নিজস্ব প্রতিবেদক:আগের দিনের ধারাবাহিকতায় গতকালও উভয় বাজারে পতন অব্যাহত ছিল। সূচক, বেশিরভাগ শেয়ারদর ও লেনদেনে পতন হয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল ৫১ শতাংশ কোম্পানির দরপতনে সবকটি সূচক নেতিবাচক অবস্থানে চলে যায়। লেনদেন কমে ৪২০ কোটি টাকা হয়েছে। শুরু থেকেই সূচক ওঠানামা করতে করতে বেলা ১টার পর বড় পতন হয়। সূচক ৩৬ পয়েন্টের বেশি নেমে যায়। তবে শেষ ঘণ্টায় কেনার চাপ বাড়লে সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়। শেষ পর্যন্ত নেতিবাচক অবস্থানেই থেকে যায় সূচক। চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সব সূচক, শেয়ারদর ও লেনদেনে পতন হয়।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৩ দশমিক ৫০ পয়েন্ট বা দশমিক ৩০ শতাংশ কমে চার হাজার ৪৬৫ দশমিক ৮৯ পয়েন্টে অবস্থান করে।
ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক দুই দশমিক শূন্য এক পয়েন্ট বা দশমিক ১৯ শতাংশ কমে এক হাজার ২৯ দশমিক ৩১ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক সাত দশমিক শূন্য সাত পয়েন্ট বা দশমিক ৪৬ শতাংশ কমে এক হাজার ৫১৯ দশমিক ২২ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন এক হাজার ৭৫০ কোটি টাকা কমে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৪০ হাজার ৮২৪ কোটি ৯৪ লাখ ১৫ হাজার টাকায়। ডিএসইতে লেনদেন হয় ৪২০ কোটি ৬০ লাখ ছয় হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪৫৩ কোটি ৮৮ লাখ ২৬ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে ৩৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এদিন ১৫ কোটি ১৮ লাখ ৮৯ হাজার ১১৯ শেয়ার এক লাখ ২৯ হাজার ৭৫৫ বার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩৫৬ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১০৪টির, কমেছে ১৮৩টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৬৯টির দর।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ। কোম্পানিটির ২৬ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর কমেছে এক টাকা ৬০ পয়সা। এরপর গোল্ডেন হার্ভেস্ট এগ্রোর ১২ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ৬০ পয়সা। বিবিএস কেব্লসের ১১ কোটি ৩০ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর অপরিবর্তিত ছিল। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের আট কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর কমেছে ৯০ পয়সা। এডিএন টেলিকমের আট কোটি ৭০ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর কমেছে ১০ পয়সা। এছাড়া কপারটেকের আট কোটি ৩৮ লাখ টাকা, এসএস স্টিলের সাত কোটি ৬৯ লাখ টাকা, নর্দার্ণ জুটের সাড়ে সাত কোটি টাকা, ওয়াটা কেমিক্যালের সোয়া সাত কোটি টাকা ও খুলনা পাওয়ারের সাত কোটি ১২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেড়ে এ্যাপেক্স স্পিনিং দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে। এরপর মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের আট দশমিক ৮৭ শতাংশ, এমবি ফার্মার আট দশমিক ৭৪ শতাংশ, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের সাত দশমিক শূন্য আট শতাংশ, নর্দার্ণ জুটের ছয় দশমিক ৯৮ শতাংশ, লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের ছয় দশমিক ৮০ শতাংশ, ইস্টার্ন কেব্লসের ছয় দশমিক ২১ শতাংশ, দেশ গার্মেন্টসের ছয় দশমিক ১২ শতাংশ, সমতা লেদারের পাঁচ দশমিক ৮৬ শতাংশ, জেমিনি সি ফুডের দর পাঁচ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেড়েছে।
আট দশমিক ৩৩ শতাংশ কমে দরপতনের শীর্ষে উঠে আসে বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি। আরএন স্পিনিংয়ের দর আট দশমিক ১০ শতাংশ কমেছে। ইউনাইটেড এয়ারের পাঁচ দশমিক ৮৮ শতাংশ, জাহিন টেক্সের পাঁচ দশমিক ২৬ শতাংশ, তুংহাই নিটিংয়ের চার দশমিক ৫৪ শতাংশ, এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের চার দশমিক শূন্য আট শতাংশ, প্রাইম ব্যাংক ফার্স্ট আইসিবি এএমসিএল মিউচুয়াল ফান্ডের তিন দশমিক ৭৭ শতাংশ, লাফার্জহোলসিমের তিন দশমিক ৭৬ শতাংশ, নূরানী ডায়িংয়ের তিন দশমিক ৭৫ শতাংশ ও বেঙ্গল উইন্ডসরের দর তিন দশমিক ৭০ শতাংশ কমেছে।
অন্যদিকে সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক ৩৭ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৪৫ শতাংশ কমে আট হাজার ২৩১ দশমিক ৭৮ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৬৩ দশমিক শূন্য ছয় পয়েন্ট বা দশমিক ৪৬ শতাংশ কমে ১৩ হাজার ৫৭৯ দশমিক ৫৪ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল সর্বমোট ২৩৫ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৬৫টির, কমেছে ১৩৫টির, অপরিবর্তিত ছিল ৩৫টির।
সিএসইতে এদিন ১৪ কোটি ১৮ লাখ ৭৩ হাজার ১০১ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৮ কোটি ২০ লাখ ৩৬ হাজার ৫৫৩ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে চার কোটি এক লাখ টাকা।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ। কোম্পানিটির এক কোটি ৩২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এর পরের অবস্থানগুলোয় থাকা এসএস স্টিলের ৮৭ লাখ, এডিএন টেলিকমের ৮৫ লাখ, কনফিডেন্স সিমেন্টের ৭৫ লাখ, কপারটেকের ৬২ লাখ, বেক্সিমকোর ৫১ লাখ, বিবিএস কেব্লসের ৪২ লাখ, লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের ৩৮ লাখ, স্কয়ার ফার্মার ৩৬ লাখ ও অ্যাডভেন্ট ফার্মার ৩২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
