# প্রথমবার আয়কর মেলার সব সেবার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট
# প্রথমবার ১২৮ স্পটে আয়কর মেলার অবস্থান, ঠিকানা, সময় উল্লেখসহ গুগল ম্যাপ নির্দেশনা
# অফিসার্স ক্লাবে আয়োজিত আয়কর মেলার ডিটেইল্ড লে-আউট
# রিটার্ন, ই-টিআইএন ও চালান ফরম, আয়কর পরিপত্র ও নির্দেশিকা, চালান কোড জানা যাবে
# অনলাইনে রিটার্ন পূরণসহ সব ফরম ডাউনলোড করা যাবে
# থাকছে অনলাইন রিটার্ন দাখিল, অনলাইনে আয়কর জমার তথ্য
# প্রতিদিন ঢাকা ছাড়াও সারাদেশের মেলার আপডেট তথ্য থাকবে
রহমত রহমান: ১৪ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে আয়কর মেলা। চলবে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত। হয়ত ব্যস্ততার কারণে কর অফিসে গিয়ে রিটার্ন ফরম আনতে ভুলে গেছেন। মেলায় গিয়ে রিটার্ন ফরম খুঁজে নেওয়া। আবার পূরণ, জমা অনেক সময়ের ব্যাপার। এ মূহুর্তে ফরম হলে বাসায় বসে নিরিবিলি পূরণ করতে পারতেন। চিন্তা নেই এক ক্লিকেই পেয়ে যাবেন আয়কর রিটার্ন ফরম। রিটার্ন ফরম করলেন, প্রয়োজন হলো চালান ফরম। দোকানে যাও, কিনে আন। তার উপর জোনাল কোড কোথায় পাবেন। তাও চিন্তা নেই, এক ক্লিকেই পেয়ে যাবে।
রিটার্ন পূরণ করতে গিয়ে পরিপত্র ও নির্দেশিকার দরকার পড়ল। চিন্তা নেই, এক ক্লিকেই পেয়ে যাবেন। ভাবলেন, প্রথমবার রিটার্ন দেবেন। কিন্তু ই-টিআইএন করা দরকার। চিন্তা নেই, এক ক্লিকেই ই-টিআইএন ফরম পেয়ে যাবেন। আবার ভাবলেন, মেলায় গিয়ে রিটার্ন পূরণ, টাকা জমা। তারপর লাইন ধরে রিটার্ন জমা দেওয়া। দরকার নেই, ঘরে বসে অনলাইনে রিটার্ন ও অনলাইনে কর জমা দিতে পারবেন এক ক্লিকেই। জানতে চাইলেন, ঢাকার কোথায় আয়কর মেলা হচ্ছে। কিভাবে সেখানে যাবেন, কোন বুথে কি সেবা পাবেন। তারও চিন্তা নেই, এক ক্লিকেই জানতে পারবেন।

এছাড়া ঢাকার বাইরে কোন আত্মীয় জানতে চাইলেন বা ঢাকার বাইরে কোন করদাতা জানতে চাইলেন ঢাকার বাইরের আয়কর মেলার তারিখ, সময়, স্থানসহ বিস্তারিত। চিন্তা নেই, এক ক্লিকেই জানতে পারবেন। প্রতিদিন ঢাকাসহ সারাদেশের মেলার আপডেট জানতে চান তাও এক ক্লিকেই জানতে পারবেন। এছাড়া আয়কর মেলায় কি কি সেবা আপনাকে দেওয়া হয়, তাও এক ক্লিকেই জানতে পারবেন। এভাবে করদাতাকে এক ক্লিকেই পূর্ণাঙ্গ করসেবা দিতে প্রথমবারের মতো (www.aykormela.gov.bd) নামে একটি ওয়েবসাইট চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

এনবিআর সূত্র জানায়, এ ওয়েবসাইট আয়কর মেলার এবারের আকর্ষণ। করসেবা আর সহজবোধ্য ও করদাতার নখদর্পনে আনতে এবং করসেবা করদাতার দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে এ ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছে। এ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে করদাতারা ‘ওয়ান স্টপ’ সেবা পাবেন। তবে করদাতারা যেন ঘরে বসে আয়কর বিবরণী পূরণ করতে পারেন, এজন্য সব ধরনের ফরম, পরিপত্র ও নির্দেশিকাসহ এ ওয়েবসাইট চালু করেছে এনবিআর। শুধু তাই নয়, এনবিআর করসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ও কর সচেতনতা তৈরি করতে প্রতিবছর সারাদেশে আয়কর মেলার আয়োজন করে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, করদাতারা মেলার অবস্থান, ঠিকানা, সময়, তারিখ জানতে পারেন না। কিন্তু এ ওয়েবসাইটে ঢাকাসহ সারাদেশের মেলার গুগল ম্যাপসহ বিস্তারিত দেয়া আছে। কোন করদাতা দেশের যেকোন জায়গা থেকে সহজেই এ ওয়েবসাইট ভিজিট করে সব করসেবা নিতে পারবেন।
ওয়েবসাইটে ক্লিকে দেখা যায়, ওয়েবসাইটের প্রথমে (About) রয়েছে। এতে আয়কর মেলার ইতিহাস ও উদ্দেশ্য জানতে পারবেন। (Layout) অংশে ঢাকার অফিসার্স ক্লাবে আয়োজিত আয়কর মেলার কোন জায়গা কি সেবা দেওয়া হবে, কিভাবে যেতে হবে তার বিস্তারিত দেখা যাবে। কোন করদাতা এ লে-আউট ভালো করে অনুসরণ করলে সহজেই সেবা পাবেন। রয়েছে-একজন করদাতা আয়কর সম্পর্কিত যেসব প্রশ্ন করতে পারেন এবং তার উত্তর কি হবে তার বিস্তারিত (Faq)। এরপর রয়েছে ভেন্যু (Venus) বা মেলার স্থান। এটি ওয়েবসাইটের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও প্রয়োজনীয় অংশ। এতে ঢাকাসহ সারাদেশের ১২৮টি মেলা স্পটের অবস্থান, ঠিকানা, সময় ও তারিখসহ গুগল ম্যাপের নির্দেশনা। গ্যালারীতে (Gallery) কিভাবে কর সচেতনতা বৃদ্ধি, করসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া যায় এবং আয়কর দিয়ে রাষ্ট্রের কিভাবে উন্নয়ন হচ্ছে সে সম্পর্কিত টিভিসি। এছাড়া রয়েছে ঢাকাসহ সারাদেশের করমেলার প্রতিদিনকার ছবি। ফরম (Forms) অংশে ব্যক্তি শ্রেণির পুরাতন ও নতুন রিটার্ন ফরম, ই-টিআইএন ফরম, চালান ফরম, জোনাল কোড, আয়কর পরিপত্র ও আয়কর নির্দেশিকা এবং প্রচারপত্র রয়েছে। যেকোন করদাতা এসব ফরম দেখার পাশাপাশি ডাউনলোডও করতে পারবেন। নিউজ (News) অংশে ঢাকাসহ সারাদেশের আয়কর মেলা সম্পর্কিত সকল নিউজ আপডেট পাওয়া যাবে। রয়েছে প্রেস কর্ণার (Press Corner)। ঢাকাসহ সারাদেশের গণমাধ্যম কর্মীদের সুবিধার জন্য এ অংশ রাখা হয়েছে। প্রতিদিন ঢাকাসহ সারাদেশের আয়কর আহরণ, সেবা প্রদান সম্পর্কিত সকল তথ্য ও ছবি এ অংশে আপলোড করা হবে।

এ বিষয়ে এনবিআর সদস্য (কর প্রশাসন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) কালিপদ হালদার শেয়ার বিজকে বলেন, করসেবা সহজ করতে মূলত এ ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছে। এটি হবে এবারের মেলার মূল আকর্ষণ। বলা যায়, করদাতাদের ওয়ান স্টপ করসেবা দেওয়ার চিন্তা থেকেই এটি চালু করা হয়েছে। একজন করদাতা ইচ্ছে করলে এক ক্লিকেই এখান থেকে সবসেবা পাবেন। মেলা আশার আগে এখান থেকে সহযোগিতা নিতে একজন করদাতার মেলার অনেক সময় সাশ্রয় হবে।
এনবিআর সূত্র জানায়, এবার ১২০টি স্থানে মেলা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে রাজধানীসহ সব বিভাগীয় শহরে সাত দিন, জেলা শহরগুলোতে চার দিন, ৪৮ উপজেলায় দুই দিন এবং আট উপজেলায় দিনব্যাপী করমেলার আয়োজন করা হবে। এবারের কর মেলার স্লোগান ‘সবাই মিলে দেব কর, দেশ হবে স্বনির্ভর।’

রাজধানীতে মেলা হবে বেইলি রোডের অফিসার্স ক্লাব প্রাঙ্গণে। ঢাকার মেলায় এবার করদাতাদের সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে। গতবছর হেল্পডেক্স ৩৩টি হলেও এবার থাকবে ৫৩টি। ই-টিআইএন জোন গতবছর ছিল এক হাজার বর্গফুট, এবার হবে দুই হাজার ২৫০ বর্গফুট। রিটার্ন বুথ গতবছর ছিল ৪৯টি, এবার থাকবে ৫২টি। রিটার্ন পূরণের স্থান দুই হাজার ৫০০ বর্গফুট থেকে বৃদ্ধি করে সাত হাজার বর্গফুট করা হয়েছে। বেসিক ব্যাংক বুথ তিনটি থেকে বৃদ্ধি করে চারটি, এটিএম বুথ একটি থেকে বৃদ্ধি করে দুটি করা হয়েছে। মিডিয়া সেন্টার ও মেডিক্যাল বুথের জায়গা বৃদ্ধি করা হয়েছে।