প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের ফলে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে বাজার। এখন সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। যদি বেসরকারি কোম্পানিগুলো সমান্তরালভাবে এগিয়ে না আসে, সেক্ষেত্রে বাজারের হোঁচট খাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো জায়গায় দীর্ঘমেয়াদি মুনাফা দিতে পারে না। তাদের কাছে সেই পদ্ধতিও নেই। যদি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সক্রিয় হয়, তাহলে দুটি মিলে বাজার স্থিতিশীল থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়।
মাহমুদ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক ফজলুল বারী এবং এএফপির ব্যুরো চিফ শফিকুল আলম।
ফজলুল বারী বলেন, গত সপ্তাহ ধরে পুঁজিবাজার ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। সম্প্রতি পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল করতে প্রধানমন্ত্রী কিছু নতুন কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। টানা অস্থিতিশীল অবস্থা থেকে উত্তরণের পাশাপাশি তারল্য ও আস্থার সংকট দূর করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়। এই উদ্যোগের পর অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের ফলে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে বাজার এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসছে। এতে বেড়েছে সূচক ও বেশিরভাগ কোম্পানির দর। এখন সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেরও এগিয়ে আসতে হবে। যদি বেসরকারি কোম্পানিগুলো সমান্তরালভাবে এগিয়ে না আসে, সেক্ষেত্রে হোঁচট খাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বাজারের। কারণ সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো জায়গায় দীর্ঘমেয়াদি মুনাফা দিতে পারে না। তাদের কাছে সেই পদ্ধতিও নেই। যদি এখন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সক্রিয় হয়, তাহলে বাজার যে ইতিবাচক ধারায় রয়েছে, সেক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি মিলে বাজার স্থিতিশীল থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বাজারের গভীরতা অনেক ছোট। এ পুঁজিবাজার শুধু ইক্যুইটিনির্ভর। আবার যে ইক্যুইটিগুলো রয়েছে, তার বেশিরভাগই স্বল্পমূলধনি। বাজারকে স্থিতিশীল রাখার জন্য অনেক সহযোগিতা করা হয়েছে, কিন্তু সেভাবে বাজার এগোচ্ছে না। আসলে বাজারে প্রাণ ফিরে পেতে হলে বিনিয়োগকারীর আস্থা তৈরি করতে হবে। বর্তমানে যারা বাজার পরিপালনে রয়েছে, সেখানে আমূল পরিবর্তন আনা দরকার। কারণ বিনিয়োগকারীর আস্থার জায়গাটি এখনও ঠিক হয়নি। আবার বাজার নিয়ে অনেক তাত্ত্বিক বা নীতিগত কথা বলা হয়েছে, কিন্তু তা কোনো কাজে আসেনি। বরং নীতি কথা বলে অনৈতিক কাজে উৎসাহী করা হয়েছে। বাজারে কারসাজি বন্ধ করতে পারেন না, অথচ একটি বিও অ্যাকাউন্ট খুলতে গেলে তাদের অর্থের উৎস জানতে চাওয়া হয়। বাজারে আস্থা ফেরান এবং অর্থের প্রবাহ বাড়ান। নীতি-নৈতিকতা বজায় রেখে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করুন।
শফিকুল আলম বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী কিছু উদ্যোগ নেওয়ার কারণে বাজার ইতিবাচক রয়েছে। এক সপ্তাহে প্রায় আট শতাংশ সূচক বেড়েছে। এ ধারা এগিয়ে নিতে হলে বিএসইসি ও ডিএইসিতে নতুন নেতৃত্ব দরকার। কারণ ৯ বছর ধরে এরাই বাজারকে পরিপালন করছেন। কিন্তু বাজারে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ ৯ বছরকে বলা হচ্ছে বাজারের লোকসানের বছর।
তিনি আরও বলেন, বাজারে সুশাসনের ঘাটতি রয়েছে। বিশেষ করে বিএসইসি ও ডিএসইতে সুশাসনের অভাব প্রকট। তাই বাজার নিয়ে যারা চিন্তা করেন, তাদের এখন সুশাসনের দিকে নজর দিতে হবে।
শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ