নিজস্ব প্রতিবেদক: অবশেষে টানা ছয় কার্যদিবস পতনের পরে পুঁজিবাজারে সূচক ও শেয়ারদরে বড় উত্থান হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৮৮ শতাংশ কোম্পানির দরবৃদ্ধিতে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১১০ পয়েন্ট ইতিবাচক হয়েছে। সেইসঙ্গে লেনদেনও বেড়ে ৩২৮ কোটি টাকা হয়েছে। লেনদেনের শুরু থেকেই সূচকের টানা উত্থান হয়েছে। বেলা ১১টায় কিছুটা নেমে গেলেও ফের ধীরে ধীরে উত্থান হয়। লেনদেন শেষে প্রধান সূচক ১১০ পয়েন্ট বেড়েছে। বাকি দুই সূচকেরও বড় উত্থান হয়। চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) একই চিত্র লক্ষ করা গেছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১১০ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট বা দুই দশমিক ৩৪ শতাংশ বেড়ে চার হাজার ৮২১ দশমিক ৬৪ পয়েন্টে অবস্থান করে।
ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক ২৭ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট বা দুই দশমিক ৫৭ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ১০৯ দশমিক ৬৭ পয়েন্টে অবস্থান করে। আর ডিএস৩০ সূচক ৩৪ দশমিক ২২ পয়েন্ট বা দুই দশমিক ০৪ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৭০৪ দশমিক ১২ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন সাত হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৬৩ হাজার ৫৬৩ কোটি ৬৮ লাখ ৮১ হাজার টাকায়। ডিএসইতে লেনদেন হয় ৩২৮ কোটি পাঁচ লাখ ৪৯ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৯৯ কোটি ৮৯ লাখ ৭৭ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ২৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা। এদিন ১০ কোটি ৫৮ লাখ ৪৬ হাজার ৫৮৫টি শেয়ার এক লাখ তিন হাজার ৫১৭ বার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩৫২ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৩১১টির, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৭টির দর।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে স্কয়ার ফার্মা। কোম্পানিটির ১৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর বেড়েছে এক টাকা। এরপরে ন্যাশনাল টিউবসের ১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে পাঁচ টাকা ১০ পয়সা। বীকন ফার্মার ১০ কোটি ২১ লাখ টাকা লেনদেন হয়, দর বেড়েছে ৭০ পয়সা। সামিট পাওয়ারের আট কোটি ৭৮ লাখ টাকা লেনদেন হয়, দর বেড়েছে ৫০ পয়সা। স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের আট কোটি ৫৭ লাখ টাকা লেনদেন হয়, দর কমেছে প্রায় ৩২ টাকা। এছাড়া ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের সাত কোটি ৬৯ লাখ টাকা ও ইউনাইটেড পাওয়ারের সাত কোটি ৩৬ লাখ টাকা লেনদেন হয়। বিএসসির সাত কোটি টাকার, ওয়াটা কেমিক্যালের ছয় কোটি ৮৭ লাখ টাকা ও জেএমআই সিরিঞ্জের ছয় কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
১০ শতাংশ বেড়ে দরবৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে বেঙ্গল উইন্ডসর। মুন্নু সিরামিকের দর ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ, দেশ গার্মেন্টসের দর ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ, ফরচুন শুজের দর ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ, বসুন্ধরা পেপার মিলসের দর ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ, এসকোয়ার নিটের দর ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ, নাহি অ্যালুমিনিয়াম ক্যাপিটালের দর ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ, বিবিএস কেব্লসের দর ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ, শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানির দর ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ ও মার্কেন্টাইল ইন্সুরেন্সের দর ৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেড়েছে।
ছয় দশমিক ৮০ শতাংশ কমে দরপতনের শীর্ষে উঠে আসে শ্যামপুর সুগার মিলস। বেক্সিমকো সিনথেটিকসের দর পাঁচ শতাংশ, তুংহাই নিটিংয়ের দর চার দশমিক ১৬ শতাংশ, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের দর চার শতাংশ, মেঘনা কনডেন্সড মিল্কের দর তিন দশমিক ৭৭ শতাংশ, সিএপিএম বিডিবিএল মিউচুয়াল ফান্ডের দর তিন দশমিক ৫২ শতাংশ, জিল বাংলা সুগার মিলসের দর তিন দশমিক ১৪ শতাংশ, ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের দর তিন দশমিক ০৮ শতাংশ, ঢাকা ডায়িংয়ের দর দুই দশমিক ৭৭ শতাংশ ও এমএল ডায়িংয়ের দর দুই দশমিক ১৩ শতাংশ কমেছে।
সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক ১৪৯ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়ে আট হাজার ৮৯৯ দশমিক ৫৫ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৪২ দশমিক ৮১ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৬৮ শতাংশ বেড়ে ১৪ হাজার ৬৪৬ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল সর্বমোট ২৩৮টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২০১টির, কমেছে ২৪টির ও অপরিবর্তিত ছিল ১৩টির দর।
সিএসইতে এদিন ১৩ কোটি ৪৯ লাখ ৭১ হাজার ২৮৯ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১৩ কোটি ২০ লাখ ৬৩ হাজার ৯৫০ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ২৯ লাখ টাকা। সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করে ডরিন পাওয়ার। কোম্পানিটির তিন কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের ৭২ লাখ টাকার, বসুন্ধরা পেপার মিলসের ৬০ লাখ টাকার, বেক্সিমকোর ৪৪ লাখ টাকার, বিবিএস কেব্লসের ৩৫ লাখ টাকার, লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের ৩৪ লাখ টাকার, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্লসের ২৪ লাখ টাকার, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ২৪ লাখ টাকার, ভিএফএস থ্রেডের ২৩ লাখ টাকার ও খুলনা পাওয়ারের সাড়ে ২২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
