নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক কমিশনের (বিটিআরসি) নিরীক্ষা পাওনা বাবদ মোবাইল অপারেটর রবি আজিয়াটা ২৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা জমা দিয়েছে।
৫ জানুয়ারি হাইকোর্ট রবিকে বিটিআরসির বকেয়া পাওনা দাবির ৮৬৭ কোটি টাকার মধ্যে ১৩৮ কোটি টাকা পাঁচ মাসের সমান কিস্তিতে পরিশোধের নির্দেশ দেন। বিটিআরসি জানিয়েছে, পাঁচ কিস্তির প্রথমটি গতকাল জমা দেয় রবি।
বিটিআরসির সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেন খান বলেন, পাঁচ কিস্তির মধ্যে রবি প্রথম কিস্তির ২৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা মঙ্গলবার বিটিআরসিতে জমা দিয়েছে।
এ বিষয়ে রবি এক বিবৃতিতে জানায়, ‘মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে প্রথম কিস্তির অর্থ মঙ্গলবার আমরা বিটিআরসিতে জমা দিয়েছি। মূলত সেবার ক্ষেত্রে আমাদের সম্মানিত গ্রাহকদের অবর্ণনীয় অসুবিধার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই তা সমাধানের উদ্দেশ্যে আমরা আদালত-নির্দেশিত প্রথম কিস্তির অর্থ জমা দিয়েছি। রবি ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে দেশের আইন-কানুনের প্রতি সর্বদা শ্রদ্ধাশীল। তবে অর্থ জমা দিলেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অযৌক্তিক, সে বিষয়ে আমাদের অবস্থান এখনও দৃঢ় ও স্পষ্ট। তাই যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কিস্তির যে অর্থ আমরা জমা দিয়েছি, তা যথাসময়ে ফেরত পাব বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। এছাড়া আমাদের শেয়ারহোল্ডাররা স্বাধীনভাবে অন্যান্য বিকল্প আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করবেন ন্যায়বিচার পাওয়ার লক্ষ্যে। তবে এটি অনস্বীকার্য, যে প্রক্রিয়ায় পুরো বিষয়টি এখন পর্যন্ত এগিয়েছে, তা আমাদের বিনিয়োগকারীদের আস্থায় বড় ধরনের ফাটল তৈরি করেছে।’
এ কিস্তি জমা দেওয়ার ফলে রবির ওপর থেকে সরঞ্জাম আমদানি ও প্যাকেজ অনুমোদনের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার কথা। নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে বাধাহীন বিনিয়োগে যেতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু গ্রামীণফোনের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকছেই। নিষেধাজ্ঞা তুলতে গত ২৪ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ গ্রামীণফোনকে দুই হাজার কোটি টাকা পরিশোধের জন্য বলেন। এ জন্য গ্রামীণফোনের হাতে সময় আছে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
প্রসঙ্গত, নিরীক্ষা করিয়ে রাজস্বের ভাগাভাগি, কর ও অন্যান্য খাতে গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা ও রবির কাছে ৮৬৭ কোটি টাকা দাবি করছে বিটিআরসি। গ্রামীণফোন ও রবি বরাবরই বলে আসছে, তারা নিরীক্ষার সঙ্গে একমত নয়।
এ টাকা আদায়ের পদক্ষেপ হিসেবে গ্রামীণফোন ও রবির সরঞ্জাম আমদানি ও প্যাকেজ অনুমোদন বন্ধ করে দেয় বিটিআরসি। পাশাপাশি প্রশাসক বসাতে কারণ দর্শানোর নোটিসও দেওয়া হয়। এসব পদক্ষেপ আটকাতে দুই অপারেটরই আদালতে যায়। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের পক্ষ থেকে আলাদাভাবে দুই অপারেটরের ক্ষেত্রেই নিষেধাজ্ঞা তুলতে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তার ভিত্তিতে প্রথম কিস্তি দিল রবি আজিয়াটা।
