স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হবে: অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (এসকাপ) এশিয়া-প্যাসিফিক ইনফরমেশন সুপার হাইওয়ের মাধ্যমে এ অঞ্চলের দেশগুলোকে ট্রান্স এশিয়ান রেললাইন বরাবর ফাইবার অপটিক কেব্ল দিয়ে সংযুক্ত করে স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে।

গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে মন্ত্রীর নিজ দপ্তরে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও এসকাপের নির্বাহী সচিব আরমিদা সালসিয়াহ আলিসজাহবানা অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন।

বৈঠকে এশিয়া-প্যাসিফিক ইনফরমেশন সুপার হাইওয়ে, মানবসম্পদের দক্ষতা বৃদ্ধি, যোগাযোগ, বাণিজ্য সম্প্রসারণ প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

অর্থমন্ত্রী বলেন, এসডিজির উদ্দেশ্য পূরণে সুস্বাস্থ্য, গুণগত শিক্ষা, উদ্ভাবন, স্মার্ট সিটির মতো লক্ষ্য অর্জনে ইনক্লুসিভ ইন্টারনেট গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। তাই এসকাপের সদস্যভুক্ত দেশগুলোকে এশিয়ান-প্যাসিফিক ইনফরমেশন সুপার হাইওয়েতে যুক্ত করতে পারলে ফলপ্রসূ হবে। তিনি বলেন, এসকাপের নির্বাহী সচিব এসব বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করে যে কোনো প্রয়োজনে তারা পাশে থাকবেন বলে আশস্ত করেন এসকাপ নির্বাহী।

আরমিদা সালসিয়াহ বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন লক্ষণীয়। অর্থনৈতিক গতিশীলতার কারণে বাংলাদেশ গত বছর স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে মাপকাঠি অর্জনে সক্ষম হয়েছে। এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণে সহায়তার অংশ হিসেবে উন্নয়ন এজেন্ডা অর্থায়নের এ সুযোগ নিতে এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এসকাপ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এ সময় অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের অগ্রগতি সম্পর্কে বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় যদি কোনো দেশ অংশগ্রহণ করতে চায়, তাহলে তাদের আমরা স্বাগত জানাব। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ক্রমাগতভাবে অর্থনৈতিক খাতে উন্নতি করে চলেছে। গত অর্থবছরে আমরা আট দশমিক ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। চলতি অর্থবছরেই আমরা আট দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে আট দশমিক ৩০ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রত্যাশা করছি, যা ২০২৪ সাল নাগাদ দাঁড়াবে ১০ শতাংশ।

তিনি বলেন, বিশ্বে যে কয়েকটি দেশের রপ্তানি আয় খুব দ্রুত বাড়ছে, তার একটি বাংলাদেশ। আমাদের গড় আয়ু বেড়েছে, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের হার অনেক কমেছে। শিক্ষাব্যবস্থায় যুগোপযোগী করতে ঢেলে সাজানো হচ্ছে, গ্রাম ও শহরের বৈষম্য কমিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসংস্থানের প্রতি জোর দেওয়া হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ সুন্দর এবং অপার সম্ভাবনার দেশ। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে ভালো বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ এবং আকর্ষণীয় প্রণোদনার সুযোগ গ্রহণের মাধ্যমে অধিকহারে মুনাফার সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশে। বর্তমানে বাংলাদেশে জনমিতিক লভ্যাংশের সুযোগ বিদ্যমান। আগামী ২০৬১ সাল পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে।

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, বিশ্ব আজ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে হুমকির সম্মুখীন। জলবায়ু পরিবর্তন থেকে উদ্ভূত নানা প্রভাবের মুখোমুখি হয়ে বিশ্বের ভবিষ্যৎ হুমকির মধ্যে রয়েছে। জলবায়ু দূষণে বাংলাদেশের কোনো ভূমিকা না থাকলেও বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের স্বীকার যা এর উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত করছে। জলবায়ুর চরম ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মতো দেশ। আইসল্যান্ডের বরফ উষ্ণতার কারণে গলে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন থেকে উদ্ভূত নানা প্রভাবকে টেকসইভাবে সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থাকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০