চারদিকে পানি, পানি আর পানি। অথচ পান করার কোনো উপায় নেই। কেননা, সবটুকু পানিই দূষিত। ময়লা, আর্সেনিক, রোগজীবাণু প্রভৃতির কারণে প্রতিদিনই দূষিত হচ্ছে পানি। এ কারণে সুপেয় পানির অভাব রয়েছে বিশ্বের নানা দেশে। এমন দূষিত পানি পানের উপযুক্ত করে তুলতে নতুন একটি ডিভাইস আবিষ্কার করেছেন যুক্তরাষ্ট্র্রের কয়েকজন গবেষক। পানির লবণও দূর করে এ যন্ত্র।
বিজ্ঞানীরা যন্ত্রটির নাম দিয়েছেন সোলার ভেপর জেনারেটর। যন্ত্রটি সম্পূর্ণভাবে কার্বনে মোড়া। ধারণা করা হচ্ছে, বিশ্বে উন্নয়নশীল দেশের পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত অঞ্চলেও সুপেয় পানির সংকট নিরসনে তুলনামূলক সস্তায় বিক্রি হবে এটি।
‘গ্লোবাল চ্যালেঞ্জ’ নামের একটি গবেষণা পত্রিকায় বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন নিউইয়র্কের ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েড সায়েন্সের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও প্রকল্পটির প্রধান কোয়াকিয়াঙ গ্যান। তিনি বলেছেন, ‘একটি সিস্টেমের উৎপাদন খরচ খুব কম। সৌর শক্তিতে চলবে এটি। একইসঙ্গে তাপ ক্ষয় কমানোর চেষ্টাও করছি’।
গবেষণা পত্রিকায় উল্লেখ করা হয়েছে, দলটি একটি ছোট সৌরপাত তৈরি করেছে। সূর্য থেকে রূপান্তরিত করা তাপের মাধ্যমে এ যন্ত্র পানি থেকে লবণ দূর করবে। এর মাধ্যমে প্রথমে সৌরশক্তি দ্বারা পানিকে বাষ্পে পরিণত করা হবে। একই সঙ্গে লবন, ব্যাকটেরিয়া ও অপ্রত্যাশিত উপাদনাগুলো দূর করতে থাকবে এ সোলার ভেপর জেনারটর। পরের স্টেজ গ্যাসাস স্টেট। সেখানে সরিয়ে নেওয়া হবে এসব উপাদান। এরপর আলাদা কন্টেইনারে জমতে থাকবে সুপেয় পানি।
ইতোমধ্যে পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা গেছে, এ সৌরপাত প্রতিদিন ৩ থেকে ১০ লিটার পর্যন্ত পানি পরিশুদ্ধ করতে পারবে। পানির পরিমাণ বাড়াতে কাজ করে চলেছেন গবেষকরা। সোলার পাতকে আরও সহজলভ্য করারও কাজ চলছে।
যারা সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন তাদের বাড়ির ছাদেও যেন পাতটি ব্যবহার করা যায় সে চেষ্টা করা হচ্ছে। এমনি জানিয়েছেন, গবেষণাটির সহযোগী জেহজুন লিউ। ফুডান ইউনিভার্সিটি অব চায়নায় পিএইচডি করছেন জেহজুন লিউ। তিনি ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর পরিদর্শন পণ্ডিত হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
সূত্র: দ্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম
Add Comment