নিজস্ব প্রতিবেদক: ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে অনলাইনে বিদেশ থেকে পণ্য বা সেবা কেনার জন্য ব্যাংকের কাছ থেকে আগে ছাড়পত্র নেওয়ার নির্দেশনা থেকে সরে এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মূলত সমালোচনার মুখেই কড়াকড়ি শিথিল করল ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ গতকাল এক সার্কুলারে অনলাইনে লেনদেন সহজ করতে তাদের এ সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড দিয়ে অনলাইনে লেনদেনের আগে গ্রাহককে আর ‘অনলাইন ট্রানজেকশন অথরাইজেশন ফরম (ওটিএএফ), পূরণ করে জমা দিতে হবে না। তবে কেউ যাতে বাংলাদেশ থেকে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে অনলাইন ক্যাসিনোতে বা জুয়ায় টাকা খরচ করতে না পারে, বিদেশি স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করতে না পারে, ক্রিপ্টো কারেন্সি বা লটারি টিকিট কিনতে না পারে, কিংবা অবৈধ কোনো সেবা বা পণ্য যাতে কিনতে না পারেÑব্যাংকগুলোকে সেদিকে নজর রাখতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর আগে বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ থেকে গত ১৪ নভেম্বর এক সার্কুলারে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড দিয়ে অনলাইনে লেনদেনের আগে ওটিএএফ চালুর কথা জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড দিয়ে অনলাইনে বিদেশি পণ্য বা সেবা কেনার আগে ওই ফরম পূরণ করে মোবাইল অ্যাপ বা ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বা হার্ড কপি ব্যাংকে জমা দিতে হবে। ব্যাংক যাচাই-বাছাই করে অসংগতি না পেলে ক্রেডিট কার্ডকে শুধু সেই লেনদেনের জন্য সক্রিয় করে দেবে। একইভাবে ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া অনলাইনে ডলারের কেনাকাটায় কার্ড কাজ করবে না।
এমনকি দেশে উৎপাদিত কোনো পণ্য কেনা বা সেবার বিল পরিশোধেও আন্তর্জাতিক কার্ড ব্যবহার করা যাবে না। কেবল বিদেশ থেকে কোনো পণ্য কেনা বা সেবার বিল অনলাইনে পরিশোধের জন্য আন্তর্জাতিক কার্ড ব্যবহার করা যাবে বলেও ওই সার্কুলারে জানানো হয়।
নতুন ওই নিয়মের কারণে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ব্যবসায়ীসহ সাধারণ গ্রাহক ভোগান্তিতে পড়েন। যে কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই নির্দেশনা নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করে এমন গুরুতর সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হয়নি বলেও ব্যাংকাররা মত দেন। এ নিয়ে টানাপড়েনের মুখে আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলো বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর আগে, ২০১৬ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি অপর এক সার্কুলারে ‘আন্তর্জাতিক পণ্য কেনাকাটায় ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারী গ্রাহকদের এককভাবে কোনো পণ্য বা সেবামূল্যের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০০ ডলার পর্যন্ত পরিশোধের সুযোগ দেয়’ কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ‘তবে তা কোনো অবস্থাতেই বছরে এক হাজার ডলারের বেশি হবে না’ বলেও ওই সার্কুলারে জানানো হয়।