এমটিবিতে অতিরিক্ত ভোটাধিকার পেল নরফান্ড কর্তৃপক্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বেসরকারি খাতের মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) শেয়ারে বিনিয়োগ করেছিল নরফান্ড। ১০ শতাংশ শেয়ারের বিপরীতে শেয়ারহোল্ডারের পুরো ভোট চেয়েছিল। কিন্তু বিদ্যমান ব্যাংক কোম্পানি আইনে তা সম্ভব নয়। অবশেষে আইনের এ ধারাটি পরিপালনে মুক্ত করল অর্থ মন্ত্রণালয়।

সম্প্রতি তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল ওই গেজেটে স্বাক্ষর করেন। জানা গেছে, বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে ১৯৯৭ সালে একটি তহবিল গঠন করে নরওয়ে সরকার, যা দ্য নরওয়েজিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ফর ডেভেলপিং কান্ট্রিজ বা নরফান্ড নামে পরিচিত।

বছর দুয়েক পূর্বে বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের এমটিবির ১০ শতাংশ শেয়ার কেনে নরফান্ড। এতে এমটিবিতে শেয়ারহোল্ডার পরিচালক দেয় ফান্ডটির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। অবশ্য নরফান্ডের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, পুরো শেয়ারের বিপরীতে প্রাপ্ত শেয়ারহোল্ডার ভোটাধিকার। কিন্তু ব্যাংক কোম্পানি আইনানুসারে একক শেয়ারহোল্ডারের ভোটাধিকার সব শেয়ারহোল্ডারের সামগ্রিক ভোটাধিকারের পাঁচ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। এজন্য ব্যাংকটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা থেকে অব্যাহতি চেয়েছিল।

অর্থ মন্ত্রণালয় সম্মতি দিলে ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা পরিপালন থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপনও জারি করে। ফলে এখন থেকে নরফান্ড কর্তৃপক্ষ এমটিবির ধারণ করা ১০ শতাংশ শেয়ারের বিপরীতে একক শেয়ারহোল্ডার হিসেবে ১০ শতাংশ ভোটাধিকার দিতে পারবে।

এ বিষয়ে এমটিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করেছি। তা বাংলাদেশ ব্যাংকেও জানানো হয়েছে। এ বিনিয়োগে ব্যাংকের সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পাবে। বিশেষ করে বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্যাংকের গ্রহণযোগ্য বৃদ্ধি পাবে।’

প্রসঙ্গত, ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ এর ১৪(১)(চ) ধারায় বলা হয়েছে, সরকার ব্যতীত অন্য কোনো একক শেয়ারহোল্ডারের ভোটাধিকার সব শেয়ারহোল্ডারের সামগ্রিক ভোটাধিকারের শতকরা পাঁচ ভাগের বেশি হবে না।

জানা গেছে, এমটিবিতে বড় ধরনের বিনিয়োগের ঘোষণা করে নরফান্ড। নরওয়ের সরকারি তহবিল নরফান্ড এমটিবির বিদ্যমান শেয়ারের বাইরে নতুন করে ছয় কোটি ৩৭ লাখ সাত হাজার শেয়ার ইস্যু করে ১৭৩ কোটি ২৩ লাখ ৭৪ হাজার ৮১৮ টাকার সমপরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করার কথা জানায়। প্রিমিয়ামসহ ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতি শেয়ারের দাম নির্ধারণ করা হয় ২৭ টাকা ১৯ পয়সা। এজন্য ব্যাংকটির সংঘস্মারকের কয়েকটি ধারাতেও পরিবর্তন করতে হয়।

এছাড়া যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদপ্তরের (আরজেএসসি) অনুমোদন ও বিশেষ সাধারণ সভায় (ইজিএম) শেয়ারহোল্ডারদের মতামত নিতে হয়। এরপর পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত হওয়ায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছ থেকেও শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন নেয় এমটিবি।

সর্বশেষ পুঁজিবাজারে এমটিবির শেয়ারটির লেনদেন হয় ৩০ টাকা ২০ পয়সায়। বর্তমানে ব্যাংকটির অনুমোদিত এক হাজার কোটি টাকা মূলধনের মধ্যে পরিশোধিত হচ্ছে ৭০৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। মোট শেয়ারের মধ্যে ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৪৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২১ দশমিক ৩৬ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ রয়েছে। ২০১৮ সালেও জন্য বিনিয়োগকারীদের ১১ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিয়েছে ব্যাংকটি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০