নিরীক্ষকের আপত্তি

শ্রমিকদের প্রাপ্ত লভ্যাংশের অংশ দিচ্ছে না জেমিনি সি ফুড

নিজস্ব প্রতিবেদক: শ্রম আইনে কোম্পানির মুনাফার এক শতাংশ শ্রমিক অংশীদারিত্ব তহবিলে জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তারপরও কিছু কোম্পানি শ্রমিকদের মুনাফার অংশ থেকে বঞ্চিত করছে। তেমনি একটি কোম্পানি জেমিনি সি ফুড লিমিটেড। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে প্রকাশিত তথ্যের মাধ্যমে এটি জানা গেছে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, শ্রম আইন-২০১৩ অনুযায়ী কোম্পানির লভ্যাংশের একটি অংশ শ্রমিকদের দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু জেমিনি সি ফুড লিমিটেড তার আর্থিক প্রতিবেদনে শ্রমিকদের পাওনা অর্থ ব্যয় হিসেবে দেখানো হলেও শ্রমিক অংশীদারিত্ব তহবিল ট্রাস্টের ব্যাংক হিসাবে তা জমা হচ্ছে না। এজন্য কোম্পানির নিরীক্ষক আপত্তি জানিয়েছেন। নিরীক্ষক জানিয়েছেন, কেবল ২০১৩-১৪ ও ২০১৪-১৫ সাল এ দুই অর্থবছরের জন্য শ্রমিকদের পাওনা অর্থ শ্রমিক অংশীদারিত্ব তহবিলে কোম্পানিটি জমা করেছে। এরপর আর কোনো অর্থ শ্রমিকদের ওই তহবিলে জমা না করলেও আর্থিক প্রতিবেদনে তা ব্যয় হিসেবে দেখানো হয়েছে।

কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে শ্রমিকদের পাওনা অর্থের দুই লাখ ৬৯ হাজার ৭৫৩ টাকা ব্যয় হিসেবে দেখানো হয়েছে। এর আগের বছরগুলো, অর্থাৎ ২০১৮, ২০১৭ ও ২০১৬ সালের ৩০ সমাপ্ত হিসাববছরে যথাক্রমে চার লাখ ৫৪ হাজার ৮৯৬ টাকা, ১৬ লাখ ৮৮ হাজার ৯০০ টাকা ও ১৫ লাখ ১৭ হাজার ৭৪০ টাকা ব্যয় হিসেবে দেখানো হলেও তা শ্রমিক অংশীদারিত্ব তহবিলের ব্যাংক হিসাবে কোম্পানিটি জমা করেনি বলে জানা গেছে।

এদিকে কোম্পানিটির ২০১৭ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে আয় ও মুনাফা কমেছে। ২০১৯ সালে কোম্পানিটি মোট আয় করেছে ৬৭ কোটি ১৬ লাখ ৭৮ হাজার ৯২৩ টাকা। আর ২০১৮ ও ২০১৭ সালে যথাক্রমে আয় করেছে ৭৯ কোটি ৫৫ লাখ ৪৭ হাজার ৬৮০ টাকা ও ১৩৫ কোটি ৫১ লাখ ২৪ হাজার ১৩৭ টাকা।

২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩৭ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা শূন্য পাঁচ পয়সা। ওই সময় কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে ১৬ লাখ টাকা।

এর আগের বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে ১৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে। আলোচিত সময়ে ইপিএস হয়েছে ৭০ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ২৭ পয়সা। ওই সময় কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে ২৬ লাখ ২০ হাজার টাকা।

কোম্পানিটি ১৯৮৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। কোম্পানির ৪০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন চার কোটি ৬৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ দুই লাখ ১০ হাজার টাকা। কোম্পানির মোট ৪৬ লাখ ৯৬ হাজার ৩১৩ শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের ৩৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক দুই দশমিক ৯৩ শতাংশ, বিদেশি শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ ও বাকি ৬২ দশমিক ৬৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০