নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকার সমর্থক প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গতকাল গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আজকে যে সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হচ্ছে, এ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড কিন্তু আমরা জানি। কে গাড়ির অনুমোদন নেওয়ার জন্য ফাইল নিয়ে মন্ত্রীর কাছে গেছেন, কারা নিজের স্কুলের পারমিশন নেওয়ার জন্য সরকারি জমি নিয়েছেন এসব খবর আমাদের কাছে আছে। দেখা যাচ্ছে, এসব মানুষগুলোকে যাদের কোনো মোরালিটি নেই, তাদের নির্বাচনে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’
সরকারবিরোধী আন্দোলনে হতাহত ও নিখোঁজ নেতাকর্মীর সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি দিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী হেল্প সেল এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ঢাকা সিটি ভোটে ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা এর বিরোধিতা করেছি। আমরা বলেছি যে, ইভিএম দিয়ে কখনই মানুষের যে রায়, তার প্রতিফলন হবে না। আমরা এখনও সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এর বিরোধিতা করছি।’
সোমবার চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে নানা ‘অনিয়ম’ নিয়েও কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। এ ভোটে বিএনপি প্রার্থী আবু সুফিয়ানকে হারিয়ে জয়ী হয়েছে আওয়ামী লীগের মোছলেম উদ্দিন আহমদ। ফখরুল বলেন, ‘গতকাল চট্টগ্রামে উপনির্বাচন হয়েছে, যেতেই দেয়নি ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের। তার আগে বোমা মেরে, লাঠিসোটা দিয়ে ভোটারদের তাড়িয়ে দিয়েছে। তারপরে জিজ্ঞাসা করেন বলবে যে, আপনারা পারেননি। পারব কোত্থেকে? যে গুণ্ডা লাঠি মারে, সন্ত্রাসী করে, তার সঙ্গে ভদ্রলোকেরা, সাধারণ মানুষেরা পারবে কোত্থেকে?
সরকারের দমনপীড়নের সমালোচনা করে তিনি নিখোঁচ নেতাকর্মীদের সন্তানদের দিকে তাকিয়ে তিনি বলেন, ‘অসহনীয় একটা পরিবেশ, দম বন্ধ করা একটা পরিবেশ। এই সমাজ কীভাবে এ ধরনের পরিস্থিতি সহ্য করছেÑএটাও একটা চিন্তার ব্যাপার।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের সরকারে যারা আছেন, এরা জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছেন। তারা বক্তৃতা যখন করেন, মনে হয় যেন কিছুই হয়নি দেশে, চমৎকার পরিবেশ আছে, দেশের মানুষ খুব ভালো আছে। প্রতিদিন পত্রিকায় দেখবেন একটা হত্যার মহোৎসব চলছে। আজকে একটা মারাত্মক খবর দেখলাম মহাসড়কে মানুষের শরীরের অংশ ছিটিয়ে ছিটিয়ে আছে।
‘তিন-চার বছরের শিশুকে পর্যন্ত হত্যা করা হচ্ছে। হত্যা, শ্লীলতাহানি, ধর্ষণ যেন একটা সাধারণ ব্যাপার হয়ে গেছে। মানুষ এখন আর কথা বলে না, কথা বলার সুযোগ নেই। এটাই চেয়েছিল ওরা। ভয়ভীতি ছড়িয়ে দিয়ে পুরো ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করা, সেটাই করেছে তারা।’
ফখরুল বলেন, ‘আজকে সব জায়গায় ভয়। এ যে সাংবাদিক ভাইয়েরা যারা আজকে এখানে খবর নিচ্ছেন, ছবি তুলেছেন তারা নিজেরাই সেন্সরশিপ আরোপ করছেন। তাদের ম্যানেজমেন্ট নিজেরাই করছেন। সরকার তো বলেই, কিন্তু তারা (মিডিয়া) নিজেরাই সেন্সরশিপ করেনÑএটা দেওয়া যাবেন না, ওটা দেওয়া ?যাবে না, এ খবর ছাপানো যাবে না।’
অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এনামুল হক চৌধুরী, সাবেক ছাত্র নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, কামরুজ্জামান রতন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শফিউল বারী বাবু, মামুন হাসান প্রমুখ বক্তব্য দেন।