শেয়ার বিজ ডেস্ক:ব্রিটেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর এসেক্সে একটি লরি কনটেইনার (মালবাহী ট্রাক) থেকে ৩৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে শহরের ওয়াটারগ্লেড ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে এসব মৃতদেহ পাওয়া যায়। অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস লরিটি দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে ২৫ বছর বয়সি লরির চালককে আটক করা হয়েছে। তিনি উত্তর আয়ারল্যান্ডের বাসিন্দা। খবর: বিবিসি।
এসেক্স পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে তারা মনে করছেন মৃতদের মধ্যে ৩৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক ও একজন কিশোর। কর্মকর্তারা বলছেন, লরিটি বুলগেরিয়া থেকে আয়ারল্যান্ড হয়ে এসেছে এবং শনিবার হলিহেড দিয়ে ব্রিটেনে প্রবেশ করেছে। নিহতদের পরিচয় সম্পর্কে এখনও কিছু জানা যায়নি। তবে পুলিশ মৃতদেহগুলোকে শনাক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা বলছেন, এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। লরিটির মধ্যে জীবিত কাউকে পাওয়া গেছে কি না, তা পুলিশ বলেনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল বলছেন, এরকম একটি ঘটনায় তিনি অত্যন্ত শোকাহত ও স্তম্ভিত।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন পার্লামেন্টে বলেছেন, এটি অকল্পনীয় এক মর্মান্তিক ও হƒদয়বিদারক ঘটনা। তিনি জানান, ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছে সেটি খুঁজে বের করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
ব্রিটেনের ট্রাক পরিবহন-সংক্রান্ত একটি সমিতির প্রধান বলেছেন, এ ঘটনায় বোঝা যায় যে বিভিন্ন অপরাধী চক্র যেভাবে অভিবাসীদের পাচারের জন্য কনটেইনার লরিকে কাজে লাগায়, তা কতটা বিপজ্জনক হতে পারে।
ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের একজন লিবডেম সদস্য অ্যান্টনি হুক বলেছেন, ব্রিটেনের উচিত ইউরোপিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে মিলে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে শরণার্থী সংকটে এরকমভাবে মানুষের মৃত্যু না হয়। তিনি আরও বলেন, ব্রিটেনসহ ইউরোপজুড়ে পপুলিস্ট সরকারগুলো অভিবাসী ও শরণার্থীদের ব্যাপারে যে কঠোর নীতি নিয়েছেÑতার ফলে লোকজন মানবপাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছে এবং প্রাণহানির ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
ব্রিটেনে এ ধরনের ঘটনা আগেও ঘটেছে। ২০০০ সালের জুন মাসে ডোভারে একটি লরির ভেতর থেকে ৫৮ জন চীনা অভিবাসীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। দুজনকে পাওয়া যায় জীবিত অবস্থায়। ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার দায় এক বছর পরেই একজন ডাচ লরি চালককে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।