স্বর্ণজয়ী দীপু চাকমার গল্প

ক্রীড়া ডেস্ক: সেনাবাহিনীতে চাকরি করা অবস্থায় ২০০১ সাল থেকে তায়কোয়ান্ডোতে খেলছেন দীপু চাকমা। বড় ভাই তাকে যথেষ্ট উৎসাহ দিয়ে থাকেন। এরই মধ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আসরে একাধিক পদক জিতেছেন তিনি। তবে এ অ্যাথলেটের এবার ইচ্ছা ছিল এসএ গেমসে বাংলাদেশকে স্বর্ণ জেতানো। শেষ পর্যন্ত গতকালই তার আশা পূরণ হয়েছে। যে কারণে দারুণ উচ্ছ্বসিত তিনি। 

গতকাল কাঠমান্ডু এসএ গেমসে তায়কোয়ান্ডোতে দেশের হয়ে প্রথম স্বর্ণপদকটি  জেতেন দীপু চাকমা। তায়কোয়ান্ডোর ২৯ অথবা এর বেশি ওজনের প্রতিযোগীদের ইভেন্ট পুমসের মাধ্যমেই এবার কাঠমান্ডুতে প্রথমবারের মতো বাজল দেশের জাতীয় সংগীত।

এসএ গেমসে এবারই প্রথম অংশ নিয়ে স্বর্ণ জিতেছেন দীপু। স্বাভাবিকভাবেই তার উচ্ছ্বাসটা একটু বেশিই। গতকাল তাই নিজের প্রতিক্রিয়া দেন এভাবে, ‘২০০৫ সাল থেকে সেনাবাহিনীতে কাজ করি। ২০০৬ সালে আমি যখন ব্যাটেলিয়নে ছিলাম, তখন পত্রিকায় দেখেছিলাম তায়কোয়ান্ডোতে সেনাবাহিনীর মিজানুর রহমান স্বর্ণপদক জিতেছেন। আমি তায়কোয়ান্ডোর সঙ্গে জড়িত সেই ২০০১ সাল থেকে। সেনাবাহিনী তায়কোয়ান্ডো দলে আমি সুযোগ পাই ২০০৮ সালে। তখন থেকেই স্বপ্নের শুরু। আমাকেও একদিন স্বর্ণপদক জিততে হবে! নিজের ভেতর একটা অনুপ্রেরণা ছিল যে, বাংলাদেশের পতাকাকে এমন বড় কোনো আসরে আমি যেন মেলে ধরতে পারি, ওড়াতে পারি। পোডিয়ামে আমি পতাকা নিয়ে থাকব। আর জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা…’ বাজছেÑএ অনুভূতিটাই আসলে অন্যরকম কিছু। আজ আমার সে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আসলে এ অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। সত্যিকার অর্থেই এ আনন্দ-অনুভূতি তুলনাহীন। মিজান স্যার, রানা স্যার ও ফেডারেশনের সবাই আমাদের অনেক সহায়তা করেছেন। আমাদের প্রেরণা জুগিয়েছেন। সবার কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে দেশকে কিছু দেওয়ার একটা চেষ্টা করেছি আমি। সফল হয়েছিÑএটাই আমার আনন্দ। আমি এখনও সেই আনন্দের ঘোরেই আছি!’

এসএ গেমসের শুরুতে স্বর্ণ জয়ের এ সাফল্য অন্যান্য ইভেন্টেও বাংলাদেশের প্রতিযোগীদের অনুপ্রেরণা জোগাবে বলে বিশ্বাস দীপুর, ‘শুরুতে ভালো ফল হলে পরের ইভেন্টে প্রতিযোগীদের মানসিকতায় সেটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। আশা করছি আমার এ সাফল্য অন্য ইভেন্টে বাংলাদেশের প্রতিযোগীদের জন্যও এক বড় প্রেরণা, উদ্দীপনা জোগাবে। আমারও একটি ইভেন্ট আছে। সেখানেও আমি স্বর্ণের জন্যই লড়ব।’

গত নভেম্বরে কোরিয়ান কোচ মিন হাকও দায়িত্ব নেন বাংলাদেশ তায়কোয়ান্ডো দলের। তার দিকনির্দেশনায় মূলত দীপুর খেলায় উন্নতি হয়। এবারের গেমসে স্বর্ণ জয়ের ব্যাপারেও ভীষণ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন তিনি, ‘আমি এর আগে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গেমসে সোনা জিতেছি। কিন্তু এবার এসএ গেমসে আসার আগে আত্মবিশ্বাসী ছিলাম।’

এর আগে গতকালই ১৩তম এসএ গেমস থেকে বাংলাদেশকে প্রথম পদক জেতান হোমায়রা আক্তার অন্তরা। তিনি কারাতের কাতা ইভেন্টে তৃতীয় হয়ে নিজের করে নেন তামা। এদিকে ছেলেদের ইনডিভিজুয়াল কাতায় হাসান খান সান পারেননি আলো ছড়াতে। তিনিও পেয়েছেন তামার পদক। তবে স্বর্ণের অপেক্ষাটা ছিলই। সে অপেক্ষারই অবসান পরে ঘটান দীপু চাকমা।

তায়কোয়ান্ডোয় এসএ গেমসে ২০১০ সালে দুটি স্বর্ণপদক জিতেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ২০১৬ সালের গেমসে তায়কোয়ান্ডো শেষ করে বাংলাদেশ বড় ব্যর্থতা দিয়ে। তবে এবার এ ইভেন্টে সাফল্য এসেছে শুরুতেই। 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০