ক্রীড়া প্রতিবেদক : রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, চেতেশ্বর পূজারাÑটেস্টে ভারতের তিন ব্যাটিং স্তম্ভ। কিন্তু ইন্দোর টেস্টের প্রথম ইনিংসে তারা বাংলাদেশকে ভোগাতে পারেনি। তবে সেই কাজটি করেছেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল। একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলেছেন দুর্দান্ত। শুধু তা-ই নয় সাত টেস্টের ক্যারিয়ারে এ ডানহাতি গতকালই দ্বিতীয়বারের মতো পেয়েছেন ডাবল সেঞ্চুরির স্বাদ। এজন্য অবশ্য দায়টা পড়েছে ইমরুল কায়েসের ওপর। তিনি যে গত পরশু সিøপে ভারত ওপেনারের সহজ ক্যাচ ছেড়েছিলেন। তার মূল্য যে পুরো দলকে এভাবে দিতে হবে, হয়তো সে সময় বুঝতে পারেননি মেহেরপুরের এ ক্রিকেটার।
গতকাল সকালেও আরেকবার আগারওয়ালকে ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। সে সময় তিনি ৮২ রানে ব্যাট করছিলেন। মেহেদি হাসান মিরাজের বলে এলবিডব্লিয়ের আবেদনে আম্পায়ার সাড়াও দিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত ভারত ওপেনার টিকে যান রিভিউ নিয়ে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাননি তিনি। ১৮৩ বলে স্পর্শ করেন সেঞ্চুরি। পরে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি ছুঁতে তিনি বল খেলেন ৩০৩টি। শেষ পর্যন্ত মিরাজের বলে আবু জায়েদ রাহীর হাতে ক্যাচ দিয়ে এ ডানহাতি ফেরেন ৩৩০ বলে ২৪৩ রান করে। তার আগে অবশ্য টাইগারদের যা সর্বনাশ করার করে দেন তিনি অজিঙ্কা রাহানে আর রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে দুর্দান্ত দুটি জুটি গড়ে।
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের জবাবে গতকাল ভারত দিন শেষ করেছে ৬ উইকেটে ৪৯৩ রানে। তার মানে স্বাগতিকরা লিড নিয়েছে ৩৪৩ রানের। উমেশ যাদব ১০ বলে অপরাজিত ২৫ রানে। অন্য প্রান্তে ৬০ রানে অপরাজিত রবীন্দ্র জাদেজা।
গতকাল সকাল থেকে বল হাতে ইন্দোরের উইকেট থেকে বেশ সুবিধা পাচ্ছিলেন আবু জায়েদ রাহী। সে ধারাবাহিকতায় এ ডানহাতি দ্রুতই চেতেশ্বর পূজারাকে (৫৪) ফিরিয়ে দেন। স্টাম্পের বাইরে করা বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে সিøপে অতিরিক্ত খেলোয়াড় সাইফ হাসানের হাতে ধরা পড়েন তিনি। কিছুক্ষণ পরই এ ডানহাতি পেসার তুলে নেন বিরাট কোহলির উইকেট। শুরুতে অবশ্য এলবিডব্লিউর আবেদন নাকচ করে দিয়েছিলেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়ে সিদ্ধান্তটি ভুল প্রমাণ করে ভারত অধিনায়ককে ড্রেসিং রুমে ফেরায় বাংলাদেশ। কিন্তু তারপর থেকে ঘাম ছুটে যায় টাইগারদের। চতুর্থ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ১৮৫ রানের জুটি গড়ে ভারতকে রানপাহাড়ে তোলার আয়োজন চূড়ান্ত করেন আগারওয়াল-আজিঙ্কা রাহানের চতুর্থ উইকেট জুটি। শেষ পর্যন্ত চা বিরতির পরই অজিঙ্কা রাহানেকে (৮৬) তুলে নিয়ে বিপজ্জনক জুটি ভাঙেন আবু জায়েদ। তবে রবীন্দ্র জাদেজাকে নিয়ে আরেকটি জুটি অনায়াসেই গড়ে তুলেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল। এর মধ্যে এ ডানহাতি মেহেদি হাসান মিরাজকে ছক্কায় উড়িয়ে তুলে নেন ডাবল সেঞ্চুরি। সে সময় ব্যাট উঁচিয়ে দর্শকদের অভিনন্দনের জবাব দেন তিনি। ডেসিং রুম থেকে অবশ্য বিরাট কোহলি সতীর্থের উদ্দেশে হাত নাড়িয়ে বোঝাচ্ছিলেন, ৩০০ করে আয়। শেষ পর্যন্ত আয়ারওয়াল অধিনায়কের চাওয়াটা পূরণ করতে পারেননি। ২৪৩ রানে তিনি থেমেছেন মিরাজের বলে রাহীর হাতে ক্যাচ দিয়ে। কিছুক্ষণ পরই এবাদত ফেরান ঋদ্ধিমান সাহাকে। তারপরও ভারতের রানের চাকা সচল রাখেন জাদেজা। শেষ বিকালে ঝড় তোলেন উমেশ যাদব। যে কারণে লিডটা চলে গেছে বাংলাদেশের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। তার মানে ইন্দোর টেস্টে ইনিংস পরাজয়ের খুব কাছে টিম টাইগার্স। সেটা হতে পারে আজই। ক্রিকেট বিশ্লেষকরা কিন্তু আগে থেকে আশঙ্কা করছিলেন এমন কিছুরই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৫০
ভারত ১ম ইনিংস: ১১৪ ওভারে ৪৯৩/৬ (আগের দিন ৮৬/১) (মায়াঙ্ক ২৪৩, রোহিত ৬, পুজারা ৫৪, কোহলি ০, রাহানে ৮৬, জাদেজা ৬০*, ঋদ্ধিমান ১২, উমেশ ২৫*; ইবাদত ৩১-৫-১১৫-১, আবু জায়েদ ২৫-৩-১০৮-৪, তাইজুল ২৮-৪-১২০-০, মিরাজ ২৭-০-১২৫-১, মাহমুদউল্লাহ ৩-০-২৪-০)।