ডিজিটাল সিস্টেমে কারসাজি চিহ্নিত করা অসম্ভব নয়

১৯৯৬ কিংবা ২০১০ সালে বাজার ধসের পেছনে যেসব গ্রুপের ভূমিকা ছিল, তারা এখনও ভিন্নভাবে কাজ করছে। কিন্তু ডিএসইতে তো সবার লেনদেনের রেকর্ড রয়েছে, চাইলেই কোথায় কে কারসাজি করছেÑতা চিহ্নিত করা সম্ভব। বিনিয়োগকারীদের লেনদেনের সবকিছু ডিজিটাল সিস্টেমে রেকর্ড থাকা সত্ত্বেও কেন কারসাজিকারীদের ধরা যাবে না? নিয়ন্ত্রক সংস্থা কেন ব্যর্থ হবে? যদি কোনো সুফল না পাওয়া যায়, তাহলে তো এসব সংস্থার কোনো প্রয়োজন নেই। কিছুদিন পরপর প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে বাজারের গতি বাড়ানো হবে, এটা তো ঠিক না। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়।

হাসিব হাসানের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন, এবং ৭১টেলিভিশনের সিনিয়র বিজনেস এডিটর কাজী আজিজুল ইসলাম। ফোনে যোগ দেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট মো. ছায়েদুর রহমান।

অধ্যাপক আল-আমিন বলেন, বাজারে এখনও বিনিয়োগকারীদের আস্থা আসেনি। গত রোববারে বাজারে উত্থান হলেও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সেখানে অংশগ্রহণ করেননি। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণের কারণে এমন উত্থান লক্ষ করা গেছে। কারণ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পেলেই যে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করবেন, বিষয়টি মোটেও তেমন না। এছাড়া অনেক দুর্বল কোম্পানি বাজারে এলেও বহুজাতিক কিংবা ভালো মানের কোম্পানি বাজারে নিয়ে আসা তো দূরে থাক বরং বহুজাতিক কোম্পানি এদেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়ে চলে যাচ্ছে। এসব বিষয় বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা হারাতে ভূমিকা রাখছে। ১৯৯৬ কিংবা ২০১০ সালে বাজার ধসের পেছনে যেসব গ্রুপের ভূমিকা ছিল, তারা এখনও ভিন্নভাবে কাজ করছে। কিন্তু ডিএসইতে তো সবার লেনদেনের রেকর্ড রয়েছে, চাইলেই কোথায় কে কারসাজি করছে তা চিহ্নিত করা সম্ভব। কিন্তু এটা তারা করে না। অনেক সময় যারা পর্যবেক্ষকের ভূমিকায় থাকেন, তাদেরই হয়তো কেউ কারসাজির সঙ্গে জড়িত। যদি এসব ক্ষেত্রে জবাবদিহি নিশ্চিত করা যেত, তাহলে বাজারের প্রতি আস্থা বাড়ত।

বিএমবিএ প্রেসিডেন্ট মো. ছায়েদুর রহমান বলেন, গতকাল বিএমবিএ’র পক্ষ থেকে কয়েকজন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে বর্তমান বাজার পরিস্থিতি নিয়ে সেখানে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সেখানে সবাই একমত হন যে, বাজারের গতিশীলতার জন্য অর্থের জোগান বাড়ানো প্রয়োজন।

একাত্তর টেলিভিশনের সিনিয়র বিজনেস এডিটর কাজী আজিজুল ইসলাম বলেন, বাজারের খারাপ পরিস্থিতির জন্য বিএসইসি এবং ডিএসই কেউই দায় এড়াতে পারে না। আজ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন বাজার গতিশীল করার জন্য এমন উদ্যোগ নিতে পারলে বিএসইসি বা ডিএসই নিলো না কেন? বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বাজারের তুলনা করলে সূচক কমপক্ষে ১০ হাজার পয়েন্ট হওয়া উচিত। কিন্তু আমাদের বাজার পরিস্থিতি এমন কেন? আর পাঁচ হাজার পয়েন্টের কম হওয়া একদম অস্বাভাবিক। বিনিয়োগকারীদের লেনদেনের সবকিছু ডিজিটাল সিস্টেমে রেকর্ড থাকা সত্ত্বেও কেন কারসাজিকারীদের ধরা যাবে না? নিয়ন্ত্রক সংস্থা কেন ব্যর্থ হবে? যদি কোনো সুফল না পাওয়া যায়, তাহলে তো এসব সংস্থার কোনো প্রয়োজন নেই। কিছুদিন পরপর প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে বাজারের গতি বাড়ানো হবে এটা তো ঠিক না। বাজার তার নিজস্ব গতিতে চলবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাজারের উন্নতির স্বার্থে যথাযথ দায়িত্ব পালন করবে, জবাবদিহিও নিশ্চিত করবে এবং কারসাজিকারীদের শাস্তি দিতে হবে।

শ্রুতিলিখন: পিয়াস

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০