নিজস্ব প্রতিবেদক: একদিন পর ফের পতন হয়েছে উভয় বাজারের। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সবকটি সূচক পতনের পাশাপাশি বেশিরভাগ শেয়ারদর ও লেনদেন কমেছে। ৫১ শতাংশ কোম্পানির দরপতনে প্রধান সূচক কমেছে ২৯ পয়েন্ট। লেনদেনের শুরুতেই সূচক আগের দিনের চেয়ে ১৮ পয়েন্ট বেড়ে যায়। কিন্তু পরমুহূর্তেই বিক্রির চাপ বাড়লে সূচক নেমে যায়। এরপর বেশ কয়েকবার এভাবে ওঠানামা করতে করতে সূচক ধীরে ধীরে নেমে যায়। শেষ পর্যন্ত পতনেই থেকে যায় সূচক। লেনদেন কমে সাড়ে ৪০০ কোটি টাকার নিচে নেমে গেছে। চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক ও বেশিরভাগ শেয়ারদর কমলেও লেনদেন বেড়েছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৮ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৪ শতাংশ কমে চার হাজার ৪৮১ দশমিক ৭৯ পয়েন্টে অবস্থান করে।
ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক পাঁচ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৪ শতাংশ কমে এক হাজার ২৮ দশমিক ৭১ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ১৭ দশমিক ২৫ পয়েন্ট বা এক দশমিক ১১ শতাংশ কমে এক হাজার ৫২৬ দশমিক ৪৪ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন দুই হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা কমে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৪২ হাজার ১১৭ কোটি ৫৬ লাখ ৬১ হাজার টাকায়। ডিএসইতে লেনদেন হয় ৪৩৯ কোটি ৬১ লাখ ৯২ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪৬৭ কোটি ৪৮ লাখ ২৭ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে ২৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এদিন ১৫ কোটি সাত লাখ সাত হাজার ৬৭১ শেয়ার এক লাখ ৩১ হাজার ৭৯৩ বার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩৫৫ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১১৪টির, কমেছে ১৮০টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৬১টির দর।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ। কোম্পানিটির ২৭ কোটি ৭৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর কমেছে ৭০ পয়সা। এরপর বিবিএস কেব্লসের ১১ কোটি ৩০ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে তিন টাকা ৪০ পয়সা। এসকে ট্রিমসের ৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে দুই টাকা ৪০ পয়সা। বিএটিবিসির ৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর কমেছে ৪২ টাকা ৪০ পয়সা। প্যারামাউন্ট টেক্সের ৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ৯০ পয়সা। এছাড়া বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্লসের ৯ কোটি টাকা, এডিএন টেলিকমের আট কোটি ৯৫ লাখ, জিপির আট কোটি ৩৭ লাখ, ভিএফএস থ্রেডের সাত কোটি ৬৭ লাখ, স্কয়ার ফার্মার সাত কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ বেড়ে কেডিএস এক্সেসরিজ দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে। এরপর ওইম্যাক্স ইলেকট্রোডের দর ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ, মোজাফফর হোসেন স্পিনিংয়ের ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ, ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ের আট দশমিক ৬৯ শতাংশ, মেট্রো স্পিনিংয়ের আট দশমিক ৬২ শতাংশ, মালেক স্পিনিংয়ের আট দশমিক ১৯ শতাংশ, এসইএমএল এফবিএসএল গ্রোথ ফান্ডের সাত দশমিক ৯৫ শতাংশ, জাহিন স্পিনিংয়ের সাত দশমিক ২৪ শতাংশ, নাহি অ্যালুমিনিয়ামের ছয় দশমিক ৮৩ শতাংশ, সোনারগাঁও টেক্সটাইলের দর ছয় দশমিক ৬৪ শতাংশ বেড়েছে।
সাত দশমিক ৮৩ শতাংশ কমে দরপতনের শীর্ষে উঠে আসে এমআই সিমেন্ট। ন্যাশনাল টি কোম্পানির দর ছয় দশমিক ৭৯ শতাংশ কমেছে। বিডি ল্যাম্পসের ছয় দশমিক ৩৬ শতাংশ, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের পাঁচ দশমিক ৭০ শতাংশ, এসপি সিরামিকসের পাঁচ দশমিক ৩৭ শতাংশ, রেনাটার চার দশমিক ৭৫ শতাংশ, ইস্টার্ন কেব্লসের চার দশমিক ৬৫ শতাংশ, সি পার্ল রিসোর্টের তিন দশমিক ৬৩ শতাংশ, বিএটিবিসির তিন দশমিক ৫৮ শতাংশ ও প্রিমিয়ার লিজিংয়ের দর তিন দশমিক ৪৪ শতাংশ কমেছে।
অন্যদিকে সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক ৩৩ দশমিক ২৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৪০ শতাংশ কমে আট হাজার ২৮৩ দশমিক ৪৮ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫১ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৭ শতাংশ কমে ১৩ হাজার ৬৬৩ দশমিক ৭৫ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল সর্বমোট ২৪৩ কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৯৮টির, কমেছে ১১২টির, অপরিবর্তিত ছিল ৩৩টির দর।
সিএসইতে এদিন ৩৮ কোটি ৪০ লাখ ৪২ হাজার ২৫৯ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৬ কোটি ১১ লাখ ২০ হাজার ১৬৬ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ২২ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করে প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল। কোম্পানিটির ২৪ কোটি ৩১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এর পরের অবস্থানগুলোয় থাকা লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের এক কোটি ১৪ লাখ, এসএস স্টিলের ৭৬ লাখ, এডিএন টেলিকমের ৬৮ লাখ, কেডিএস এক্সেসরিজের ৫৩ লাখ, বিএটিবিসির ৪২ লাখ, বিবিএস কেব্লসের ৩৬ লাখ, বেক্সিমকোর ৩৫ লাখ ও জিবিবি পাওয়ারের ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।