সরকার-ইসি চাইলেও সব সময় সুষ্ঠু ভোট হয় না: জিএম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক: সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি বলেছেন, ‘সরকার, নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ প্রশাসন চাইলেও অনেক সময় অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন নাও হতে পারে। আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে এটাই বাস্তবতা। এমন সমস্যা প্রার্থীদের মোকাবিলা করতে হয়।’

গতকাল জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘আমি বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে যতটুকু জানতে পেরেছি, এবারের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। আমাদের প্রার্থীদের সম্ভাবনা বেশি দেখছি। প্রার্থী ভালো হোক বা মন্দ, তাদের পক্ষে কাজ করতে হবে। না হলে ভবিষ্যতে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জিএম কাদের বলেন, ‘কাউন্সিলর পদে আমরা দলীয় মনোনয়ন দিতে পারব না। তবে তাদের সেভাবে ঘোষণা দেওয়া হবে। কাল-পরশুর মধ্যে প্রার্থিতা ঘোষণা করব। যাদের প্রার্থী দেব না তারা যদি ভোট করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘আমি ভিন্নভাবে বলি, যে কারণে কেউ খুশি হন, কেউ বেজার হন। আমার কথা হচ্ছে, যদি ভোটকেন্দ্র পাহারা দিতে পারেন, নিজের সম্মান রক্ষা করতে পারেন তাহলে মনোনয়ন নেন। কেন্দ্র পাহারা দিতে না পারলে মনোনয়ন কেনার দরকার নেই।’

ভোট কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে থেকে চুরি ঠেকানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাহলে চেয়ারম্যান কী করবে, আমি মহাসচিব কী করব। যদি সাহস থাকে তাহলে ভোটে আসেন। না হলে মাঠে নামার দরকার নেই। আমরা আলাপ-আলোচনা করে প্রার্থী ঠিক করব। তারা যদি আলাপ-আলোচনা না করে তাহলে আমরা আমাদের মতো ভোট করব। আমরা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনা করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে সরকারের ভাবমূর্তি উদ্ধার হবে। নির্বাচন কমিশনের ইমেজ বাড়বে, অতীতের গ্লানি মুছে যাবে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আরেকটি বিষয় হবে, এতে আপনারা বুঝতে পারবেন কোথায় আপনার কোন প্রার্থী দুর্বল রয়েছে। সেভাবে ব্যবস্থা নিতে পারবেন।’

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘একটি কথা বলব, গত নির্বাচনের আগে সমঝোতার চেষ্টা করেছিলাম। ওরা প্রস্তাব দিল, পাঁচটি কাউন্সিলর দেবে। আমি সেই প্রস্তাব নিয়ে পার্টির চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করতে গেলে তৎকালীন মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বাধা দেন। বাবলু ভাই তখন বলেছিলেন, আমরা এককভাবে ভোট করলে ১০-১৫টি ওয়ার্ডে জিতে যাব। আমি নির্বাচনে যাইনি। আমাদের একজনও পাস করতে পারল না।’

তিনি বলেন, ‘এখন প্রশ্ন উঠছে সুষ্ঠু নির্বাচনের। এজন্য মাঠে থাকতে হবে। জনগণ সঙ্গে থাকলে শেষ পর্যন্ত কোনো ষড়যন্ত্র বাধা হতে পারে না। এবার দক্ষিণে সাবেক ভিপি আলমগীর সিকদার লোটনকে যদি মেয়র পদে মনোনয়ন দেন, তাহলে ভালো কিছু আশা করা যায়। গতবার মিলনকে দিয়েছিলাম, বারবার তাকে দিয়ে পরীক্ষা করার কোনো মানে হয় না।’

প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাতীয় পার্টির সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আবদুস সবুর আসুদ, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, ভাইস চেয়ারম্যান জহিরুল আলম রুবেল প্রমুখ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০