নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) টানা দুই কার্যদিবস বড় পতনের পর গতকাল সূচক ইতিবাচক ছিল। তবে লেনদেন কমেছে। প্রায় ৬০ শতাংশ কোম্পানির দর বৃদ্ধিতে ডিএসইএক্স সূচক প্রায় ৩২ পয়েন্ট ইতিবাচক হয়। গতকাল লেনদেনের শুরুতেই সূচক প্রায় ৮৩ পয়েন্ট ইতিবাচক ছিল। তবে বেলা ১১টার পর বিক্রির চাপ বাড়লে সূচক সামান্য নেমে যায়। এরপর সামান্য উঠে ধীরে ধীরে নি¤œমুখী হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত প্রায় ৩২ পয়েন্ট ইতিবাচক থাকতে পেরেছে। বাকি দুই সূচকও ইতিবাচক ছিল। চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩১ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়ে চার হাজার ৬৮ দশমিক ২০ পয়েন্টে অবস্থান করে।
ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক সাত দশমিক ২২ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়ে ৯১৪ দশমিক ২৫ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৯ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৩৭১ দশমিক ২৩ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন এক হাজার ১৬১ কোটি ৩১ লাখ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ১৪ হাজার ৫৫৯ কোটি শূন্য তিন লাখ ৪৪ হাজার টাকায়। ডিএসইতে লেনদেন হয় ২৪২ কোটি ৮২ লাখ ৯৮ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৬২ কোটি ৮১ লাখ ২৬ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে ১৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এদিন আট কোটি ৫৪ লাখ ১৬ হাজার ৮৫৬ শেয়ার ৯১ হাজার চারবার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩৫৩ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২১০টির, কমেছে ৯৪টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৯টির দর।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে ব্র্যাক ব্যাংক। কোম্পানিটির ১৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে এক টাকা ৭০ পয়সা। এরপর স্কয়ার ফার্মার ১৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে তিন টাকা ৮০ পয়সা। লাফার্জহোলসিমের ১২ কোটি ৯০ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর কমেছে ৫০ পয়সা। এডিএন টেলিকমের ৯ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর কমেছে তিন টাকা ১০ পয়সা। স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের আট কোটি ৩০ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ১৮ টাকা। এছাড়া খুলনা পাওয়ারের সাত কোটি ১৭ লাখ, নর্দান জুটের ছয় কোটি ২১ লাখ, জেনেক্স ইনফোসিসের পাঁচ কোটি ৫৪ লাখ, এসএস স্টিলের তিন কোটি ৮৭ লাখ, বীকন ফার্মার সাড়ে তিন কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
আট দশমিক ৮৭ শতাংশ বেড়ে দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ। শাহ্জালাল ব্যাংকের সাড়ে সাত শতাংশ, প্রিমিয়ার সিমেন্টের ছয় দশমিক ৩৮ শতাংশ, বিডি অটোকারের সাড়ে পাঁচ শতাংশ, এমবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের পাঁচ দশমিক ৩৫ শতাংশ, এসইএমএল এফবিএসএল গ্রোথ ফান্ডের দর পাঁচ দশমিক ৩৫ শতাংশ, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্সের পাঁচ শতাংশ, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সের চার দশমিক ৯৮ শতাংশ, এআইবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের চার দশমিক ৭৬ শতাংশ, এপেক্স ফুডের দর বেড়েছে সাড়ে চার শতাংশ।
এছাড়া ৯ দশমিক ৫৬ শতাংশ দর কমে পতনের শীর্ষে উঠে আসে শ্যামপুর সুগার মিল। নর্দান জুটের দর আট দশমিক ৫৭ শতাংশ, স্টাইলক্রাফটের সাত দশমিক ৯৫ শতাংশ, এডিএন টেলিকমের ছয় শতাংশ, এটলাস বাংলাদেশের সাড়ে পাঁচ শতাংশ, লিবরা ইনফিউশনসের পাঁচ দশমিক ৩৫ শতাংশ, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্কের চার দশমিক ৯৩ শতাংশ, হাইডেলবার্গ সিমেন্টের চার দশমিক ৮২ শতাংশ, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের চার দশমিক ৩৩ শতাংশ, জেমিনি সি ফুডের দর তিন দশমিক ৭৪ শতাংশ কমেছে।
অন্যদিকে সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক ৫৮ দশমিক শূন্য তিন পয়েন্ট বা দশমিক ৭৭ শতাংশ বেড়ে সাত হাজার ৫০৪ দশমিক ৮৬ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৯৭ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়ে ১২ হাজার ৩৯৩ দশমিক শূন্য চার পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল সর্বমোট ২৩২ কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১২৫টির, কমেছে ৭৭টির, অপরিবর্তিত ছিল ৩০টির দর।
সিএসইতে এদিন সাত কোটি ৯৯ লাখ ১৭ হাজার ৩৩৯ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৯ কোটি ৬৯ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৮ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে এক কোটি ৭০ লাখ টাকা।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করে এডিএন টেলিকম। কোম্পানিটির ৭৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এর পরে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের প্রায় ৬০ লাখ, বেক্সিমকোর ২৮ লাখ, বারাকা পাওয়ারের ২২ লাখ, এসএস স্টিলের ২১ লাখ, জেনেক্স ইনফোসিসের সাড়ে ১৭ লাখ, লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের সাড়ে ১৬ লাখ, এনবিএল সাড়ে ১৫ লাখ, গ্রামীণফোন ও স্কয়ার ফার্মার ১৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।