মাংসের বাজারে নিয়মিত মনিটরিং প্রয়োজন

 

সম্প্রতি অস্বাভাবিক হারে গরুর মাংসের দাম বেড়েছে। নিম্নবিত্ত তো বটেই, এতে নিম্ন-মধ্যবিত্তরাও সংকটে পড়েছে। গরুর মাংস এদেশে আমিষ জোগানের অন্যতম প্রধান উৎস। এ অবস্থায় গরুর মাংস কেনা অনেকটাই কমে যাবে। ইতোমধ্যে তা কমে গেছে বলেও জানা গেছে। দিনে দিনে প্রবলতর হবে সার্বিক আমিষ ঘাটতি। গত কয়েক মাসে এমন কিছু ঘটেনি, যাতে গরুর মাংসের দাম এতটা বাড়তে পারে। কেন বাড়লো, সে বিষয়ে অনুসন্ধান দরকার। দরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের।

একটি জাতীয় দৈনিকে গতকাল বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে যেখানে গরুর মাংসের গড় দাম ছিল ২৭৫ টাকা, তা এখন কোথাও কোথাও ৫০০ টাকা পার হয়েছে। বাংলাদেশে গরুর সংকট মূলত শুরু হয় ভারতের বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে। ২০১৫ সালের এপ্রিলে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং তাদের সীমান্তরক্ষীদের বাংলাদেশে গরু প্রবেশ করতে না দেওয়ার নির্দেশনা দেন। তখন থেকে কয়েক ধাপে গরুর দাম বেড়েছে। অবশ্য ভারতের ওই পদক্ষেপের পর বাংলাদেশ নিজস্ব উৎস থেকেই ঈদের মৌসুমগুলোতে গরুর চাহিদা মিটিয়েছে। কারণ ইতোমধ্যে দেশে গরুর খামার বেড়েছে, ক্ষুদ্র বা ব্যক্তি পর্যায়ে হলেও গরু লালনপালনের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে মানুষ। বাংলাদেশ গরুর মাংস উৎপাদনে দ্রুত আত্মনির্ভরশীল হতে পারবে, এমন আশাবাদও ব্যক্ত হয়েছিল ঈদের মৌসুমের সংবাদগুলোতে। তাহলে এমন কী ঘটলো যে, গরুর মাংসের দাম এতটা বাড়লো?

ব্যবসায়ীরা এর পেছনে হাটের খাজনার নামে চাঁদাবাজি এবং রাস্তায় রাস্তায় ট্রাকে চাঁদাবাজিকে মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। মাংস ব্যবসায়ী সমিতির একজন জানিয়েছেন, তারা সরকারের কাছে কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছেন। সেগুলো বাস্তবায়িত হলে দাম ৩০০ টাকায় নেমে আসবে। সরকার কি তাদের কথাকে আমলে নিয়ে দাম কমানোর ব্যবস্থা নেবে? কিছুদিন আগে মাংসের ব্যবসায়ীরা ছয় দিনের ধর্মঘট পালন করেন। সে ধর্মঘটের পর গরুর মাংসের দাম ৩০-৪০ টাকা বেড়েছিল। এদেশে সাধারণত ধর্মঘটের মতো কর্মসূচি নেওয়া না হলে কেউ নড়েচড়ে বসে না। আমরা সরকারের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানাতে চাই, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ বা ক্যাবকে সঙ্গে নিয়ে মাংস ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য। তাদের দাবি ন্যায্য হলে তা মেনে নেওয়া হোক। ক্যাবের সভাপতির বক্তব্যও আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। তিনি দেশের মানুষকে গরু কেনা কমিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন। মানুষের পক্ষ থেকে একটি প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। তাতে মনে হয়, গরুর দাম বাড়ার ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরাই মূলত দায়ী। তারা সাধারণ মানুষের সুবিধা না দেখে নিজেদের লাভের জন্য দাম বাড়িয়েছেন। আমরা বলবো, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সব পক্ষকে নিয়ে এর একটি সমাধানের পথ নির্দেশ করুক। বাজার মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা গ্রহণেরও আহ্বান থাকবে আমাদের পক্ষ থেকে।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০