শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সাত হাজার ৫০০ কোটি ডলারের রপ্তানি পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক অর্ধেকে নামিয়ে আনা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে চীন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় এক হাজার ৭১৭ ধরনের পণ্য রয়েছে। গত মাসে প্রাথমিক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের পর বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা বাণিজ্যযুদ্ধ ধীরে ধীরে প্রশমিত হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে চীন এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ঘোষণা করল। খবর: সিএনএন, রয়টার্স, বিবিসি।
এশিয়ার সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ চীন ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস নিয়ে কঠিন সময় পার করছে। ভাইরাসটিতে ইতোমধ্যে ৫৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার সিংহভাগই চীনের। বিশ্বের ২৫ দেশের প্রায় ২৮ হাজার মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যেই বাণিজ্যযুদ্ধ ইস্যুতে এ ধরনের ঘোষণা দিল চীন।
গত বছরের সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের বেশকিছু রপ্তানি পণ্যে শুল্কারোপের ঘোষণা দেয় চীন। নতুন এ ঘোষণা অনুযায়ী, সেসব পণ্যের শুল্ক অর্ধেকে নেমে আসবে। এর মধ্যে কিছু ১০ শতাংশ থেকে পাঁচ শতাংশ এবং বাকিগুলো পাঁচ শতাংশ থেকে আড়াই শতাংশ হবে। চীনের ট্যারিফ কমিশন এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। চুক্তির অংশ হিসেবে চীনের রপ্তানি পণ্য থেকেও শুল্ক প্রত্যাহার করবে যুক্তরাষ্ট্র।
গত মাসে প্রথম পর্যায়ের বাণিজ্য চুক্তির পর যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য আমদানি বাড়িয়ে ২০ হাজার কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করে। ওই চুক্তির পর প্রথমবারের মতো এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা জানালো চীন। কমিশন জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য রপ্তানি পণ্যেও একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে, যখন শুল্ক ছাড়ের বিষয়ে আরও কাজ করা হবে।
আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে চীনের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন শুরু হবে। শুল্ক কমানোর এ ঘোষণার পর থেকেই এশিয়ার পুঁজিবাজারে সূচকের চাঙ্গাভাব লক্ষ্য করা গেছে। গতকাল হংকংয়ের হ্যাং সেং এবং জাপানের নিক্কেই-২২৫ দুই দশমিক পাঁচ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। অন্যান্য পুঁজিবাজারেও এমন অবস্থা দেখা গেছে। অবশ্য করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট উদ্বেগ প্রশমন করতেও চীনের এ ধরনের সিদ্ধান্তের ভ‚মিকা রয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
পৃথক একটি ঘোষণায় দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চীনের রপ্তানি পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক প্রত্যাহারে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণার প্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওই সিদ্ধান্তও আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এ ধরনের আরও পদক্ষেপ দু’দেশের মধ্যকার সম্পর্কের উন্নয়ন এবং বাণিজ্য পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।