নিজস্ব প্রতিবেদক: শুরু হচ্ছে ২৫তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। আজ সকাল ১০টায় ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা (ডিআইটিএফ)-২০২০ এর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল আগারগাঁওয়ে মেলার মাঠে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
২৫তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা চলবে মাসব্যাপী। ৩২ একর জমির ওপর নতুন রূপে সাজানো হয়েছে এবারের বাণিজ্যমেলা। জাতীয় স্মৃতিসৌধের আদলে সাজানো হয়েছে। মেলায় প্রবেশের প্রধান গেট, সঙ্গে থাকছে পদ্মা সেতুর মডেল। বৃদ্ধি করা হয়েছে মেলায় আগত দেশি-বিদেশি অংশগ্রহণকারী ও দর্শনার্থীদের জন্য সুযোগ-সুবিধা। যদিও গত বছরের তুলনায় এবার কমানো হয়েছে স্টলের সংখ্যা। তবে মেলায় প্রবেশের ফি ১০ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
তথ্যমতে, গত বছর মোট ৬৩০টি ছোট-বড় স্টল ও প্যাভেলিয়ন ছিল। এ বছর ৪৮৩টি স্টল ও প্যাভেলিয়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটেগরির প্যাভেলিয়ন রয়েছে ১১২, মিনি প্যাভেলিয়ন ১২৮ ও বিভিন্ন ক্যাটেগরির স্টল ২৪৩টি। এ বছর মোট ২১ দেশের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নিচ্ছে। এবার মেলা আয়োজনে মোট ২৩ কোটি ১৬ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য মেলা খোলা থাকবে। এবার প্রবেশ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রাপ্ত বয়স্ক ৪০ ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক ২০ টাকা। টিকিটের ২৫ ভাগ অনলাইনে পাওয়া যাবে। অনলাইনে মেলার সব তথ্য পাওয়া যাবে। এছাড়া খাবার দোকানগুলোতে খাবার মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। যানবাহন পার্কিসহ এ মেলায় সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালে বাংলাদেশের রপ্তানি ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে সরকার এগিয়ে যাচ্ছে। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে। ২০২৭ সালের পর বাংলাদেশ আর এলডিসির (স্বল্পোন্নত দেশ) সুবিধা ভোগ করতে পারবে না। সেজন্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে এফটিএ (ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট) ও পিটিএ (প্রেফারেন্সিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্ট) করার জন্য সরকার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ঢাকার পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার স্থায়ী ঠিকানা নির্ধারণ করা হলেও সেখানে তা আয়োজনের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা নেই বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, শিগগিরই পূর্বাচলের স্থায়ী ঠিকানায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা করা সম্ভব নয়। এজন্য আরও সময় লাগবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী বছরের মাঝামাঝি নাগাদ মেলার জন্য স্থায়ী অবকাঠামোর নির্মাণকাজ শেষ হবে। তবে যে জায়গা আমরা পেয়েছি, এর বাইরে আরও জায়গা প্রয়োজন আছে। বিল্ডিংটা আমাদের হয়ে যাবে, কিন্তু গাড়ি পার্কিং, চলাচলসহ আনুষঙ্গিক জায়গা কম আছে। আমরা পূর্ত মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখেছি, তারা এটি বিবেচনায় রেখেছে। আমার মনে হয় না, এ মেলা আগামী বছর আমরা ওখানে নিয়ে যেতে পারব। এখনও অঞ্চলটা সেভাবে ডেভেলপ করেনি। যে কারণে এ ধরনের প্রচুর লোকসমাগমের যে বাণিজ্যমেলা সেটা ওখানে শিগগির করা যাবে বা তার ভালো রেজাল্ট পাওয়া যাবে, এটা সম্ভব নয়।’
টিপু মুনশি বলেন, ‘ওখানে (পূর্বাচলে বাণিজ্যমেলার স্থায়ী ঠিকানায়) একটা দিক করা যাবে, সেটা হলো পুরো বছর ধরে বিভিন্ন গ্রুপের বিভিন্ন আইটেম ধরে মেলা করা যাবে। এ যে বসুন্ধরা সেন্টারে বিভিন্ন ধরনের মেলা হচ্ছে। আমি নিজেই গত এক বছরে ৮-১০টা মেলা উদ্বোধন করেছি। কখনও মেশিনারিজ, কখনও লাইট মেশিনারিজ, ইলেকট্রনিকস, সিরামিক, ফার্নিচার- এ ধরনের মেলা আরও বড়সড় এবং সুন্দরভাবে আমরা ওখানে আয়োজন করতে পারব। কিন্তু এ ধরনের মেলা (ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা) ওখানে করার মতো এখনও সময় হয়নি বলে আমার মনে হয়। আরও একটু সময় লাগবে।’
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. জাফর উদ্দিন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা ইয়াসমিন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) ওবায়দুল আজম এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সিনিয়র কর্মকর্তারা।