নিজস্ব প্রতিবেদক: বস্ত্র খাতের কোম্পানি কুইনসাউথ টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ ১৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে দুটি গ্যাস জেনারেটর কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ১৫০০ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি গ্যাস জেনারেটর কিনবে। জেনারেটর কেনা, স্থাপন এবং অন্যান্য খরচসহ প্রতিটি জেনারেটরের জন্য আট লাখ মার্কিন ডলার বা বাংলাদেশি ছয় কোটি ৮০ লাখ টাকা খরচ হবে। অর্থাৎ দুটি জেনারেটর স্থাপনের জন্য মোট ১৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয় হবে। আর এ জেনারেটর স্থাপনের মাধ্যমে কোম্পানিটি প্রতি মাসে ৪৪ হাজার মার্কিন ডলার বা ৩৭ লাখ টাকা সঞ্চয় হবে। এতে করে কুইন সাউথ টেক্সটাইল প্রতি বছর আনুমানিক সাড়ে চার কোটি টাকা করপরবর্তী মুনাফা বাড়বে।
এদিকে সম্প্রতি বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) সময় ও স্থান নির্ধারণ করেছে কুইন সাউথ টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড। কোম্পানিটির ১৭তম এজিএম আগামী ২২ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর সাভারে অবস্থিত সাভার গলফ ক্লাবে অনুষ্ঠিত হবে।
কোম্পানিটি ৩০ জুন ২০১৯ সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য আট শতাংশ নগদ (উদ্যোক্তা বা পরিচালক ব্যতীত) ও ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ (সব বিনিয়োগকারীদের জন্য) ঘোষণা করেছে। উল্লেখ্য, কোম্পানিটির পাঁচ কোটি ৮৬ লাখ ৪৫ হাজার ৪০০ শেয়ার ধারণ করছে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা বা পরিচালকরা আর পাঁচ কোটি ১৫ লাখ ১৯ হাজার ৬০০ শেয়ার ধারণ করছে বিদেশি ও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। এ হিসাবে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মোট চার কোটি ১২ লাখ ১৫ হাজার ৬৮০ টাকা লভ্যাংশ হিসেবে দেওয়া হবে। ব্যবসার সম্প্রসারণের পাশাপাশি চলতি মূলধন জোগানের লক্ষ্যে সঞ্চিত আয় মূলধন হিসেবে ব্যবহার করার জন্য বোনাস লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ। আর এ বোনাস শেয়ার পুঞ্জীভূত মুনাফা থেকে দেওয়া হবে। এছাড়া কোম্পানির ক্যাপিটাল রিজার্ভ কিংবা রিভ্যালুয়েশন রিজার্ভ অথবা আন-রিয়েলাইজড গেইন অথবা পরিশোধিত মূলধন কমিয়ে অথবা এমন কোনো উৎস থেকে এ বোনাস দেওয়া হবে না, যার কারণে ডিভিডেন্ড পরবর্তী রিটেইনড আর্নিংস নেগেটিভ অথবা ডেবিট ব্যালেন্স হয়।
আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে এক টাকা ৮১ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১৭ টাকা ৬২ পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ৪৭ পয়সা। ঘোষিত লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীদের সম্মতিক্রমে অনুমোদনের জন্য আগামী ২২ ডিসেম্বর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে কোম্পানিটি ২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য সাত শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ও ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছে। ওই সময় ইপিএস হয়েছিল এক টাকা ৯৬ পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য ছিল ১৭ টাকা ৭৩ পয়সা। ২০১৮ সালে মোট মুনাফা করে ১৭ কোটি ৭১ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
এদিকে ডিএসইতে গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারদর পাঁচ দশমিক ৭৩ শতাংশ বা এক টাকা ৫০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ২৭ টাকা ৭০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ২৭ টাকা। দিনজুড়ে এক লাখ ৯২ হাজার ৫১২টি শেয়ার ৩৪০ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ৫০ লাখ ৮২ হাজার টাকা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনি¤œ ২৫ টাকা ৪০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ২৭ টাকা ৭০ পয়সায় হাতবদল হয়। গত এক বছরে শেয়ারদর ২২ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ৪৭ টাকা ৮০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে।
কোম্পানিটি ২০১৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে এ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। ২০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ১১০ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৬৭ কোটি ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
কোম্পানিটির মোট ১১ কোটি এক লাখ ৬৫ হাজার শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৫৩ দশমিক ২৩ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ১৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ, বিদেশি ১৬ দশমিক ৮১ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে রয়েছে ১৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ শেয়ার।