গোলাপি বলে বাংলাদেশের দুঃস্বপ্নের ব্যাটিং

ধক্রীড়া প্রতিবেদক : কয়েক দিন ধরেই উত্তাল কলকাতা। শহরের এমাথা থেকে ওমাথা কাঁপছে গোলাপি জ্বরে! গতকাল তো সকাল থেকেই শতাব্দীপ্রাচীন ইডেন গার্ডেনে মেলে অন্যরকম এক আবহাওয়া, যা দেখে মনে হয়েছে এখানে টেস্ট নয়, যেন টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দেখতে হাজির হয়েছেন ৭০ হাজার দর্শক! কিন্তু দিন শেষে তাদের মন ভরাতে পারেনি বাংলাদেশের ব্যাটিং। নিজেদের প্রথম গোলাপি টেস্ট মিশনে যে দুঃস্বপ্নের ব্যাটিং উপহার দিয়েছেন মুমিনুল হক-মুশফিকুর রহিমরা, তাতে এ টেস্টের প্রথম দিনেই ভারতের চেয়ে বেশ পেছনে পড়েছে মুমিনুল হকের দল। 

ইডেন গার্ডেনে গতকাল বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে যায় মাত্র ৩০.৩ ওভারে। টেস্টে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করে স্থায়িত্বের দিক থেকে এটি মুমিনুল হকের দলের চতুর্থ সর্বনিম্ন ইনিংস। 

গতকাল শুরু থেকেই ধুঁকতে থাকে বাংলাদেশের ব্যাটিং, যে কারণে কোনো ব্যাটসম্যানই যেতে পারেননি ত্রিশের ঘর পর্যন্ত। দুই অঙ্ক ছুঁয়েছেন কেবল তিন ব্যাটসম্যান (সাদমান ২৯, লিটন ২৬, নাঈম ১৯)।

নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে প্রথমবার গোলাপি বলে দিন-রাতের টেস্ট। স্বাভাবিকভাবে রোমাঞ্চিত ছিলেন মুমিনুল হকরা, যে কারণে গতকাল টস জিতে আগে ব্যাটিং বেছে নিয়েছিলেন তারা। উদ্দেশ্যে ছিল ভারতের সামনে চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করানো। কিন্তু এদিন শুরু থেকেই ভারতীয় পেসে খাবি খেতে থাকেন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা। ইশান্ত শর্মার বলে দ্রুত ফিরে যাওয়ার শুরুটা করেন ওপেনার ইমরুল কায়েস। পরে তিন বলের মধ্যে মুমিনুল ও মিথুন ফিরে যান উমেশ যাদবের বলে। দলের এমন বিপর্যয়ে টাইগারভক্তরা তাকিয়ে ছিলেন মুশফিকুর রহিমের দিকে। কিন্তু এ ডানহাতি তাদের করেন হতাশ। মোহাম্মদ শামির বল ব্যাট-প্যাডে অনেক ফাঁক রেখে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন শূন্য রানে। আগের টেস্টে ব্যর্থ মাহমুদউল্লাহ পারেননি এবারও। ইশান্তের বলে ফেরেন উইকেটের পেছনে ঋদ্ধিমান সাহার দুর্দান্ত এক ক্যাচে।

সতীর্থের আসা-যাওয়ার মাঝে একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন সাদমান ইসলাম। কিন্তু গতকাল এ তরুণ উমেশের বলে ২৯ রান করে ফেরেন ঋদ্ধিমানকে ক্যাচ দিয়ে। এরপর অবশ্য ২২ গজে নেমে দারুণ শট খেলছিলেন লিটন কুমার দাস। একপর্যায়ে এ ডানহাতি শামির বাউন্সারে হেলমেটে আঘাত পান। শুরুতে তেমন কিছু মনে হয়নি তার। তবে পরের ওভারে অস্বস্তি বোধ করায় মাঠ ছাড়েন এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। এ ম্যাচে আর খেলা হচ্ছে না ২৭ বলে ৫ চারে ২৪ রান করা এ তরুণের।

টেস্টের নতুন সাবস্টিটিউট নিয়মে লিটনের জায়গায় লাঞ্চের পর ব্যাটিংয়ে নামেন মিরাজ। গোলাপি বলের টেস্টে পরিবর্তিত ব্যাটসম্যানও যে দেখল বাংলাদেশ। তবে টেস্ট একাদশে না থেকে নতুন আইনে ম্যাচের অংশ হয়ে যাওয়া মিরাজ (৮) নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। ইশান্তকে ফ্লিক করতে গিয়ে মিড উইকেটে চেতেশ্বর

পূজারাকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। পরে নাঈমকে বোল্ড করে ইনিংসে দশমবারের মতো পাঁচ উইকেট পান এই পেসার। শেষ ব্যাটসম্যান আবু জায়েদকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে ১০৬ রানে গুটিয়ে দেন শামি।

বলহাতে বাংলাদেশের শুরুতেই উইকেট এনে দেন আল আমিন। সিøপে মিরাজের ক্যাচে তিনি ফেরান মায়াঙ্ক আগারওয়ালকে। কিছুক্ষণ পরই রোহিত শর্মাকে ফেরার পারত বাংলাদেশ। কিন্তু আবু জায়েদের বলে ফাইন লেগে সহজ ক্যাচ ছাড়েন আল আমিন। তারপরও ভারত ওপেনার টেকেনি বেশিক্ষণ। তাকে এলবিডব্লিয়ের ফাঁদে ফেলেন এবাদত হোসেন। এর পরের গল্প শুধুই চেতেশ্বর পূজারা আর বিরাট কোহলি। মূলত তাদের ব্যাটেই ইডেন টেস্টের প্রথম দিনে বেশ পেছনে পড়েছে টিম বাংলাদেশ। 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০