এসডিজি বাস্তবায়নে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ: পরিকল্পনামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: বর্তমান সরকার এসডিজি বাস্তবায়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান বলেন, এসডিজি হলো বিশ্বব্যাপী সার্বজনিন একটি চুক্তি। সারাবিশ্বে জলবায়ুর নেতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করছি; যা পৃথিবীর জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। এই পরিবর্তন মোকাবিলার জন্য আমাদের টেকসই উন্নয়ন করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনে বড় দেশগুলো যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারা তা রক্ষা করেনি। কিন্তু আমরা এই কাজ করে যাব।

গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত এসডিজি অর্জনে চ্যালেঞ্জ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ইংরেজি দৈনিক বাংলাদেশ পোস্ট এই সেমিনারের আয়োজন করে।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রীর মূল বার্তা হলোÑকেউ না করলেও আমরা এটা একা করব। কেউ এলে তার জন্য স্বাগতম। আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। এজন্য আমরা এসডিজি বাস্তবায়নে ব্যয়ও করতে পারছি। এসডিজি বাস্তবায়নে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রতিনিয়ত এখানে বাড়তি সম্পদ ব্যয় করব। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের এসডিজি বাস্তবায়নের কাজ নিয়মিত ট্রেকিং করছি আমরা। পদ্মা সেতুর মতো বলতে চাই, কেউ এলেও এটা আমরা করব, না এলেও এটা করব,’ যোগ করেন তিনি।

সেমিনারে সাবেক রাষ্ট্রদূত ও বিশ্লেষক মুহাম্মদ জমির বলেন, ‘এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য সবাইকে সমান সুযোগ পেতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে আমাদের পারিবারিক বন্ধন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এটাকে আরও বেশি দৃঢ় করতে হবে। নৈতিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে হবে। না হলে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এজন্য সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করা দরকার। অন্যথায় এসডিজি বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।’

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘এমডিজিতে আমাদের অভূতপূর্ব সাফল্যের শক্তি নিয়ে এসডিজি বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসডিজিতে যে ১৬৯টি টার্গেট রয়েছে, তা বাস্তবায়ন করতে হলে সবাইকে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। আমাদের মাথাপিছু আয় বাড়লেও ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য কমেনি। এই বৈষম্য কমাতে না পারলে এসডিজি বাস্তবায়ন হবে না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও এই বৈষম্য কমানোর কথা বলেছিলেন। আমাদের নারী-পুরুষ ও অন্যান্য শ্রেণি-পেশার ক্ষেত্রে যেসব বৈষম্য রয়েছে, সেগুলো কমাতে হবে। সমাজে অরাজকতা সৃষ্টি বন্ধ করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। প্রশাসন সঠিকভাবে কাজ করলে শুধু নুসরাত নয়, প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্ভব। না হলে এসডিজি বাস্তবায়ন করা যাবে না। আমি মানবাধিকার কমিশনের কাজ করতে গিয়ে সরকারের কাছ থেকে বাধা পায়নি। কিন্তু সরকারি কর্মকর্তাদের সহায়তা পায়নি। এসডিজি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘নারীদের অধিকার নিশ্চিত করে সব ধরনের নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। আমরা হিজড়া ও প্রতিবন্ধীদের মূল শ্রোতধারায় নিতে পারছি না। এসডিজি বাস্তবায়নে এই কাজটি করা খুবই জরুরি।’ 

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পোস্ট সম্পাদক শরীফ শাহাব উদ্দীন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সবাইকে এসডিজি সম্পর্কে জানতে হবে। নাগরিক হিসেবে আমাদের কী করণীয় তা জানতে হবে এবং তা করতে হবে। না হলে দেশ এগোবে না। সরকারকে সবসময় বিরোধিতার স্বার্থে বিরোধিতা নয়। এসডিজি বাস্তবায়নে আমাদের সবাইকে সরকারের সহযোগিতা করা নৈতিক দায়িত্ব।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০