স্মরণ: নিলুফার ইয়াসমিন

 

নিলুফার ইয়াসমিনের জন্ম ১৯৪৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি কলকাতায়। পাঁচ বোনের মধ্যে তিনি চতুর্থ। বড় বোন ফরিদা ইয়াসমিন ও মেজো বোন ফওজিয়া খান প্রতিষ্ঠিত সংগীতশিল্পী। সেজো বোন শিক্ষা বিষয়ে ডক্টরেট ডিগ্রিধারী নাজমা ইয়াসমিন হক। ছোট বোন সাবিনা ইয়াসমিন প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী। নিলুফার ইয়াসমিনের পিতা ছিলেন অবিভক্ত বাংলার একজন সিভিল সার্ভিস অফিসার। সরকারি কাজে ব্যস্ত থাকা সত্ত্বেও সংগীতের প্রতি তার আকর্ষণ ছিল প্রবল। পারিবারিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি গান গাইতেন। আর নিলুফার ইয়াসমিনের মা হারমোনিয়াম বাজাতেন। তার পিতার বাড়ি সাতক্ষীরার মুকুন্দপুর গ্রামে। মুকুন্দপুরের ঐতিহ্যবাহী এ পরিবারটিকে সবাই চেনেন। বহু আগে থেকেই এ বাড়ির লোকজন শিক্ষা-দীক্ষায় ছিল অগ্রগামী। নিলুফার ইয়াসমিনের মা মুর্শিদাবাদের স্বনামধন্য ওস্তাদ কাদের বখ্শর ছাত্রী ছিলেন। তিনি ভালো গান গাওয়া ছাড়াও ভালোহারমোনিয়াম বাজাতে পারতেন।

নিলুফার ইয়াসমিনের উচ্চাঙ্গ সংগীত শেখা শুরু হয় ওস্তাদ পি সি গোমেজের কাছে ১৯৬৪ সালে। একাধারে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত তিনি উচ্চাঙ্গ সংগীত শেখেন। তারপর উপমহাদেশের প্রখ্যাত ওস্তাদ বড়ে গোলাম আলী খাঁর সুযোগ্য ছাত্রী মীরা ব্যানার্জীর কাছে তালিম নেন। এরপর প্রখ্যাত সারেঙ্গী বাদক ওস্তাদ সগীরউদ্দীন খাঁ ও মুর্শিদাবাদের স্বনামধন্য ওস্তাদ দাউদ সাহেব ও প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে দীর্ঘকাল তালিম গ্রহণ করেন। তিনি নজরুল সংগীতের প্রাথমিক শিক্ষা পেয়েছেন স্বরলিপিগ্রন্থ থেকে। স্বরলিপি অনুসরণ করেই প্রথম দিকে বেতার-টেলিভিশনে নজরুল সংগীত গেয়েছেন। তিনি প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী, নজরুলসংগীত স্বরলিপিকার ও বিশেষজ্ঞ শেখ লুৎফর রহমান ও সুধীন দাশের কাছে নজরুলসংগীত শিখেছেন।

২০০১ সালের মাঝামাঝি সময়ে নিলুফার ইয়াসমিনের শরীরে টিউমার ধরা পড়ে। অপারেশনের পর তিনি আবার ফিরে এসেছিলেন সংগীত ভুবনে। তারপর ২০০৩ সালের ১০ মার্চ বারডেম হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

 

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০