। বাংলাদেশকে উন্নত অর্থনীতির দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারি টেস্টিং ও গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ কেন্দ্র থেকে এসএমই উদ্যোক্তাদের পণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়ায়
প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ সাধনে পরামর্শ দেওয়া হবে। এছাড়া এসএমই খাতে ঋণ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশে ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তেমনি বাংলাদেশের এ খাতে ঋণ দেওয়ার জন্য এসএমই ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। এটি গৃহীত হলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোক্তাদের ব্যাংক ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্র অনেকটা সহজ হবে।
দেশের এসএমই খাতের সার্বিক কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্নভাবে পরিচালনার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ে একটি আলাদা বিভাগ চালু করা প্রয়োজন। এসএমই খাতের দ্রুত উন্নয়নে এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন জরুরি।
উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন পরিকল্পনা
