‘লেখকরা অবলীলায় অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে’

কয়েস সামী, পেশায় ব্যাংকার। পেশাগত জীবনের পাশাপাশি বই পড়া ও লেখায় তার আগ্রহের কমতি নেই। শত ব্যস্ততা দূরে ঠেলে ২০১৬ সাল থেকে পাঠককে বই উপহার দিয়ে আসছেন। উপন্যাসের পাশাপাশি ছোটদের জন্য লিখছেন মজার ছড়ার বই। তরুণ এ লেখকের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মো. ইমরান হোসেন

পাঠকের সঙ্গে নিজেকে কীভাবে পরিচয় করিয়ে দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন?

কয়েস সামী: আমি গল্প বলতে পছন্দ করি। সাহিত্য নয়, আমার মূল আগ্রহ গল্পে। তাই পাঠকের কাছে নিজেকে গল্পকার হিসেবে পরিচয় দিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।

লেখালেখির ভুবনে আসার গল্পটি বলুন…

কয়েস সামী: ছোটবেলায় প্রচুর বই পড়েছি। বই পড়তে পড়তে কখন যে নিজেকে হারিয়ে ফেলতাম, টেরই পেতাম না। কোনো কোনো বই পড়ে হাসতে থাকতাম। আবার কোনো বই পড়ে চোখে জল এসে যেত। তখন অবাক হয়ে ভাবতাম, লেখকরা কী অবলীলায় না আমার অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করছেন! ধীরে ধীরে আমার মনেও একটি ইচ্ছেবোধ জেগে ওঠে যে, আমিও অন্যদের অনুভূতিকে নিয়ন্ত্রণ করব। লেখনীর মাধ্যমে আনন্দ দেব। সে চাওয়া থেকেই এক সময় লেখালেখির ভুবনে চলে এলাম।

প্রথম বই প্রকাশের আনন্দটুকু পাঠকের সঙ্গে শেয়ার করুন…

কয়েস সামী: প্রথম বইটি ছিল একটি উপন্যাস, ‘ঝরিছে নয়নবারি’। বইটি প্রকাশ করেছিল অনিন্দ্য। লেখালেখি করেছি এর আগে দীর্ঘদিন। কিন্তু ভাবিনি কখনও আমার বই প্রকাশিত হবে। তাই যখন সত্যি সত্যি বইটি প্রকাশিত হলো, তখন কী যে আনন্দ! এ শুধু আমার প্রথম সন্তান জন্মের পর যে আনন্দটুকু পেয়েছিলাম, তার সঙ্গে তুলনা করা যায়।

এবারের বইমেলায় কটি বই আসছে?

কয়েস সামী: এবারের বইমেলায় তিনটি বই আসছে। ‘ওগো বিদেশিনি’ উপন্যাসটি আসছে দেশ পাবলিকেশন্স থেকে। অন্য দুটি শিশুদের জন্য। ‘কার্টুন দেখা ভালো না’ ও ‘মাকড়সা সাফওয়ান’ বই দুটি আসছে হালুম প্রকাশনী থেকে। এর আগে আমার আরও তিনটি বই প্রকাশিত হয়েছে।

নতুন বইগুলো সম্পর্কে কিছু বলুন?

কয়েস সামী: প্রথমেই বলি ‘ওগো বিদেশিনির’ কথা। এটি একটি উপন্যাস। কেনিয়ার মেয়ে ডরিস কুন্ডা শরীফ নামের একটি ছেলের সঙ্গে প্রেম করে চলে আসে বাংলাদেশে। এখানে আসার পর সে নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়। এ প্রেক্ষাপট নিয়েই উপন্যাসটি। অন্য দুটি বই ছোটদের। কার্টুন দেখা ভালো না ও মাকড়সা সাফওয়ান বইগুলো শিশুদের জন্য, দারুণ মজার ও শিক্ষণীয়।

লেখালেখির পাশাপাশি আর কি করেন?

কয়েস সামী: আমি পেশায় একজন ব্যাংকার। একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত।

লেখক না ব্যাংকার কোন পরিচয় দিতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন?

কয়েস সামী: দুই পরিচয়েই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। লেখালেখিটা আসলে আমার ব্যাংকিংয়ে বেশ সহযোগিতা করে। লেখালেখি আমার কাজের চাপ ভুলতে সহায়তা করে। ব্যাংকার না হলে আমি লেখক হয়ে উঠতাম কি না সন্দেহ রয়েছে। তাই লেখালেখি যতটা ভালোবাসি, ব্যাংকিংও ঠিক ততটাই।

অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০ সম্পর্কে বলুন…

কয়েস সামী: সবার মতোই বলতে হয়: অমর একুশে গ্রন্থমেলা হচ্ছে আমাদের প্রাণের মেলা। সারা বছর আমি ফেব্রুয়ারির জন্য অপেক্ষা করি। নতুন বই আসবে, বই কিনব, বই পড়ব। মাসব্যাপী এত বড় একটি মেলা সত্যিই বাঙালির অহংকার।

বই প্রকাশের ক্ষেত্রে আপনার অনুভূতি…

কয়েস সামী: আগেই বলেছি, নতুন কিছু সৃষ্টির যে আনন্দ, বই প্রকাশেও তেমন। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রচুর বই প্রকাশিত হচ্ছে। এতসবের মধ্যে মানহীন বইও হয়তো বাজারে আসছে। আসুক না, সময় করে ঠিকই ভালো বইগুলো খুঁজে নেব।

পাঠকের উদ্দেশে কিছু বলুন…

কয়েস সামী: সব সময় বলি: আমি যেভাবে লিখে আনন্দ পাই, সেভাবেই লিখি। আমি যখন লেখার কাজ শুরু করি, তখন এক রকম ঘোরের জগতে চলে যাই। তখন সচেতনভাবে কিছুই করতে পারি না। তাই আমার লেখায় পাঠক হয়তো সাহিত্য খুঁজে পাবেন না। তবে গল্প পাবেন। গল্প পাঠের আনন্দ পাবেন। আমার লেখা যারা পছন্দ করেন কিংবা যারা করেন না, সবার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা রইল। সবাই ভালো থাকুন, পড়ার মধ্যে থাকুন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০