নিজস্ব প্রতিবেদক: পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের (পিজিসিএল) সঙ্গে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানি জিবিবি পাওয়ার লিমিটেডের মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। এছাড়া প্রায় ১৫ কোটি টাকার দাবি পরিশোধ করেছে জিবিবি পাওয়ার। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, পিজিসিএলের সঙ্গে একটি সালিশি ট্রাইব্যুনালে মামলা চলছিল জিবিবি পাওয়ারের। আর ওই মামলার নিষ্পত্তি বাবদ জিবিবি পাওয়ার কোম্পানিটির ১৪ কোটি ৭০ লাখ ৫২ হাজার ৮০ টাকার দাবি পরিশোধ করেছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) অবগতিতে সালিশি ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে মামলাটি নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এর আগে পিজিসিএল ও জিবিবি পাওয়ারের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি সম্পর্কে ২০১৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ডিএসইতে একটি সংবাদ প্রকাশ করে। আর গত ২৩ সেপ্টেম্বর পিজিসিএলকে মামলার টাকা পরিশোধ করেছে জিবিবি পাওয়ার। গত ৭ নভেম্বর পিজিসিএল বিষয়টি চিঠির মাধ্যমে নিশ্চিত করেছে। তবে উল্লিখিত টাকা পরিশোধের কারণে জিবিবি পাওয়ারের নগদ অর্থপ্রবাহে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছে।
২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে কোম্পানিটি ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা করেছে। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭৬ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ২০ টাকা ৩০ পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে এক টাকা চার পয়সা। ঘোষিত লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীদের সম্মতিক্রমে অনুমোদনের জন্য আগামী ১৮ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় বগুড়ার সিলিমপুরে অবস্থিত হোটেলে নাজ গার্ডেনের কনফারেন্স হলে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ ডিসেম্বর।
এছাড়া চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর, ২০১৯) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কোম্পানিটি। প্রথম প্রান্তিকে ইপিএস হয়েছে ৩০ পয়সা, আগের বছর একই সময় ছিল ২৬ পয়সা। এছাড়া ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরে শেয়ারপ্রতি এনএভি দাঁড়িয়েছে ২০ টাকা ৫৯ পয়সা, যা ২০১৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরে ছিল ১৯ টাকা ৮০ পয়সা। আর প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ দাঁড়িয়েছে ২৭ পয়সা (লোকসান), যা আগের বছর একই সময় ১৯ পয়সা লোকসান ছিল।
এদিকে গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারদর অপরিবর্তিত থেকে প্রতিটি সর্বশেষ ১৪ টাকা ৩০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল ১৪ টাকা ৩০ পয়সা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনি¤œ ১৪ টাকা ১০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ১৪ টাকা ৮০ পয়সায় হাতবদল হয়। দিনজুড়ে কোম্পানিটির চার লাখ ৫০ হাজার ২৬২টি শেয়ার মোট ৪৩২ বার হাতবদল হয়। যার বাজারদর ৬৪ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। গত এক বছরে কোম্পানির শেয়ারদর আট টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১৪ টাকা ৮০ পয়সায় ওঠানামা করে।
এর আগে কোম্পানিটি ২০১৭ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে বিনিয়োগকারীদের পাঁচ শতাংশ নগদ ও পাঁচ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। ওই বছর কোম্পানির ইপিএস হয়েছিল এক টাকা ১৫ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) ছিল ২১ টাকা ছয় পয়সা। আর মুনাফা হয়েছিল ১১ কোটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
কোম্পানিটি ২০১২ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘জেড’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। ২০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ১০১ কোটি ৮০ লাখ ৪০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ১০ কোটি ৪৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা। কোম্পানিটির ১০ কোটি ১৮ লাখ তিন হাজার ৫৪৮টি শেয়ার রয়েছে। ডিএসই থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্যমতে, কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে ৩২ দশমিক শূন্য এক শতাংশ শেয়ার, প্রাতিষ্ঠানিক ১৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৫৩ দশমিক ৪১ শতাংশ শেয়ার।