শিরোপা ছোঁয়ার আশায় বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক : ব্যাট-বলে ঝড় তুলে দিল্লিতে প্রথম ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু পরের ম্যাচে চেনা রূপে নিজেদের মেলে ধরতে পারেনি টিম টাইগার্স। তারপরও মনোবল একটু ভেঙে পড়েনি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদদের। তাদের চিন্তায় শুধুই শিরোপা, যা আজ সন্ধ্যায় নাগপুরে ভারতকে হারিয়ে নিশ্চিত করতে চায় সফরকারীরা। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এমন আশার কথায় শুনিয়েছেন হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো।

সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৭ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে সে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি সফরকারীরা। ভারতের কাছে হেরেছিল আট উইকেটে। যে কারণে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ এখন সমতা বিরাজ করছে ১-১ এ। আজ শেষ ম্যাচে যে দল জিতবে তারাই শিরোপা উল্লাসে মাতবে। সে দলটিই হতে চায় বাংলাদেশ।

ভারত সফরের আগে দেশের ক্রিকেটে নানা ঝড়-ঝাপটা গেছে, যা সামলে শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে শেষ অবধি সিরিজ জমিয়ে রাখা, সমানতালে লড়াই করা, ক্রিকেটারদের এ মানসিকতায় মুগ্ধ প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। শেষ ম্যাচের আগে তিনি বলেছেন, মুখিয়ে আছেন আরও বড় কিছুর জন্য, ‘এ সফরের আগে খুব কঠিন কিছু সময় গেল। খেলোয়াড়দের কৃতিত্ব দিতেই হবে। যে উদ্যম আর তাড়না তারা গত ১০ দিনে দেখিয়েছে তা ছিল দুর্দান্ত। তারা নতুন কিছু করতে চেয়েছে। শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলতে এসেছে তাও দেশের বাইরে। দুই সপ্তাহ আগেও যদি কেউ বলতে নাগপুরে সমতা নিয়ে আমরা আসব, কেউ বিশ্বাস করত না।’

এখন পর্যন্ত ভারত সফরে শিষ্যদের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট রাসেল ডমিঙ্গো। আজ সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে আরও ভালো কিছুই করবেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা। এমনটাই আশা কোচের, ‘আমরা নিজেদের নিয়ে খুবই তৃপ্ত। আজ একটা দারুণ সুযোগ। ছেলেরা রোমাঞ্চিত। দিন শেষে ভারত বিশ্বের অন্যতম সেরা দল। এখানে কেউ বাংলাদেশের সুযোগ দেখবে না। কিন্তু যদি আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারি, তাহলে আমাদেরও সুযোগ থাকবে।’

দিল্লিতে যে বোলিং আক্রমণ নিয়ে ভারতকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ, রাজকোটে সেই একই লাইনআপে ছিল না কোনো ধার। তাহলে কী আজ সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ম্যাচে বোলিং আক্রমণে আসছে পরিবর্তন? বাংলাদেশ কোচ রাসেল ডমিঙ্গো ‘না’ বোধক জবাব দিয়েছেন, ‘ভারতের (ব্যাটিং অর্ডারের) উপরের দিকের ছয়জনের মধ্যে বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের সংখ্যা বেশি। এক ম্যাচ আগেই তাদের বিপক্ষে আমাদের অফ স্পিনাররা (আফিফ হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন) ভালো বল করেছে। কিন্তু আগের ম্যাচে তা কাজে লাগেনি দেখে সবকিছু বদলে ফেলার কোনো মানে হয় না। আমরা এমন কোনো দল হতে চাই না, যারা হারার পর অসচেতনভাবে তড়িঘড়ি করে প্রতিক্রিয়া দেখায়।’

রাজকোটে হতাশ করেন বাংলাদেশের তিন পেসার। তারপরও শিষ্যদের সামর্থ্যরে ওপর নিজের অগাধ আস্থার কথা জানিয়ে ডমিঙ্গো, ‘আমরা একদল খেলোয়াড়কে সমর্থন জুগিয়ে যেতে চাই। কেউ একটা ম্যাচ খারাপ খেলেছে বলে সে আগামী ছয় মাস খেলবে না তা হতে পারে না। এটা টি-টোয়েন্টি খেলার অংশ। আমরা বিশ্বাস করি যে যারা প্রথম দুই ম্যাচ খেলেছে তারা যথেষ্ট ভালো। কেউ একজন আমাদের বিপক্ষে খুবই ভালো খেলেছে বলে কৌশলগত অনেক পরিবর্তন করতে হবে, বিষয়টা এমন না।’

এদিকে চলতি সিরিজে বড় ইনিংস না খেলার আক্ষেপ রয়েছে ব্যাটসম্যানদের মধ্যে। তবে ব্যাপারটি নিয়ে এরইমধ্যে শিষ্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন ডমিঙ্গো। এ অবস্থা থেকে আজ বের হবে দল। আশা কোচের, ‘হ্যাঁ আমরা এটা নিয়ে কথা বলেছি। প্রথম ম্যাচে মুশফিক বড় রান করায় আমরা জিতেছি। রোহিত বড় রান করায় তারা জিতেছে। আমরা দুটো ৩০ রানের ইনিংস করেছি। কিন্তু কেউ একজন যেন ৭০-৮০ রান করতে পারে, আমাদের এটা নিশ্চিত করতে হবে।’

ভারতের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ৯টি টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে একটিতে জিতেছে টিম টাইগার্স। আজ এ সংখ্যাটিকে দুইয়ে নেওয়ার সঙ্গে প্রথমবার প্রতিবেশী দেশটির মাটি থেকে সিরিজ জিতে নিতে চাই সফরকারীরা। কিন্তু কোনোভাবেই তেমনটা হতে দিতে চায় না স্বাগতিকরা। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে রোহিত শর্মা জানিয়ে দিয়েছেন তেমনটা। রাজকোটের মতোই আজ তারা জ্বলে উঠবেন নাগপুরে। এ জন্য তাদের একাদশে একাধিক পরিবর্তনও হতে পারে। তবে এ ব্যাপারটি খোলাসা করেননি তিনি।

রোহিত শর্মা কি বলল না বলল তা নিয়ে মোটেও ভাবছে না বাংলাদেশ। বরং নিজেদের ব্যাটিং-বোলিংয়ে কীভাবে আরও ভালো করা যায়, সেটা নিয়েই কাজ করছে সবাই, যা দিয়ে আজ স্বাগতিকদের উড়িয়ে দিয়ে সিরিজ জয়ের উল্লাসে মাতবে টিম টাইগার্স। সে অপেক্ষাতেই প্রহর গুনছেন সমর্থক থেকে শুরু সবাই। তবে একটা প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে, ভারতের মাটিতে ভারতকে হারিয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা পারবে তো সিরিজ নিজেদের করে নিতে।

বাংলাদেশ-ভারত তৃতীয় টি-টোয়েন্টি

ম্যাচ শুরু সন্ধ্যা ৭:৩০

ভেন্যু: নাগপুর, ভারত

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০