প্রতিনিধি, বগুড়া : অতিরিক্ত সেশন ফি আদায়ের প্রতিবাদে বগুড়ায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন অভিভাবকরা। শনিবার সকালে শহরের সাতমাথায় এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অবৈধভাবে বিভিন্ন অজুহাতে টাকা আদায়ের তালিকায় রয়েছে বগুড়ার প্রায় সবগুলো নামি-দামি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রয়েছে: এসওএস হারম্যান মেইনর স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, টিএমএসএস স্কুল ও কলেজ, সিটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ইয়াকুবিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। উল্লেখ্য, আদালত সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা নির্ধারণ করেছেন, সেখানে বিভিন্ন স্কুল শ্রেণিভেদে ছয় হাজার থেকে ২২ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করছে।
অভিভাবকদের অভিযোগ সেশন ফি’র নামে রীতিমত ডাকাতি করছে বগুড়ার নামি-দামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। সরকার নির্ধারিত নীতিমালার কেউই তোয়াক্কা করছে না। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ব্যাঙের ছাতার মতো গজে ওঠা প্রাইভেট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর দৌরাত্ম্য সীমা অতিক্রম করেছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সন্তানদের ভর্তি করার পর অনেকটা দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো। অতিরিক্ত সেশন ফি ছাড়াও বাজার থেকে চার-পাঁচগুণ বেশি টাকায় এসব প্রতিষ্ঠান থেকে বই-খাতাসহ শিক্ষাউপকরণ বাধ্য হয়ে কিনতে হয়। এমনকি স্কুল ড্রেসও প্রতিষ্ঠান থেকে নিতে হয়। নামি-দামি এসব স্কুল-কলেজে একবার কোনো শিক্ষার্থীকে ভর্তি করানো হলে পর্যায়ক্রমে নানা বাহানায় একের পর এক খাত দেখিয়ে টাকা আদায় করা হচ্ছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর এমন আচরণ বন্ধ এবং আদালতের আদেশ দ্রুত মেনে নেওয়ার দাবিতে শনিবার বগুড়ার সাতমাথা জিরো পয়েন্টে অভিভাবকদের নিয়ে প্রতিবাদ সভা করেন আদালতে রিটকারী আবদুল মান্নান আকন্দ। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন রফিকুল ইসলাম, রুমা বেগম প্রমুখ।
বগুড়ার স্কুল অব দ্য হলি কোরআন স্কুলের এক অভিভাবক বেলাল হোসেন বলেন, ২৮ ডিসেম্বর আমার কাছ থেকে সেশন ফি নামে পাঁচ হাজার ৩০০ টাকা আদায় করেছে ওই প্রতিষ্ঠান। তিনি টাকা আদায়ের রশিদ দেখিয়ে আরও বলেন, ‘আদালতের আদেশ তাহলে কাদের জন্য প্রযোজ্য? গরিবরা কীভাবে সন্তানদের লেখাপড়া শেখাবে?’
অ্যাডভোকেট মোশারফ হোসেন মনির বলেন, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেই এ মামলা নিয়ে আমি কাজ করেছি। আদালত এবার যে নিদের্শনা দিয়েছেন, তা মানতে বাধ্য প্রতিষ্ঠানগুলো। যদি কোনো প্রতিষ্ঠান আদালতের আদেশ অমান্য করে অতিরিক্ত সেশন ফি আদায় করে, তাহলে ওইসব প্রতিষ্ঠানের এমপিও বাতিল হয়ে যাবে।
