দেশের শীর্ষস্থানীয় তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি ইজেনারেশন এবং মাইক্রোসফট যৌথভাবে ‘ক্রিয়েটিং বাংলাদেশি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিজ বাই বিল্ডিং মডার্ন ওয়ার্কপ্লেস’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করেছে। গত সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সেখানে ডেটা, শক্তিশালী মেট্রিক্স এবং অ্যানালিটিকাল ট্যুলস, উৎপাদনশীলতা বাড়ানো, কর্মীদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি এবং প্রক্রিয়ার প্রবাহের মাধ্যমে কর্মক্ষেত্রের অন্তর্দৃষ্টি তৈরি করে আন্তর্জাতিক কোম্পানি তৈরিতে কৌশল নির্ধারণের বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এখানে ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জাতীয় ভিশন বাস্তবায়নে বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো তাদের বিদ্যমান কৌশল সম্পর্কে আলোচনা করে। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত বাংলাদেশের দুই দশমিক ছয় ট্রিলিয়ন ডলার জিডিপি এবং ৭০০ বিলিয়ন ডলার এর বেশি রফতানি বাজারে প্রবেশ এর জন্য প্রস্তুত হওয়ার প্রত্যাশা ও আশাবাদী মনোভাব তুলে ধরেন। বিভিন্ন খাতের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান কারিগরি কর্মকর্তা (সিটিও) এবং আইটি বিভাগের প্রধানরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
ইনেজারেশন চেয়ারম্যান শামীম আহসানের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতীম দেব। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন একে খান অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরান বকর, মাইক্রোসফটের দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া মার্কেটের মার্কেটিং অ্যান্ড অপারেশন ডিরেক্টর জাইদ আলকাধি, ইজেনারেশন গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান এসএম আসরাফুল ইসলাম, সহজের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মালিহা কাদির, গ্রামীণফোনের ডেপুটি সিইও ইয়াসির আজমান, বুয়েটের সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোস্তফা আকবর, এফবিসিসিআই পরিচালক ও মিনিস্টার গ্রুপের চেয়ারম্যান রাজ্জাক খান, এমজিআইয়ের সিনিয়র নির্বাহী পরিচালক তাইফ বিন ইউসুফ, ইফাদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক ও কেএসআরএমের ডেপুটি ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান এবং ইও বাংলাদেশের সভাপতি ও আমান গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান তাহসিন আমান।
শামীম আহসান বলেন, বিশ্বব্যাপী যেসব কোম্পানি ইতোমধ্যেই প্রযুক্তির সম্ভাবনা অনুধাবন করতে পেরেছে তারা ডিজিটাল রূপান্তর কৌশল বাস্তবায়নের মাধ্যমে ব্যবসাকে দ্রুত সম্প্রসারণ করতে এবং বড় ধরনের লাভজনক অবস্থানে পৌঁছাতে পারছে। ২০৪১ সালে রূপকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশকে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে বাংলাদেশে একই ধরনের বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং অবশ্যই বহুজাতিক কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন।
পার্থপ্রতীম দেব বলেন, স্থানীয় কোম্পানিকে আরও প্রতিযোগিতাপূর্ণ এবং প্রযুক্তিবান্ধব হিসেবে তৈরি করতে মাইক্রোসফটসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক কোম্পানির সঙ্গে ইজেনারেশনের মতো কোম্পানির অংশীদারিত্বকে আমি সাধুবাদ জানাই। সরকার সবসময় প্রযুক্তির অগ্রযাত্রাকে স্বাগত জানায়, যা আমাদের স্থানীয় কোম্পানি এবং অর্থনীতিকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
মাইক্রোসফটের পরিচালক জাইদ আলকাধি বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের এ যুগে প্রত্যেক সিএক্সও বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে সম্পর্কিত থাকতে এবং ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান। আর সেটি করতে কোম্পানিকে ডিজিটাল হতে হবে এবং কর্মক্ষমতা প্রসারণে ক্লাউডের মতো সমাধান গ্রহণ করতে হবে।
মাইক্রোসফট এবং আইডিসি এশিয়া প্যাসিফিক প্রকাশিত সাম্প্রতিক তথ্যে জানা গেছে, যেসব কোম্পানি ডিজিটাল রূপান্তর করতে পেরেছে সেসব ব্যবসায় ২০২০ সালে ৭০ শতাংশের অধিক গ্রাহক অধিগ্রহণ প্রত্যাশা করছে। আন্তর্জাতিক জরিপে দেখা যাচ্ছে, প্রায় ৫০ শতাংশ আন্তর্জাতিক কোম্পানি তাদের করপোরেট কৌশলের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও ব্যবসায় উন্নয়নে ডিজিটাল রূপান্তরসহ আইটি অবকাঠামোতে প্রচুর পরিমাণে বিনিয়োগ করা শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক সিএক্সওরা ডিজিটাল মডার্ন ওয়ার্কপ্লেস ভিশন বাস্তবায়ন করছে, যা বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন এবং টেকসই অর্থনীতির ক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে যাবে। বিজ্ঞপ্তি